রাম মন্দির অযোধ্যার ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে

শিতাংশু গুহ
বলা হয়েছে যে, মহাকুম্ভমেলার ৭০% পুণ্যার্থী প্রয়াগরাজ থেকে রাম পুণ্যভূমি অযোধ্যায় গেছেন, বাকি ৩০% গেছেন কাশী বিশ্বনাথ বা বেনারস-এ। পরিসংখ্যান ঠিক ঐরকম কিনা জানিনা, তবে ঘটনা সত্য। অযোধ্যায় গিয়ে সেটি টের পেলাম। লোকে-লোকারণ্য অযোধ্যা। প্রয়াগরাজের ভীড় আছড়ে পড়েছে অযোধ্যায়। ক’দিন আগেও অযোধ্যা ছিলো গ্রাম, এখন সেটি একটি শহর, বলা ভাল নুতন শহর, চারিদিকে কাজ চলছে, গড়ে উঠছে পুণ্যতীর্থ রাম-জন্মভূমি।
নুতন শহর অযোধ্যা। রাতারাতি এ শহরে মানুষগুলো ‘বড়লোক’ হয়ে গেছে। জমির দাম আকাশছোয়া, চারিদিকে নির্মাণ কাজ চলছে, পর্যটক আসছে, হোটেল ব্যবসা রমরমা, জমজমাট। আগে যে হোটেলের ভাড়া ছিলো ২/৩ হাজার, এখন সেটি ৫/৭ গুণ, তাও পাওয়া গেলে। খুব ভালো ট্র্যাডিশনাল হোটেল ৩০/৩২ বা ২০/২৫ হাজার রুপি। খুব একটা ভাল হোটেল যে আছে তা নয়, প্রায় সব হোটেল মোটামুটি। চেইন হোটেল গড়ে উঠছে। শুনলাম, এতকিছুর পরও অযোধ্যার মানুষ নাকি মোদীকে ভোট দেয়নি?
আমরা একটি হোটেল নেই (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫), ভাড়া ৫/৬ গুণ, ছোট্ট হোটেল, মাত্র ১৪টি রুম, নুতন বিল্ডিং, সবকিছু ঝকঝকে তকতকে। মালিক-ম্যানেজার-কর্মচারী সবাই স্থানীয়, আন্তরিক, কোন কৃত্রিমতা নেই, নেই কোন ফরমালিটি। ম্যানেজার জানালেন, এখানে ভক্তরা আসেন, ভক্তের সেবাই তাঁদের লক্ষ্য। আমরা একরাত ছিলাম, সেবার কোন ত্রুটি ছিলোনা। না জেনে এ হোটেল নিলেও সিদ্ধান্তটি ভাল ছিলো। কারণ রামমন্দির হোটেল থেকে হাঁটাপথ। হোটেলটি কেন্দ্রবিন্দুতে, অনেকগুলো দর্শনীয় তীর্থ হাঁটা বা রিকশা দিয়ে যাওয়া যায়।
রিসাব নামে স্থানীয় একটি ছেলে আমাদের এয়ারপোর্ট থেকে কখনো নুতন রাস্তা, কখনো গ্রাম্য পথে হোটেলে নিয়ে যায়, বুঝলাম হোটেল সেও চিনে না। রিসাব আমাদের রাম মন্দিরে নিয়ে যায়, আগেই জেনেছি যে, বিদেশী পাসপোর্ট হলে ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাওয়া যায়। সত্যিই তাই, যেখানে মানুষ ৪/৫ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে রামলালা’র দর্শন পায়, আমরা মাত্র ৩০/৪০ মিনিটে তা শেষ করি। পূজা দেয়ার ব্যবস্থা নেই, তাই পান্ডা নেই! তবে দর্শন শেষে প্যাকেট প্রসাদ বিনামূল্যে দেয়া হয়।
রাম মন্দির সন্নিকটেই দশরথ ভবন, ও কনক মহল। সবই অতি পুরানো, এতকাল অযত্নে পড়েছিল, এখন সংরক্ষণ হচ্ছে। রাজা দশরথ ছোটরানী কৈকেয়ী-কে কনক মহল তৈরী করে দিয়েছিলেন। রামচন্দ্র বিয়ে করে সীতাকে নিয়ে এলে রানী কৈকেয়ী সেটি উপহার হিসাবে সীতাকে দেন্। পাশেই হনুমান গারহি মন্দির। এ রাস্তাটা যথেষ্ট চাপা, এবং সেখানে অনেক বাঁদরের বসবাস। আমরা ৩ জন কলা কিনে খাচ্ছিলাম, লক্ষ্য করিনি, হটাৎ একটি বাদর আমার হাত থেকে অর্ধ-খাওয়া একটি কলা নিয়ে যায়। আমরা ওদের বেশ ক’টি কলা খেতে দেই। ফেরার পথে আবার অনেকগুলো কলা ওঁদের খেতে দেই।
দশরথ ভবনের সামনে র্দাড়িয়ে আপনি ভাবতেই পারেন, এবাড়ীতেই ছোটবেলায় রাম-লক্ষণ খেলা করতো! এখন থেকেই তাঁরা বনবাসে যায়, এই অযোধ্যাই ছিলো, ‘রামরাজ্য’। সূর্য বংশের রাজারা এখানে শাসন করেছেন। অযোধ্যা থেকে শ্রীলংকার দুরুত্ব ২৬৩১ কিলোমিটার। এখনকার হিসাবে সামান্যই, তখনকার হিসাবে বহুতদূর! রাম-রাবন যুদ্ধের কথা স্মরণ করে আপনি শিহরিত হতে পারেন। মূলত: শহরের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই সবকিছু, আপনি নাগেশ্বরনাথ মন্দিরেও যেতে পারেন।
পড়ন্ত বিকেলে আমরা হোটেলের ঠিক করে দেয়া রিকশায় সরজু নদীর পাশে যাই। এটি মেইন রাস্তা, হেঁটে রাম মন্দির যাওয়া যায়, সেখানে মানুষের ঢল, লোকে লোকারণ্য। আমরা উল্টোদিকে হাঁটি, সেখানে লতা মুঙ্গেশকারের সম্মানে একটি বিশাল সারেঙ্গী রাখা আছে, স্থানটি’র নাম ‘লতামুঙ্গেশকার স্কয়ার’। সাথেই সরযূ নদী, লেকের মত, বোঝা যায়, পরিকল্পিতভাবে এটিকে ঐস্থানে পুণ্যার্থীদের জন্যে হাটু জল করে রাখা হয়েছে। দুইদিকে বাধাই করা ঘাট, একপাড়ে ছোটখাট মেলা। অন্য পাড়ে দোকানপাট, মন্দির সবই আছে। সরযূ নদীর পাড়ে সন্ধ্যা আরতি হয়, আমরা দেখলাম, ভালই। হিন্দু মাত্রই ছোটবেলায় রামায়ণ পড়া থাকবে, অযোধ্যায় গেলে নুতন করে আবার দশরথ, কৈকেয়ী, বা সরযূ নদীর কথা মনে পড়বে। সন্ধ্যা বেলায় সরযূ নদীর পাশ দিয়ে হাঁটতে মন্দ লাগবে না।
পরদিন আমাদের ফ্লাইট দুপুরে হলেও আমরা সকালেই বেরিয়ে পড়ি, কারণ আমাদের আরো কিছু দর্শনীয় স্থানে যাবার কথা। রিসাব সকালেই চলে আসে, আমরা প্রথমে যাই পঞ্চশিবের মন্দির। পুরানো, কিন্তু সাজানো-গুছানো। সেখান থেকে গুপ্তারঘাট, অর্থাৎ শ্রীরাম সরযূ নদীর যে ঘাট থেকে স্বর্গবাসী হ’ন। পুরানে আছে তিনি সরযূ নদীতে নেমে স্বর্গে চলে যান। এজন্যে এই ঘাটের নাম এটি। তিনি যেই খড়ম জাতীয় জুতা ব্যবহার করতেন, বা যে জুতাজোড়া ছেড়ে তিনি শেষবারের মত নদীতে নামেন, সেই জুতাজোড়া সেখানে রক্ষিত আছে, এটিকে বলা হয়, ‘রাম কি পিদি’।
বিমান বন্দরে যেতে মিলিটারি টেম্পল পড়বে, আমাদের যাওয়া হয়নি। তবে ‘তুলসী উদ্যান গার্ডেন’ আপনি বাইরে থেকে দেখে নিতে পারেন। অযোধ্যা বিমানবন্দরটি এখন আন্তর্জাতিক, ছোট্ট, পরিচ্ছন্ন। শুনলাম, পাঁচ বছরে অযোধ্যার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। বহু পুরাতন ঐতিহাসিক শহর ‘অযোধ্যা’ গিয়ে আপনার ভাল লাগবে। মাটির গুণ কিনা জানিনা, রিসাব ছেলেটি ভাল, শুনলাম এমবিএ, জানালো, মায়ের অসুস্থতার কারণে অযোধ্যা ছেড়ে যেতে পারছেন না! এমনিতে অযোধ্যায় আপনার ভয় লাগবে না, চোর-ডাকাত সন্ত্রাসী আছে বলে শুনিনি।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।
পাঠকের মতামত:
- নড়াইলে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ভ্যান চালক গ্রেফতার
- নগরকান্দায় কে.এম. ওবায়দুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা
- ‘দেশে ফ্যাসিস্টদেরকে আর কোনো আস্তানা গড়তে দেওয়া হবে না’
- ‘আবেগ দিয়ে জনগণের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়’
- ‘হজ ও ওমরা টিকিটের ক্ষেত্রে আর কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না’
- ‘লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত’
- আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল ও দেয়াল নির্মাণ
- ‘সরকারের কোনো পদক্ষেপে পলাতক ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের সুযোগ যেন না পায়’
- ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান
- নড়াইলে এনপিপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- সাতক্ষীরার ছনকায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ৩৫ ভরি সোনার গহনা লুট
- ওসমান পরিবারের আশীর্বাদ পুষ্ট সরোজ সাহা এখন শত কোটি টাকার মালিক
- ট্রেনের ১৩০টি অবৈধ টিকিটসহ নৌ-বাহিনীর সদস্য আটক
- ময়মনসিংহে পথ শিশুদের মাঝে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার দিলেন রোকনুজ্জামান
- ফরিদপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- ময়মনসিংহ জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল হাদী
- ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী হামলার প্রতিবাদে সালথার আটঘরে বিক্ষোভ
- বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও দেশীয় অস্ত্রসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক
- দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকট
- টাঙ্গাইলে তেলের দোকানে আগুন লেগে ২১ দোকান ভস্মীভূত
- গাজায় গণহত্যা ও ভারতে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ
- গৌরনদীতে ইউপি চেয়ারম্যান পিকলু গুহ গ্রেপ্তার
- আগৈলঝাড়ায় গাভী পালনকারী খামারীদের মাঝে বিনামূল্যে ঘাস কাটার মেশিন বিতরণ
- টাঙ্গাইলে স্লোগানে স্লোগানে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ
- পাশাপাশি কবরে সমাহিত সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবা-মা-শিশু
- মুক্তিযুদ্ধের উৎকর্ষে একাত্তরের জুলাই এবং বন্ধু প্রতীম ভারত
- বাঙালি সংস্কৃতিতে দোল উৎসব সার্বজনীনতা লাভ করে কবিগুরুর কল্যাণে
- ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, নীরব ভূমিকায় উপজেলা প্রশাসন
- অদম্য মেধাবী এক কিশোরের গল্প, ভালো কলেজে ভর্তি নিয়েও সংশয়
- প্রতিটি স্কুল চলবে ওয়ান শিফটে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
- বিকৃত পৌরুষের শিকার আছিয়া, সমাজ কতটা দায়ী?
- বরিশালে গ্রীন লাইন পরিবহনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
- সমাজের বিবেক জাগ্রত হবে কবে?
- স্বর্গে যা নেই
- কুষ্টিয়ায় রোজার পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও, স্বস্তি নেই কাঁচা বাজারে
- সোসিয়েদাদ দর্শকদের অসহিষ্ণুতা, ম্যাচের পার্থক্য গড়লেন এনদ্রিক
- মাদারীপুরে দুর্নীতির অভিযোগে ডিসি অফিসের কেরানীর বিরুদ্ধে আদালতে দুদকের চার্জশিট
- নারী ফুটবল নিয়ে দুই ক্রীড়া সাংবাদিকের বই
- গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ৫ মার্চ, থাকছে ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়
- পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে বিদায় নিলো বাংলাদেশ
- 'খুরো ও ভুট্টো পূর্ব পাকিস্তানিদের শোষণ করে শূন্য করেছে'
- ধর্মীয় উপাসনালয় রক্ষার আহ্বান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- কেনা-বেচা সহজ করতে বিক্রয় নিয়ে আসছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি
- শরীফের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে বিশাল মিছিল
- ইঁদুরের উৎপাত থেকে ফসল বাঁচাতে শ্যামনগরে মরণফাঁদ পেতেছে কৃষকরা