E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সরি বলতে খুবই অপছন্দ করি’

২০১৬ জুলাই ২৩ ১৪:৫১:২৩
‘সরি বলতে খুবই অপছন্দ করি’

বিনোদন ডেস্ক : টালিগঞ্জের আবেদনময়ী অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। পর্দায় খোলামেলা এবং সাহসী চরিত্রে অভিনয় করে অনেকবারই খবরে এসেছেন তিনি।

এবার মুক্তি পেতে যাচ্ছে এ অভিনেত্রী ‘সাহেব বিবি গোলাম’ শিরোনামের একটি সিনেমা। প্রতীম দাশগুপ্ত পরিচালিত সিনেমাটি খোলামেলা দৃশ্যের জন্য এরই মধ্যে আলোচনায়। সিনেমার ট্রেইলারেও বেশ খোলামেলা স্বস্তিকা।

সম্প্রতি ‘সাহেব বিবি গোলাম’ সিনেমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি।

সিনেমায় স্বস্তিকার চরিত্রের নাম জয়া। এ চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে স্বস্তিকা বলেন, “আমার মনে হয় ভেঙে বেরিয়ে আসার গল্পে একটা ট্রিগার পয়েন্ট থাকে। চারদিকে সব কিছু ভালো হয় তাহলে তো ভেঙে বেরোবার চাড় থাকে না। কি থেকে ভেঙে বেরোবেন আপনি? ভেঙে বোরোবার (পরিবারের একঘেয়েমি বা শারীরিক বা মানসিক প্লেজার, যাই হোক না) পর কিন্তু ওই ট্রিগার পয়েন্টটা আর জরুরি থাকে না। আনন্দটাই রয়ে যায়। তারপর সমাজও আপনাকে কী বলছে সেটাও ব্যাপার না। কারণ, আপনি যে ভেঙে বেরোতে পারলে সেটাই আপনার কাছে সব থেকে আনন্দের। এটাই সব চেয়ে কঠিন ছিল।

একটা উদাহরণ দিই। বেশিরভাগ সংবেদনশীল দৃশ্যে মহিলাদের মধ্যে একটা কষ্ট থাকে। সে হয়তো তার চারপাশে নিয়ে খুব খুশি নয়। এই অখুশি থেকেই যে যা করার করে। যেমন ‘টেক-ওয়ান’-এ সে অ্যালকোহলিক, ডিপ্রেসড। তাই পার্টনারের সঙ্গেও তার ডিপ্রেশন যায় না। সঙ্গে আরো অনেক ইস্যু আছে-সমাজ, পরিবার, স্বামী। সেটা ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এও আছে। কিন্তু এখানে সেই মহিলা যা করে খুব খুশি মনে করে। কোনো অপরাধবোধ নেই। তার কারো কাছে প্রমাণ করারও কিছু নেই। নিজের আর নিজের শরীরের স্যাটিসফ্যাকশন চায়। নিজের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে চায়, নিজের হাতে ক্ষমতা রেখে। কি করবে, কার সঙ্গে করবে, কেমন করে করবে সব তার ইচ্ছাতেই হয়। আর সে ভীষণ খুশি। কারণ সে শরীর পেরিয়ে জীবনকে উপভোগ করে। কারণ ওই যে বললাম, ট্রিগার পয়েন্টটা সে পেরিয়ে যায়। এই জন্যই কঠিন।”

অপরাধবোধ নেই বলেই কী ছবিটি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের এত সমস্যা হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন “একদমই। অপরাধবোধ নেই, নৈতিকতার জ্ঞান নেই। এটা কী করে আমরা ছাড়তে পারি? সমাজের কাছে কী শিক্ষা যাবে? পরকীয়াতে আপত্তি নেই, কারণ সেখানেও একটা বন্ধন আছে। তোমাকে কোথাও গিয়ে উত্তর দিতে হবে। হুট করে কোথাও গিয়ে ‘সরি’ বলবে। এই ‘সরি’ বলার ফিলিংসটা খুব জরুরি। আমি দুটো সিনেমার কথা বলছি, যেগুলো আমার খুব ভালো লাগা সত্বেও কিছু ব্যাপার খুব বিরক্ত লেগেছে। এক ‘নো এন্ট্রি’।

বিপাশা চরিত্রটা প্রথম থেকে দেখছি খুব হাসিখুশি। অথচ সিনেমার শেষে ওকে দিয়ে বলানো হয় যে, ওর অসুস্থ স্বামীর জন্য ওকে এগুলো করতে হয়। (খুব উত্তেজিত হয়ে) কেন? দেবী করে দেওয়া কেন? বা ‘ডার্টি পিকচার’। সারা সিনেমা ধরে বলে গেল যা করছি বেশ করছি, শেষে গিয়ে চিঠিতে শুধু না পাওয়ার গল্প লিখে গেল। যেন ওই না পাওয়াগুলোর জন্যই এটা হয়েছে। ওই ট্রিগার-পয়েন্ট পেরিয়ে গেলে কেন এত এক্সকিউজ দিতে হয়? বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না? করেছি বলে ‘লজ্জা’ পাচ্ছি? এই লজ্জা পাওয়াটা ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এ নেই। একেবারে নির্লজ্জ। এ জন্যই এত ভালো লাগে জয়াকে (হেসে)।”

জয়া চরিত্রটির সঙ্গে বাস্তবে তার মিল সম্পর্কে স্বস্তিকা বলেন, “আমি সরি বলতে খুবই অপছন্দ করি। ‘একটা সরি বলে দিলেই তো সব ঠিক হয়ে যায়’-এই কথাটা যে আমাকে কতবার শুনতে হয়েছে! কেন বলব? অর্ধেক সময় তো লোকে বলার জন্য বলে। আর ‘বেশ করেছি’ আমার প্রিয় শব্দ! যারা আমার সঙ্গে থাকে তারা জানে। ‘বেশ করেছি’ শব্দটা সিনেমাতে না থাকলেও, অঙ্গভঙ্গিটা একেবারেই তাই। আর সিনেমাতে বেশ কিছু অন্য রকম ব্যাপার হয়েছে। যেমন বিক্রমের (চ্যাটার্জি) সঙ্গে এই প্রথম কাজ করলাম। বেশ তো ভালো লাগল। কেউ ওকে নেগেটিভ চরিত্রে ভাববে না। আর সত্যি তো তাই।”

স্বস্তিকা ছাড়াও ‘সাহেব বিবি গোলাম’ সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন- অঞ্জন দত্ত, ঋত্বিক চক্রবর্তী, পার্নো মিত্র, বিক্রম চ্যাটার্জি প্রমুখ।

(ওএস/এএস/জুলাই ২৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test