বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা একটি অশনিসংকেত
চৌধুরী আবদুল হান্নান
আমাদের পূর্ব পুরুষরা ব্রিটিশদের শাসন-শোষণের নির্মমতা প্রত্যক্ষ করেছে, আমরা পাকিস্তানের দুঃশাসন দেখেছি। পাকিস্তানিরা আমাদের বাঙালি বলে উপহাস করতো, অনেকে কৌতুক করে বলতো - ওরা বাঙালি হয়েছে তাতে কী হয়েছে ? ওরা তো মুসলমান, আবার নামাজও পড়ে।
শক্তিশালী দেশ দুর্বল দেশকে ক্ষমতার জোরে অধীনে নিয়ে বছরের পর বছর চরম নিপীড়ন আর শোষণের নির্মম কাহিনী রয়েছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়।
ব্রিটিশরা এদেশে এসেছিল বাণিজ্য করার জন্য, দেশ দখলের জন্য নয়। এক পর্যায়ে তারা অবাক হয়ে প্রত্যক্ষ করলো, ভারতবর্ষের মানুষের অদ্ভুত চরিত্র, কলহপ্রিয় এবং একজন আরেক জনের পিছে লেগেই থাকে। সুচতুর ব্রিটিশ এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রায় দুই শতাব্দি ব্যাপী ভারতবর্ষ শাসন-শোসনের সুযোগ নিতে সক্ষম হয়েছিল।
আবার আরেক শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্তানের শৃঙ্খলে আরও ২৩ বছর। অবশেষে আমরা স্বাধীন দেশটি পেলাম ১৯৭১ সালে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে। তিনি পরাধীনতার নাগপাশ থেকে আমাদের মুক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, তাঁর জন্ম না হলে এ দেশটি স্বাধীন হতো না।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা না করে তারা স্বেচ্চাচারিতা করেছে। ফলে যা হবার তাই হয়েছে, যেমন কর্ম করেছে তেমনই ফল পেয়েছে।
দুর্নীতি আর বিদেশে অর্থ পাচার অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছে; ব্যাংক খাতসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
এ পতন থেকে উদ্ধারের দরজা খুলে দিলো তরুণ শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশার প্রতীক বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, তাদের প্রধান কাজ দেশে নির্বাচনের একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা এবং দ্রুততম সময়ে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর।
এ সরকারের হাতে সময় কম, সব কাজে একসাথে হাত দিতে গেলে কোনো কাজই সম্পন্ন হবে না। কী দরকার ছিল বলার অন্তর্বর্তী সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা মানে না?
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ করণীয় কাজ বাদ দিয়ে নতুন ও বাড়তি বিতর্ক সৃষ্টি করা হলে মূল কাজ ব্যাহত হবে।আগের প্রজন্মের বীরদের মহৎকীর্তিকে শ্রদ্ধা জানিয়েই বর্তমান প্রজন্মকে অগ্রসর হতে হবে। জাতির মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে অস্বীকার করা মানুষের মনে বড় আঘাত।
এ সরকার সফল না হলে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে। তাই মাথায় বোঝা তুলতে হবে নিজের ঘাড়ের শক্তিমত্তা হিসাব করে।
অতীত মুছে ফেলা কেন?
চাইলেই অতীতের সাফল্য ও গৌরবগাথা মুছে ফেলা যায় না, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা অর্জন সবই এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের অহংকার।
ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ২৫ বছর দেশ শাসন করেছিলেন বন্দুকের ডগায়, তার মনে ইচ্ছা জন্মেছিল অতীত মুছে ফেলার। প্রাচীন ব্যবিলনের চারদিকে সম্রাট দ্বিতীয় নেবুশাদনেজারের নামাঙ্কিত ইট ছিল। তা খুলে ফেলে নতুন ইট বসান তিনি, নতুন ইটের গায়ে লেখা হয় “বিজয়ী সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে নির্মিত, তিনি ইরাকের রক্ষাকর্তা এবং মহান সভ্যতার নির্মাতা।”
এভাবে পাঁচশত বছরের সভ্যতা গুড়িয়ে দিয়ে নিজের নামে জাহির করলেন। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে এক নায়ক সাদ্দামের মৃত্যুদণ্ড ফাঁসিতে কার্যকর করা হয় এবং এক পর্যায়ে জনগণ ব্যবিলনের প্রাচীন সভ্যতার স্মারক-চিহ্ন পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনে।
প্রায় ২২৫০ বছর পূর্বে চীন দেশে শি ওয়াং শি নামে এক রাজা ছিলেন, নিজের সম্পর্কে তার অতিউচ্চ ধারণা ছিল। তিনি চাইতেন তার লোকেরা ইতিহাস ভুলে যাবে, ইতিহাস শুরু হবে তার সময় থেকে, তিনিই প্রথম সম্রাট। যে সকল বই-পুস্তক ইতিহাস ও মর্যাদাবান লোকদের নিয়ে লেখা হয়েছে তা সব আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হলো। শত শত পন্ডিত ব্যক্তি যারা তাদের প্রিয় বইগুলো লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন তাদেরও হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি সর্বকালের নায়ক হতে চেয়েছিলেন কিন্ত ইতিহাস তাকে খলনায়কে পরিণত করেছে। বলা হয়, ক্ষমতা একটা মোহ, মাদকতা। আমাদের অতীত বলে, মানুষ ক্ষমতা পেলেই তার অপব্যবহারটাই বেশি করে। ক্ষমতার মাত্রা যত বেশি দুর্নীতি পরায়নতা তত বেশি।
অন্তর্বতী সরকারের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার মানসিকতা থাকতে পারে — এমন আতঙ্ক রয়েছে অনেক রাজনীতিকের মধ্যে।
প্রকৃতপক্ষে দেশ চালাবেন তো রাজনীতিবিদরাই, কিন্ত তাদের অতীত কর্মফলের জন্য আজ তারা নির্বাসিত। তবে দক্ষ, সৎ, ত্যাগী রাজনীতিক দেশে নেই, তা নয়; তারা কোনঠাসা হয়ে নিভৃতে চলে গেছেন।
নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করা হলে দেশ বেঁচে যাবে এবং একই সাথে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় সাফল্য হিসেবে ইতিহাস হয়ে থাকবে।
ক্ষমতা হস্তান্তরে অনাকাঙ্খিত দীর্ঘ বিলম্ব হলে এ সরকার দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাবে অন্তত দুটি প্রধান কারণে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি আর দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি।
এ সরকার বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানে না — এমন মন্তব্য কেবল বিতর্কই সৃষ্টি করেনি, বহু মানুষে একান্ত লালিত বিশ্বাসের মূলে আঘাত করেছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অসম্মান কোনো সচেতন বাঙালি মেনে নেবে না এবং তাঁর কর্মকে যারা ছোট করার চেষ্ট করবে, তারাই এক সময় জনগণের কাছে ছোট হবে।কারণ প্রতিটি ক্রিয়ার একটি বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম, সোনালী ব্যাংক।
পাঠকের মতামত:
- মেহেরপুরে ধ্রুবতারা সংগঠনের উদ্যোগ মানবাধিকার দিবস পালন
- ‘গণহত্যার দায়ে আদালতই শেখ হাসিনাকে দেশে আনবে’
- হত্যা মামলার সাক্ষীকে মারপিটের মামলায় গ্রেপ্তারসহ আদালতে রিমাণ্ড আবেদন
- ‘৫৩ বছরেও দেশে কোনো পরিবর্তন আসেনি’
- দিনাজপুরে দ্বিগুণ দামেও মিলছে না আলু বীজ, ভুট্টা-গম আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক
- ১৪ দেশের নাগরিকদের ভিসা দিতে বিশেষ সতর্কতা
- বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক
- কাপ্তাইয়ে উন্মুক্ত নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
- মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন ধীতপুর
- অবরুদ্ধ ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর, ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
- ‘আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে আমরা কি আমলকী চুষব’
- ‘দিল্লির দালালরা সীমান্তে চোখ রাঙাচ্ছে’
- শ্রীমঙ্গল রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থার বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প
- গোপালগঞ্জে খাল থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে কাপ্তাইয়ে ছাত্র দলের মানববন্ধন
- ‘৫৩ বছরেও বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি’
- কাপাসিয়ায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগ
- কুষ্টিয়ায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত
- ফরিদপুরে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত
- দুই নৌযানসহ ৭৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড
- ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির কনসার্ট
- যমুনা সার কারখানা দ্রুত চালুর দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- ঘাটাইলে নানা কর্মসূচির মধ্যে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- সালথায় বরাদ্দ পাওয়া স্কুলগুলোর মেরামত ও সংস্কার না করেই বিল উত্তোলন
- টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত
- আজ বিকালে ফিলিস্তিন দূতাবাসে যাচ্ছেন খালেদা
- বেলকুচিতে থানায় ঢুকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর হামলা, ইন্জিনিয়ার আমিনুল শোকজ
- দুটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও উদ্ধার হওয়া ১১টি স্মার্ট ফোন মালিকদের প্রদান
- শীতকালে খামার ঘিরে প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে
- পণ্ডশ্রম
- প্রতিবন্ধী শিশু মহিলা বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুরক্ষা প্রয়োজন
- শিশুদের জন্য সিসিমপুরের নতুন আয়োজন
- ফরিদপুরে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
- বাড্ডায় থানা জামায়াতের আমিরসহ আটক ১৮
- সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই হাসনাত করিম গ্রেফতার
- ‘কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় প্রচুর বোমা রয়েছে’
- ‘স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তির সঙ্গে আপস বা চুক্তি হতে পারে না’
- মঙ্গোলিয়ায় শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
- ‘গুলশান হামলা মেট্টোরেলে প্রভাব পড়বে না’
- ঢাকা আসছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট
- রাজধানীর বনানীতে ৮তলা ভবনে আগুন
- গুলিস্তান-সোনারগাঁও রুটে চালু হলো নতুন এসি বাস
- রাজধানীতে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনকালে চীনা নাগরিক আটক
- ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল প্রতিবেশীর মত আচরণে ব্যর্থ ভারত’
- শনিবার স্পিকারের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা