E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে জেএমবির বোমা হামলা মামলার ৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

২০১৪ জুলাই ১৬ ১৭:১৭:৫৫
নাটোরে জেএমবির বোমা হামলা মামলার ৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা মামলার ৩ জনের পাবলিক স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রহিদুল ইসলামের আদালতে মামলাটির স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন।

সাক্ষীদাতারা হলেন মোহম্মদ হালিম, হারান প্রামানিক ও রায়েজুল ইসলাম। এ নিয়ে ৬৬ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ২৭ জনের জেরা ও জবানবন্দী গ্রহন করা হলো। স্বাক্ষী গ্রহন শেষে বিচারক আগামী ২৭ আগষ্ট মামলার বাকী স্বাক্ষীর জন দিন ধার্য করেন।

এদিকে জেএমবি মামলার আসামীদের হাজির করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সকাল থেকেই পুলিশ ও সাদা পোশাকে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা আদালত চত্বর সহ সহ আশপাশ এলাকায় নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে। আদালত এলাকায় প্রবেশের মুখে সাধারণ মানুষদের তল্লাশী করা হয়। দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকার কাশিমপুর, রাজশাহী ও নাটোর কারাগার থেকে বিশেষ পুলিশী নিরাপত্তায় আসামী আব্দুর রশিদ, দেলোয়ার হোসেন মিঠ, হাফিজুর রহমান হাফিজ, শিহাব উদ্দিন শিহাব, শহীদুলউল্লাহ্ ওরফে ফারুককে এজলাসে আনা হয়। স্বাক্ষী গ্রহণ শেষে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এই মামলার মোট ৬৬ জন সাক্ষীর মধ্যে মোট ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। এর আগে গত ১৮ মে ৭ জন সাক্ষী এবং ২৮ জানুয়ারি ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম আরিফ পাশা এই মামলায় স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। এর আগে আটককৃতদের মধ্যে ৪ জন নিজেদের জেএমবি আত্মঘাতি স্কোয়াডের সদস্য বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট নাটোরে জজ আদালত, ডিসি অফিস, ট্রেজারি, বাসস্ট্যান্ড, পেট্রোলপাম্প সহ ৮টি স্থানে সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বোমা বিষ্ফোরণের স্থানে ইসলামি শাসন কায়েমের লক্ষ্যে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের আহ্বান সম্বলিত জামায়েতুল মোজাহিদিন বাংলাদেশ জেএমবি’র প্রচারপত্র বা লিফলেট পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে নাটোর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ওই দিনই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নাটোর থানায় বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করে। পরে ২০০৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর গোদাগাড়িতে জেএমবি সদস্য শহীদুল্লাহ্ তারেক ওরফে তুষার বিপুল পরিমান জেহাদী বই, লিফলেট ও বিষ্ফোরক দ্রব্যসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তারই স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নাটোর শহরের মীরপাড়া জেএমবির আস্তানায় নাটোর ও রাজশাহী জেলার পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়।

১৮ সেপ্টেম্বর রাতে নাটোরের মীরপাড়ায় জেএমবির উত্তরাঞ্চলীয় অপারেশর হেডকোয়ার্টার খাদেমুল ইসলামের তিনতলা ভবন থেকে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশের সাথে জেএমবি সদস্যদের বন্দুকযুদ্ধ হয়। বোমা ফাটিয়ে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়েক আব্দুর রহমানের জামাতা আব্দুল অওয়ালসহ অন্যরা বাড়ির পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ এখান থেকে বিপুল পরিমান জেহাদী বই, মোবাইল, মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল, বিষ্ফোরক দ্রব্য, হিট লিষ্ট উদ্ধার করে।

২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নাটোরের তৎকালীন ম্যাজিষ্ট্রেট এম এম আরিফ পাশার কাছে শিহাব, দেলোয়ার হোসেন মিঠু, হাফিজুর রহমান হাফিজ ও আব্দুল মতিন ৪ জন ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলে তারা জেএমবি আত্মঘাতি স্কোয়াডের সদস্য।

এ মামলায় তদন্তকারি কর্মকর্তা আইও নাটোর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান তদন্ত শেষে আত্মস্বীকৃত জেএমবির সুসাইড স্কোয়াডের সদস্য হাফিজুর ইসলাম হাফিজ ওরফে নোমান, দেলোয়ার হোসেন ওরফে ফজলার রহমান, শিহাব উদ্দিন ওরফে শিহাব ওরফে হানজালা ওরফে আনজালা, মতিন ওরফে ইসমাইলসহ শহীউল্লাহ্ ওরফে ফারুক, শফিউল্লাহ্ ওরফে তারিক ও আব্দর রশিদের নামে নাটোরের চিফ জুডিশিয়াল আদালতে ২০০৬ সালের ১৬ নভেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহন করে বিচারের জন্য ২০০৫ সালের ২৯ শে নভেম্বর মামলাটি জজ আদালতে প্রেরণ করেন।


(এমআর/এটিআর/জুলাই ১৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test