খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

চৌধুরী আবদুল হান্নান
ব্যাংকিং ব্যবস্থার দুর্গতি আমাদের নিত্যসঙ্গী, খেলাপি ঋণের আধিক্য এ খাতকে পঙ্গু করে দিয়েছে। শত চেষ্টায়ও খেলাপি ঋণ আদায় হচ্ছে না। অবশেষে ঋণ গ্রহীতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা তার বাসস্থানের সামনে অবস্থান কর্মসূচি বা মানববন্ধন করতে দেখা গেছে কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। ব্যাংকের ঋণ আদায়ের সকল স্বাভাবিক পথ অকার্যকর হয়ে পড়ায় এমন ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ লক্ষণীয়।
ঋণগ্রহীতার ছবি সম্বলিত ব্যানার হাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের এমন কর্মসূচি ঋণগ্রহীতার ওপর সামাজিক চাপ সৃষ্টি করবে, সন্দেহ নেই। আশপাশের মানুষ জানতে পারবে লোকটি বিলাসী জীবন যাপন করে, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে মসজিদ-মাদরাসায় দান করে অথচ ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করে না।
ঋণ করে ঘি খাবে, সমাজের উপর তলায় দাপটের সাথে চলাফেরা করবেন, পরের ধনে পোদ্দারি চালাবেন, তাদের মুখোশ খুলে দিতে হবে। খেলাপিরা যে পয়সায় ঝলমলে চাকচিক্যময় জীবন যাপন করেন, সে অর্থ তাদের কষ্টার্জিত নয়, যোগসাজশে কারসাজির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বের করে নেওয়া। তারা অর্থনীতির হৃদপিন্ড ব্যাংক খাতের মুখোশধারী দুষ্টচক্র।
মানুষের ক্ষোভ প্রশমন করতে, ব্যাংক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফেরাতে সরকার বাধ্য হয়ে টাকা ছাপিয়ে আমানতকারীদের অর্থ পরিশোধ করার মতো অনাকাঙ্খিত কর্মকান্ড করতে হয়েছে।
সম্প্রতি খেলাপি ঋণ গ্রহীতার নাম লেখা ব্যানার নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, চট্টগ্রাম সার্কেলের কর্মকর্তাদের মানববন্ধনে অংশ নিতে দেখা গেছে।
নব্বইয়ের দশকে সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমান এক অনুষ্ঠানে ঋণখেলাপিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন — আল্লাহর দোহাই, আপনারা ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করুণ।
তার এ আহবানে অসহায়ত্তের প্রকাশ রয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায়ের সকল প্রচেষ্টা, এমনকি আইনি প্রক্রিয়া যখন অকার্যকর হয়ে পড়ে তখন এমনি হয়। রোগ যখন গুরুতর হয়, নিরাময়যোগ্য থাকে না, চিকিৎসক বলেন — রোগীকে বাসায় নিয়ে যান, যা খাবার চায়, খাওয়ান।
প্রায় ৩০ বছর পূর্বে একজন জাঁদরেল অর্থমন্ত্রীর এমন অসাহায়ত্ত বলে দেয় ঋণখেলাপিরা বরাবরই বেপরোয়া এবং অনেক সময় মনে হবে তারা সরকারের চেয়েও ক্ষমতাশালী। আর ব্যাংক ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা কী ?
বিগত সরকার পতনের আগেই ব্যাংক খাতের পতন হয়েছে। আমানতকারীদের বিপদ এখন দৃশ্যমান, শত শত মানুষ নিজের জমানো টাকা তুলতে গিয়ে খালি হাতে ফিরে আসছে, ব্যাংক টাকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
ব্যাংকের অনেক শাখাতে এমন ঘটনা নিয়ে গ্রাহক-ব্যাংকার বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়েছে, বঞ্চিত গ্রাহক দ্বারা ব্যাংক ঘেরাও করার পর্যায়ে গেছে। ব্যাংক খাতে যে ধস হয়েছে, এমন ইতিপূর্বে কখনও দেখা যায়নি।
বিগত সরকারের আমলে রিলিফের মালের মতো ব্যাংকের টাকা নিজের লোকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক থেকে টাকা বের করে নেওয়ার নজিরবিহীন ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে।
ব্যাংক থেকে অবলীলায় বের করে নেওয়া টাকা, নানা উপায়ে আত্মসাতকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা মুদ্রা বাজারে প্রবেশ করে দ্রব্য মূল্যে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। পরিশ্রম ছাড়া প্রাপ্ত অবৈধ এ অতিরিক্ত অর্থে সৃষ্ট সামাজিক অস্থিরতার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে প্রতিটি নাগরিককে।
প্রচলিত এবং জ্ঞাত প্রায় সকল অস্ত্র ব্যবহারের পরও ব্যাংকের ঋণ যখন আদায় করা যাচ্ছে না, তখন চিটাগং ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে অবশেষে খেলাপি ঋণ গ্রহীতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাস ভবনের সামনে মানববন্ধন করতে দেখা গেছে। অনেকটা নিরুপায় হয়েই এ ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা। এমন অভিনব কর্মসূচি দেখতে আশপাশের কৌতুহলি বাসিন্দারা সেখানে জড় হন এবং এ বিষয়ে জানতে চান। এক পর্যায়ে মাইকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিস্তারিত জানানো হয়।
খেলাপিদের পরিবারের ওপর সামাজিক চাপ সৃষ্টির একটি চমৎকার উপায় হতে পারে, এ উদ্যোগ। ঋণখেলাপিদের কাছে অর্থনীতি জিন্মি, সকল নাগরিক জিম্মি। সচেতন নাগরিকগণের অংশ গ্রহণে এমন কর্মসূচি ব্যাপক প্রচার পেলে ঋণ আদায়ে কিছুটা হলেও সফলতা আসবে, তাতে সন্দেহ নেই।
দেশের সংবাদপত্রগুলো এখানে বড় ভুমিকা রাখতে পারে, প্রতিটি কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানাতে হবে। এ নতুন উদ্যোগে গণসম্পৃক্ততা যত বাড়বে, ততই উদ্দেশ্য সফলতার দিকে যাবে ।
ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতকারী, ঋণখেলাপি, বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে প্রতিটি নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ঠেকাতে সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সকল ব্যর্থতার মুখে আশার আলো দেখাচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের এ মানববন্ধন কর্মসূচি, আশা নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রপ্ত ডিজিএম, সোনালী ব্যাংক।
পাঠকের মতামত:
- ‘সৌদি আরব চাইলে নিজেদের ভূখণ্ডেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়তে পারে’
- কঙ্গোতে কারাগারে শতাধিক নারীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা
- বাগেরহাটে এক কৃষকের ৯ গরু চুরি, নিঃস্ব খামারি
- নিয়োগ বাতিল হওয়া শিক্ষকদের বিক্ষোভে জলকামান-লাঠিচার্জ
- ‘আ.লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত শিগগিরই’
- আবারও নির্বাচনের সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
- আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা বন্ধের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
- পরিবারের জিম্মায় শাওন-সাবাকে ছেড়ে দিলো ডিবি
- আদমদীঘিতে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
- নড়াইলে এনপিপির উদ্যোগে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত
- সুবর্ণচরে ফজলুল হক ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ
- শ্যামনগরে বঙ্গবন্ধুর দু’টি ম্যুরাল ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে ছাত্ররা
- শ্যামনগরে ট্রাকের ধাক্কায় ইতালি প্রবাসীর মৃত্যু
- গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বোর্ড সভাপতি আল-আমিন ভূঁইয়া
- রাজনীতির পেশিশক্তি ও ৩২ নম্বরের বাড়ি
- আজ ঢাকায় ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনের ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’
- ছুটির দিনেও স্বস্তি নেই ঢাকার বাতাসে
- অবৈধ তামাক পণ্য জব্দে অভিযানে নামছে এনবিআর
- ‘বোটানিক্যাল গার্ডেনগুলো প্রকৃতি সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তোলা হবে’
- চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ
- ভারতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত
- গাজাবাসীকে সরিয়ে নিতে ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
- ‘আমাদের ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার মতো অবস্থা’
- জাকসু নির্বাচন ২১ মে’র মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে
- সিলেটে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
- মঙ্গলবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে বৃষ্টি, থাকতে পারে ৪ দিন
- ঈদগাঁওতে দিনব্যাপী শেখ রাসেল শিশু-কিশোর উৎসব
- হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে পালিত হলো সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস
- কাঁপা
- সচেতনতা ও সুস্থ জীবনযাত্রাই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র
- গোপালগঞ্জে ভেজাল সার ও কীটনাশক জব্দ, দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন সবচেয়ে সৎ রাজনীতিবিদ’
- জামালপুরে জাতীয় কবিতা পরিষদের কমিটি গঠন
- ডেলিভারি সম্পর্কে ধারনা পাল্টে দিল আদ্-দ্বীন হাসপাতাল
- 'গণহত্যার বিচার করতে ট্রাইব্যুনাল গঠন করুন'
- শরীয়তপুরে বজ্রপাতে নিহত ৩
- বাসের ধাক্কায় খাদে লেগুনা, প্রাণ গেলো ৪ জনের
- অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহ চৌধুরী
- ভোলার তজুমদ্দিনে আত্নরক্ষায় কারাতে প্রশিক্ষণ
- কুষ্টিয়ায় বেপরোয়া ড্রাম ট্রাক চাপায় কলেজ ছাত্র নিহত, আহত ৩
- বিএনপি নেতা ইকবালের গাড়িবহরে হামলা, হিরণের সম্পৃক্ততা নেই দাবির বিপক্ষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
- এইচএমপিভি: ৬ ধরনের রোগীকে বিশেষ সতর্কতার পরামর্শ
- ‘মানবিক বাংলাদেশ গড়াতে আপোষহীন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে’
- দেশে ১৬ শতাংশ শিশু টিকাবঞ্চিত
- ‘খাঁটি অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন মাইকেল মধূসূদন দত্ত’