ডুবন্ত ব্যাংক খাত কীভাবে টেনে তোলা যায়!
চৌধুরী আবদুল হান্নান
“যেখানে অনিয়ম দিয়েই শুরু এবং অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়, সেখানে সবকিছু সুশৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে পুনরায় কিছু বিধি-বহির্ভূত কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে। সর্বনাশ অনিবার্য হলে বুদ্ধিমানের মতো অর্ধেক ছেড়ে বাকি অর্ধেক রক্ষা করা।”
ব্যাংকের চলমান দুরবস্থা নিয়ে ইতিপূর্বে যত লেখালেখি পত্রিকায় চোখে পড়েছে, তার প্রায় সব ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে — কিছু দুষ্টচক্রের কবলে পড়ে ব্যাংক খাত এখন খাতের কিনারে। কেউ সাহস করে বলেনি যে ব্যাংক ব্যবস্থা গর্তে পড়ে গেছে। ভয় তো ছিলই, সরকারের ভয়ের চেয়ে অলিগার্কদের (গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধারে ক্ষমতাবান) রোষানলে পড়ার ভয়।
কিন্ত এখন তো আর সত্য বলার ভয় নেই। আমানতকারীদের বিপদ এখন দৃশ্যমান, শত শত মানুষ নিজের জমানো টাকা তুলতে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসছে। অনেকেই তাদের জরুরি প্রয়োজন মেটাতেও ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছে না, এমন বিরূপ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাবে।
নিরাপত্তার জন্য জীবনের সকল সঞ্চয় ব্যাংকে রাখা হয়েছিল, প্রয়োজনে তা তুলতে না পেরে এ বিক্ষুব্ধ মানুষগুলো যখন পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘেরাও করবে, তখন কী হবে ?
রাস্তা দখল করার সংস্কৃতি নতুন কিছু নয়, আর রাস্তায় নামলে তো দাবি পূরণ হয়।
আগের সরকারের আমলে ব্যাংক টাকা দিতে পারেনি, এমন তো হয়নি। তাই সব ব্যর্থতা এ অন্তর্বর্তী সরকারের — হতাশ ভুক্তভোগীদের এমন ভাবনা থাকতেই পারে।
আগের সরকার ব্যাংক খালি করে রেখে গেছে, এ কথা যতই বলা হোক, হয়রানির শিকার গ্রাহকগণ তা শুনতে চাইবে না, অনেকে তা বিশ্বাসও করবে না।
নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক থেকে টাকা বের করে নেওয়ার নজিরবিহীন ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তারা কেটে পড়েছে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যাংক খাত মেরামত করার কাজটি মোটেই সহজ নয়, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গৃহীত কিছু পদক্ষেপ বাজার ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
দেশের কয়েকজন শিল্প মালিকের ব্যাংক হিসাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় তাদের কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে।তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করায় শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না।
তাদের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ অবাধ সুযোগ পেয়ে তারা ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ বের করে নিয়েছে, ফেরত দেওয়ার নাম নেই, ফলে আমানতকারীদের জমা টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে সংকট তৈরি হয়েছে।
দেশের উৎপাদনশীল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হলে বা বন্ধ হয়ে গেলে যে আর্থ সামাজিক অভিঘাত সৃষ্টি হবে তা মোকাবিলা করা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মহীন হবে, তাদের পরিবার সীমাহীন দুর্ভোগে নিপতিত হবে, পণ্য সামগ্রীর জোগানের ঘাটতি তৈরি হবে এবং দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি লাগামহীন হবে।
অনেকেই বলতে শুরু করবে, আগের সরকারই তো ভালো ছিল যা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
তা হলে করণীয় কী ?
যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি, নয়ছয় করেছে কিন্ত তাদের ব্যবসা বা শিল্প কারখানা চালু রাখার চেষ্টা করছে, ব্যাংকিংসহ সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তাদের জন্য সাময়িক সময়ের জন্য হলেও চালু রাখতে হবে।
যেখান থেকে পেছন ফেরা য য় না, বিকল্প একটাই; সর্বনাশ অনিবার্য হলে, বুদ্ধিমানের মতো অর্ধেক ছেড়ে বাকি অর্ধেক রক্ষা করা।
দ্রুত গতিতে চলা একটি গাড়ি হঠাৎ করে থামানো যায় না, প্রথমে গতি কমিয়ে তারপর ব্রেক করতে হয়। অর্থ লুট আর দুর্নীতি যে গতিতে চলছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে রোধ করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
যেখানে অনিয়ম দিয়েই শুরু এবং অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়, সেখানে সব কিছু সুশৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে পুনরায় কিছু বিধি-বহির্ভূত কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে। কানে পানি ঢুকলে তা বের করতে আবার পানি দিতে হয়।
তবে বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাভাবিক অবস্হায় কোনো বিধান-বহির্ভূত কাজ করবেন, তা কেউ মনে করে না। কিন্ত বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাহসিকতার সাথে কিছু ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর দেখি না।
আমাদের বিশ্বাস, পতিত ব্যাংক খাতকে সঠিক পথে টেনে তুলতে এবং মানুষের আস্থা ফেরাতে তাঁরা যে পদক্ষেপ নেবেন, তা ভালোই হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম, সোনালী ব্যাংক।
পাঠকের মতামত:
- মেহেরপুরে ধ্রুবতারা সংগঠনের উদ্যোগ মানবাধিকার দিবস পালন
- ‘গণহত্যার দায়ে আদালতই শেখ হাসিনাকে দেশে আনবে’
- হত্যা মামলার সাক্ষীকে মারপিটের মামলায় গ্রেপ্তারসহ আদালতে রিমাণ্ড আবেদন
- ‘৫৩ বছরেও দেশে কোনো পরিবর্তন আসেনি’
- দিনাজপুরে দ্বিগুণ দামেও মিলছে না আলু বীজ, ভুট্টা-গম আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক
- ১৪ দেশের নাগরিকদের ভিসা দিতে বিশেষ সতর্কতা
- বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক
- কাপ্তাইয়ে উন্মুক্ত নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
- মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন ধীতপুর
- অবরুদ্ধ ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর, ভোমরায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
- ‘আপনারা চট্টগ্রামের দিকে তাকালে আমরা কি আমলকী চুষব’
- ‘দিল্লির দালালরা সীমান্তে চোখ রাঙাচ্ছে’
- শ্রীমঙ্গল রক্তদান সমাজকল্যাণ সংস্থার বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প
- গোপালগঞ্জে খাল থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে কাপ্তাইয়ে ছাত্র দলের মানববন্ধন
- ‘৫৩ বছরেও বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি’
- কাপাসিয়ায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগ
- কুষ্টিয়ায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত
- ফরিদপুরে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত
- দুই নৌযানসহ ৭৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড
- ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির কনসার্ট
- যমুনা সার কারখানা দ্রুত চালুর দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- ঘাটাইলে নানা কর্মসূচির মধ্যে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- সালথায় বরাদ্দ পাওয়া স্কুলগুলোর মেরামত ও সংস্কার না করেই বিল উত্তোলন
- টাঙ্গাইলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত
- আজ বিকালে ফিলিস্তিন দূতাবাসে যাচ্ছেন খালেদা
- বেলকুচিতে থানায় ঢুকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর হামলা, ইন্জিনিয়ার আমিনুল শোকজ
- দুটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও উদ্ধার হওয়া ১১টি স্মার্ট ফোন মালিকদের প্রদান
- শীতকালে খামার ঘিরে প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে
- পণ্ডশ্রম
- প্রতিবন্ধী শিশু মহিলা বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুরক্ষা প্রয়োজন
- শিশুদের জন্য সিসিমপুরের নতুন আয়োজন
- ফরিদপুরে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
- বাড্ডায় থানা জামায়াতের আমিরসহ আটক ১৮
- সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই হাসনাত করিম গ্রেফতার
- ‘কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় প্রচুর বোমা রয়েছে’
- ‘স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তির সঙ্গে আপস বা চুক্তি হতে পারে না’
- মঙ্গোলিয়ায় শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
- ‘গুলশান হামলা মেট্টোরেলে প্রভাব পড়বে না’
- ঢাকা আসছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট
- রাজধানীর বনানীতে ৮তলা ভবনে আগুন
- গুলিস্তান-সোনারগাঁও রুটে চালু হলো নতুন এসি বাস
- রাজধানীতে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনকালে চীনা নাগরিক আটক
- ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল প্রতিবেশীর মত আচরণে ব্যর্থ ভারত’
- শনিবার স্পিকারের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা