E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

রাজনীতির পেশিশক্তি ও ৩২ নম্বরের বাড়ি

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৭ ১৭:১৯:৩৭
রাজনীতির পেশিশক্তি ও ৩২ নম্বরের বাড়ি

সঞ্জীব সাহা


বাংলাদেশের রাজনীতিতে যার যত বড় হ‍্যাডম, সে ততো বেশি প্রভাব বিস্তার করে জনমনে। যেহেতু এদেশে আইন-কানুন নেই, জবাবদিহিতা বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই, তাই হ‍্যাডমগিরিই মোক্ষম রাজনৈতিক অস্ত্র।

বৈবিছাআ’র পোলাপাইন রাজনীতিতে নেমেছে। দল গঠন করতে চলেছে। তারা তাদের হ‍্যাডম দেখিয়েছে ৩২ নম্বরের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে। সাথে দেশজুড়ে আওয়ামি লীগের নেতাদের বাড়ি-ঘরেও অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। আপনাদের কি মনে হয়, ওরা যদি এই হ‍্যাডম না দেখাত, শেখের বেটির হ‍্যাডমের কাছে পাত্তা পেত! এগুলো সবই রাজনীতির খেলা। এখানে বঙ্গবন্ধু ও তার বাড়ি বরাবরই একটি টুলস। হাসিনাবু সেটার ব‍্যাবহার ও অপব‍্যাবহার করছে বরাবরই, আজ সেই টুলস তার বিরুদ্ধেও ব‍্যাবহৃত হচ্ছে, তার কওমি সন্তানদের দ্বারা।

তবে বাচ্চালোগ জানে না যে শেখের বেটি তাদের চেয়ে অনেক বেশি ঝানু খেলোয়াড়। অন্তত মেটিকুলাস প্ল‍্যানিংয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারতেন জেনারেল জিয়া। হাসুবু একের পর এক মেটিকুলাসলি প্ল‍্যানড নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে তার আঁচলে ঝুলিয়ে রেখেছে ১০ বছর। তার মেটিকুলাস প্ল‍্যানিংয়ে বাংলাদেশের বাকি সব রাজনৈতিক দল পাড়া-মহল্লার জাগরণী সংঘে পরিণত হয়েছিল। তিনি আমলা-পুলিশ-মিলিটারি সব গলার মালায় ঝুলিয়ে ঘুরতেন, সেটাও ঐ মেটিকুলাস প্ল‍্যানিংয় করেই। তার সব থেকে বড় মুন্সিয়ানা তার বাপের নাম বেচায়। বাপের নাম বেঁচে সে কখনই ঠকেনি। এবারও লাভের গুড় তাঁর পাতেই গেছে। বাচ্চালোগের হ‍্যাডমগিরিতে অংশ নিতে ISIS আর Al Qyeda এর পতাকা নিয়ে এসেছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হিজবুত তাহরির, হরকাতুল জিহাদ। তাঁরা স্বভাবতই জিহাদি যোশে পতাকা উড়িয়ে, ভিডিও করে, লাইভ করে বিশ্বব্যাপী তাদের মুনিবদের জানান দিয়েছে। হাসুবু দাঁত কেলিয়ে হাসছে। যে জুজুর ভয় দেখিয়ে সে ১০ বছর সিআইএ, মোসাদ, র-কে হাতে রাখছিল— যে আমলীগ না থাকলে দেশ জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিনত হবে, সেই জুজু আপনারা প‍্যান্টের ভেতরে নিয়ে ঘুরে বেড়ান। আর যেখানে সেখানে বের করে করে মুত্র বিসর্জন করেন। দুই দিন পরে পাবলিক আপনাদের বৈবিছা লীগ বলে ডাকবে। যে উপকার আপনারা হাসুবু-র জন‍্য করছেন, তার তুলনা চলে না। সে এখন ISIS আর Al Qyeda’র পতাকা উড়ান ফুটেজ নিয়ে উচ্চকিত হবে, তার ফুট সোলজার এ/বি টিম অনলাইন দুনিয়া কাঁপিয়ে ফেলবে বাংলাদেশে ইসলামিক টেরোরিজমের পূর্ণজন্মের গল্প বলেতে বলতে।

আরেকটা কথা। ৫,৬,৭ আগস্ট ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে যখন, তখন দেশে কোন সরকার ছিলো না। কিন্তু এখন তো ইউনুস সরকার আছে। তাহলে ঘোষনা দিয়ে বাড়ি ভাঙার কর্মসূচিতে সেই সরকারের প্রতিক্রিয়া কোথায়? যে কোন জনবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সরকারি প্রতিক্রিয়া থাকবে, পক্ষে অথবা বিপক্ষে। না থাকলে সরকার থাকে না। ইউনুস সরকার চুপ করে থাকলেন। তারা ISIS এর পতাকা দেখেও চুপ করে থাকলেন। কখনো কখনো নৈশব্দ অনেক বেশি উচ্চকিত হয়ে যায়। কিন্তু ইউনুস সরকারের এই নৈশব্দ কি বলতে চাইলো আমাদের? Do they matter any more? পরের দিন এক দায়সারা বিবৃতি দিয়ে বললেন, হাসিনার নাম শুনে বাচ্চালোগের উত্তেজনা মাথায় উঠেছিল, তাই তাদের কিছু করার ছিল না। তাদের কি করার আছে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়ই বলে দেবে, কারণ সময় বড়ই বেহায়া। সময় বলে দেয় যে রাজা ন‍্যাংটা।

লেখক: গবেষক, মিডিয়া এণ্ড কমিউনিকেশন, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে কর্মরত।

পাঠকের মতামত:

২১ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test