E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হতে হবে গণতান্ত্রিক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ

২০২৫ জুলাই ০৩ ১৮:১০:১৫
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হতে হবে গণতান্ত্রিক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ

আবীর আহাদ


দীর্ঘকাল পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী ছ'মাসের মধ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সর্বপর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমাণ্ড কাউন্সিলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছেন। এ জন্যে আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজন বীর প্রতীককে ধন্যবাদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্ব গঠিত আহ্বায়ক কমিটিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। 

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা কেউ কেউ বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক, তাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কিছুই যায়-আসে না। কারণ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে এলেই আর রাজনীতি থাকে না। তাঁরা তখন হয়ে যায় অভিন্ন এক আত্মা। সেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদে আবার বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, বীর মুক্তিযোদ্ধারা আবার ভোট দিয়ে তাঁরা তাঁদের সার্বিক কল্যাণ দেখভাল করার লক্ষ্যে মনমতো নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পারবেন এবং তাঁদের জন্যে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে আবার তাঁরা বসতে পারবেন, অশীতিপর বৃদ্ধ বীর মেক্তিযোদ্ধারা জীবন সায়ান্নে দাঁড়িয়ে একে-অপরের সাথে কুশল বিনিময় করতে পারবেন, এমন প্রত্যাশায় তাঁদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

কিন্তু পাশাপাশি হঠাত করে সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মনে বিপুল বিস্ময় ও আশঙ্কাও পরিলক্ষিত হচ্ছে। কারণ শোনা যাচ্ছে এবং টেরও পাওয়া যাচ্ছে যে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের গঠনতন্ত্র লংঘন করে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি সরাসরি নির্বাচন না দিয়ে প্রতি জেলা ও উপজেলায় মুখচেনাদের দিয়ে এডহক বা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে! এটা যদি সত্য হয়, তাহলে সেটা হবে প্রকৃত গণতান্ত্রিক, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের চরম অন্তরায়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হতে হবে গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ। এ নির্বাচন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শুধু একটি সাধারণ নির্বাচন নয়, এটি তাঁদের জন্য একটি আবেগ এবং গর্বের বিষয়। এ নির্বাচন তাঁদের আত্মমর্যাদা, বীরত্ব এবং দেশ প্রেমেরও প্রতীক।

সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ ভোটে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতা নির্বাচিত হবেন। এক মুক্তির তিন ভোট এ পদ্ধতিতে একজন মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভোট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। কোন অবস্থায় বামুস নির্বাচন পাতানো ও প্রহসনের হলে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা সেটি মানবে না বা সে-নির্বাচন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ প্রতি উপজেলা ও জেলায় এডহক বা আহ্বায়ক কমিটি বহাল থাকলে তারা যে-কোনো একটি কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা প্যানেল বা ব্যক্তি বিশেষের পক্ষে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রভাবিত করবেই। ফলে নির্বাচনটি প্রহসনে পরিণত হবে। সুতরাং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রত্যক্ষ নির্বাচন ব্যতীত জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে এডহক কমিটি গঠন করা সমীচীন হবে না।

এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে মাথায় রেখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যে বিশেষ আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক : চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

পাঠকের মতামত:

০৯ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test