E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লবী ‍উদ্ভাবন

২০১৭ জুলাই ১৫ ১৩:২৫:০৫
ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লবী ‍উদ্ভাবন

নিউজ ডেস্ক : নতুন পথের সামনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-এর এক কমিটি জানিয়ে দিল নতুন কায়দায় লিউকেমিয়া এবং আরও কিছু ক্যানসার চিকিৎসার উপায় বের হয়েছে। শুধু এফডিএ-র অনুমোদনের অপেক্ষা। এরপরই বাজারে আসবে এক বহুজাতিক সংস্থা-আবিষ্কৃত নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি। তা হলে ওই পদ্ধতিই হবে বাজারে-আসা প্রথম জিন থেরাপি। খবর আনন্দবাজারের।

লিউকেমিয়া-আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে নিষ্কাশিত হবে পরম উপকারি টি-কোষ। তার জিন বদলে সেই টি-কোষ আবার চালান করে দেওয়া হবে রোগীর দেহে। জিন-বদলানো এই টি-কোষ এ বার লড়াই করে হারাবে ক্যান্সারকে। যেহেতু কোষ মারবে রোগকে, তাই এই পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে ‘জীবন্ত ওষুধ’।

পৃথিবীশুদ্ধ বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো এত দিন মগ্ন ছিল এক দৌড়ে। এ রকম জিন থেরাপি আনার লক্ষ্যে। দৌড়ে জিতল কেবল এক সংস্থা, যাদের অর্থানুকূল্যে গবেষণা চলেছিল পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে।

যে নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হবে লিউকেমিয়া এবং আরও কিছু ক্যান্সারের, তা ওই বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞানীরা ট্রায়াল দিয়েছিলেন ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ২০১৬-র আগস্ট পর্যন্ত ৬৩ জন রোগীর মধ্যে। ওদের মধ্যে ৫২ জন রোগী ৮২.৫ শতাংশ সেরে উঠেছেন। মারা গেছেন ১১ জন। যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের দিকে তাকিয়ে গবেষকরা খুবই উৎসাহী।

নতুন চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? এ ব্যাপারটা খুবই ভাবিয়েছিল এফডিএ’র বিশেষজ্ঞদের। কারণ, ক্যান্সারের দুই চিকিৎসায় কেমোথেরাপি এবং তেজস্ক্রিয়তা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়াবহতা গবেষকদের চিন্তায় ফেলে। বহুজাতিক সংস্থাটির তরফে এফডিএ’র প্যানেলকে জানানো হয়, নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশ কম।

এফডিএ’র প্যানেলের সামনে কাল যে শুনানি হয়, তাতে উপস্থিত করানো হয় নতুন প্রক্রিয়ায় চিকিৎসাপ্রাপ্ত বেশ কিছু রোগীকে। যাদের একজন ১২ বছর বয়সী এমিলি হোয়াইটহেড। ২০১২ সালে, এমিলির বয়স যখন ৬, তখন প্রচণ্ড জ্বর, খুব কম রক্তচাপ এবং বুকে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসার পরে এমিলি এখন পুরোপুরি সুস্থ। প্যানেলকে এমিলির বাবা বলেন, ‘এফডিএ এই চিকিৎসা অনুমোদন করলে উপকৃত হবে হাজার হাজার শিশু। আপনারা যারা প্যানেলে বসে আছেন, তারা এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের সাক্ষী হতে চলেছেন। রক্তের ক্যান্সার চিকিৎসাযোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হবে।’

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন আর এক লিউকেমিয়া-আক্রান্ত রোগীর বাবা ডন ম্যাকমোহন। যার ১২ বছর বয়সী ছেলে কোনর তার তিন বছর বয়স থেকেই লিউকেমিয়ার শিকার। প্রথাগত চিকিৎসায় সারছিল না বলে নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করান ডন। কোনর এখন হকি খেলে।

আর এক রোগীর মা অ্যামি কাপেন জানান, নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করেও তার পাঁচ বছরের মেয়ে সোফিয়া মারা গিয়েছে। তাতেও তিনি নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসার বিরোধী নন। কারণ, তার দৃঢ় বিশ্বাস, সোফিয়ার চিকিৎসা ঠিক সময়ে শুরু করলে মেয়েটা বাঁচতো।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যয় যথেষ্টই। এ মুহূর্তে তা তিন লক্ষ ডলার। তবু নতুন চিকিৎসা যে রোগ নিরাময়ের আশা জাগাচ্ছে, সেটা বিজ্ঞানের এক বড় পদক্ষেপ। বহুজাতিক সংস্থাটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুধু আমেরিকায় নয়, বহু দেশেই নতুন চিকিৎসা ছড়িয়ে দেওয়ার অপেক্ষায় তারা।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test