বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির দুর্বলতা
ভারত-কানাডার সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও সংস্কার ভাবনা

দেলোয়ার জাহিদ
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সম্ভাবনা থাকলেও, বর্তমানে এটি একাধিক দুর্বলতার সম্মুখীন হচ্ছে। এসব দুর্বলতা ছাত্র রাজনীতির কার্যকারিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা সংকুচিত করছে। ভারত ও কানাডার ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশ এমন কিছু সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারে যা স্বায়ত্তশাসন, অন্তর্ভুক্তি এবং একাডেমিক বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতে সহায়তা করবে। সংলাপের উপর জোর দেওয়া এবং রাজনৈতিক কারসাজি কমানো বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার পথে পদক্ষেপ নিতে পারে।
১. রাজনৈতিক কারসাজি: বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠনগুলো প্রায়শই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকে। এই সারিবদ্ধতা তাদের স্বায়ত্তশাসনকে ক্ষুণ্ন করে এবং প্রকৃত ছাত্রদের স্বার্থের প্রতি তাদের সমর্থনকে দুর্বল করে। ফলে ছাত্র নেতাদেরকে দলের প্রভাবশালী নেতাদের প্রক্সি হিসেবে দেখা হয়, যা তাদের কার্যকারিতা হ্রাস করে।
২. সহিংসতা ও ভীতিপ্রদর্শন: রাজনৈতিক আবহাওয়ার কারণে ছাত্র রাজনীতিতে সহিংসতা প্রকট। প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে শারীরিক সংঘর্ষের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত হয়। এভাবে, একটি ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয় যা গঠনমূলক সংলাপকে বাধাগ্রস্ত করে।
৩. অন্তর্ভুক্তির অভাব: বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি সাধারণত নারী, সংখ্যালঘু এবং নিম্ন অর্থনৈতিক পটভূমির ছাত্রদের বাদ দেয়। কিছু প্রতিষ্ঠিত গোষ্ঠীর আধিপত্য বৈচিত্র্যকে সীমিত করে এবং ছাত্রদের স্বার্থের সংকীর্ণ প্রতিনিধিত্বের দিকে ঠেলে দেয়।
৪. দুর্নীতি ও পৃষ্ঠপোষকতা: ছাত্র সংগঠনগুলোতে দুর্নীতি ব্যাপক, যেখানে পদগুলি প্রায়শই যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়। এতে ছাত্র নেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হয় এবং ছাত্র শাসনের প্রতি আস্থা নষ্ট হয়।
৫. একাডেমিক বিষয়গুলোর প্রতি সীমিত ফোকাস: অনেক ছাত্র সংগঠন রাজনৈতিক এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দেয়, যা শিক্ষার মান, মানসিক স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
ভারত ও কানাডার সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ
ভারত: ভারতেও ছাত্র রাজনীতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জড়িত, কিন্তু এখানে আদর্শগত বৈচিত্র্য বেশি। বিভিন্ন দল ও আন্দোলন ক্যাম্পাসে প্রতিনিধিত্ব করে, ফলে ছাত্র নির্বাচনে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের সংস্কৃতি বিকশিত হয়। তবে, ভারতীয় ছাত্র রাজনীতিও সহিংসতা ও রাজনৈতিক ক্যাম্পাসের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তবুও, ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিমের মতো উদ্যোগগুলি ছাত্রদের সামাজিক সমস্যায় সম্পৃক্ত হতে সহায়তা করে।
কানাডা: কানাডায় ছাত্র রাজনীতি সাধারণত বেশি সংগঠিত এবং সহিংসতা কম। এখানে স্বাধীন ছাত্র সরকার রয়েছে, যা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং মূলত অ্যাডভোকেসি ও কল্যাণের উপর ফোকাস করে। এই স্বাধীনতা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করে, যেখানে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর শোনা যায়। কানাডিয়ান ছাত্র সংগঠনগুলো মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষাগত সংস্কার ও অন্তর্ভুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়।
সংস্কারের প্রস্তাব
১. রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বিচ্ছিন্নতা: ছাত্র সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা থেকে নিজেদের আলাদা করতে হবে। এর মাধ্যমে স্বাধীন ছাত্র নেতৃত্ব ও প্রকৃত ছাত্রদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া সম্ভব হবে।
২. অন্তর্ভুক্তির প্রচার: সংস্কারগুলিকে অন্তর্ভুক্তিকরণের উপর জোর দিতে হবে, যাতে সব ছাত্রের কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে প্রান্তিক পটভূমির, প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যায়। বিভিন্ন ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা বোর্ড গঠন করা যেতে পারে।
৩. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ: ছাত্র শাসনের জন্য একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা উচিত যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উপর জোর দেবে। নিয়মিত অডিট এবং স্বচ্ছ নির্বাচন ছাত্র সংগঠনের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করবে।
৪. একাডেমিক বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি: ছাত্র সংগঠনগুলোকে একাডেমিক মান, মানসিক স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানের জন্য নিবেদিত কমিটি গঠন করতে হবে। অনুষদ ও প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা এই ফোকাস বাড়াতে সহায়তা করবে।
৫. সংলাপ ও দ্বন্দ্ব সমাধানের সুবিধা: বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংলাপের জন্য প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করা হলে সহিংসতা হ্রাস পাবে এবং বোঝাপড়ার সংস্কৃতি বিকশিত হবে। মধ্যস্থতার উদ্যোগ বন্ধুত্বপূর্ণভাবে দ্বন্দ্ব সমাধানে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি শক্তিশালী ও কার্যকর হওয়ার জন্য এখন সময় এসেছে। ভারত ও কানাডার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশ একটি নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, যেখানে ছাত্ররা তাদের স্বার্থে সত্যিকার অর্থে কাজ করতে সক্ষম হবে। সংস্কারগুলি কার্যকর হলে ছাত্র রাজনীতি একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ নর্থ মার্কিন জূর্নালিস্টস নেটওয়ার্ক।
পাঠকের মতামত:
- ‘উচ্চকক্ষ নিয়ে দুদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত’
- ফরিদপুরে মধ্যরাতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বাসে আগুন
- খুলনায় ‘মদপানে’ পাঁচজনের মৃত্যু
- বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর ওপর বোমা হামলা চালায়
- দিনাজপুরে ১০ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা শুরু
- গোপালগঞ্জে ৪ মামলায় আসামী ৩০০৮, গ্রেফতার ২৭৭
- গোপালগঞ্জে রবিবার ১৪৪ ধারা জারি
- ‘বাংলাদেশে ওয়াশিংটনের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হবে’
- ব্রহ্মপুত্রে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করল চীন
- দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জামায়াত আমিরের
- তারেক রহমানকে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ফরিদপুরে ড্যাবের সমাবেশ
- বাগেরহাটের ৯ জুলাই শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ
- ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৯৪ জন
- বাগেরহাটে হেরোইনসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
- ‘আমরা সেই গডফাদারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছি’
- পাংখারচর-চরসুচাইল এলাকায় ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন, হুমকিতে বসতবাড়ি
- তিন থানায় পৃথক মামলা, মামলা বাণিজ্যে নিহতের বাবা কোটিপতি
- জনস্বাস্থ্য রক্ষায় শব্দদূষণ বন্ধ করার কোনো বিকল্প নেই
- কসবমাজাইলে খান পরিবারের বর্বরতা, বাদ পড়েনি কৃষক
- নড়াইলে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ আহত ২০
- বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি উন্মোচন
- ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ নেতার পুত্র রনি গ্রেফতার
- কাপ্তাইয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কৃতি সংবর্ধনা
- নড়াইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল স্কুল শিক্ষার্থীর
- তরিঘরি করে আত্মসাতের অর্থ ফেরত দিলেন সেই শিক্ষিকা
- বান্দরবানে একই পরিবারের ৫ জনকে কুপিয়ে হত্যা
- আজ গৌরীপুর মুক্ত দিবস
- চুয়াডাঙ্গায় দুগ্ধপণ্য উৎপাদনে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
- নীলফামারীতে মানসম্মত শিক্ষা নিয়ে সংলাপ
- রেলওয়ের চাকরিতে যোগ দিতে এসে বিপাকে যুবক
- নগরকান্দায় ফাইলেরিয়া রোগে ভুগছেন বোরহান, মানবিক সহায়তার দাবি
- ‘আগামী মাস থেকে ডলার সংকট দূর হবে’
- গ্রাহকদের জন্য টেক্সট-ওনলি ফেসবুক ও ডিসকভার চালু করেছে গ্রামীণফোন
- বরাদ্দের আগেই প্রতীক দিয়ে ফেসবুকে প্রচারণা, দুই প্রার্থীকে শোকজ
- ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে আতর সুরমা বিক্রি
- লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামে ঈদ উদযাপন
- ভুটানি ভাষায় প্রকাশিত হলো বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’
- ক্যান্সার আক্রান্ত নাঈম বাঁচতে চায়
- 'ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট প্রতিস্থাপন ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে'
- ‘বিরোধী শক্তিকে সরকার আইএস বানানোর চেষ্টা করছে’
- ছাগল ও পশু পালন, ছোট ব্যবসা এবং কৃষিতে অগ্রগতির আহ্বান স্টেপ টু হিউম্যানিটির
- বসন্ত এলে
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ
- নার্সেস এসোসিয়েশন সিওমেক’র নির্বাচন সম্পন্ন
- অনন্ত প্রেম