E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন চেয়ে নোটিশ

২০২৪ মার্চ ০৩ ১২:৫১:৩৯
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন চেয়ে নোটিশ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে  ভয়াবহ আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর  ঘটনা তদন্ত করতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যেককে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। 

আজ রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ সোলায়মান (তুষার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজউকের চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে ডাকযোগে এই লিগাল নোটিশ পাঠান।

বেইলি রোডে অবস্থিত ‘গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ২৯ শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে আগুন লাগে। এতে ৪৬ জন নিহত হন। ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, যাঁরা শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছে কতৃপক্ষ। ওই ভবন থেকে ৭০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, বেইলি রোড একটি ব্যস্ততম এলাকা‌। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ নানা শ্রেণীর মানুষ এই রোডের আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন। নোটিশে আরো বলা হয়, ওই ভবনে আগুনের ঘটনার খবর ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদপত্রে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। তাতে বলা হয় যে ভবনটিতে আগুন লেগেছে সেখানে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করার অনুমোদন ছিল না। ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ভবনটির অনুমোদন আটতলার। শুধু আটতলায় আবাসিক স্থাপনার অনুমোদন আছে। সেটিতে রেস্তোরাঁ করার অনুমোদন ছিল না‌ । নোটিশে বলা হয় ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার সতর্কতা নোটিশ দেয়া হলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি । যারফলে কর্তৃপক্ষের দায় ও ব্যর্থতা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোনমতেই তাদের দায় এড়াতে পারেনা। নোটিশে আরো বলা হয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী প্রত্যেকের জীবনধারণের অধিকার রয়েছে ও ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩৬ অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের নিরবিচ্ছন্নভাবে চলাফেরার অধিকার রয়েছে।

নোটিশে আরো বলা হয় একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা না করায় এবং যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ঘটছে এবং ৪৬ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেকেই আহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কোনক্রমেই তাদের দায় এড়াতে পারে না। ঠিক কার ব্যর্থতার কারণে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তা খুঁজতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি করা হয়। এছাড়া ওই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ও আহতদের চিহ্নিত করে প্রত্যেককে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়। নোটিশ গ্রহণের পাঁচ দিনের মধ্যে কি ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা লিখিতভাবে নোটিশ দাতাকে জানাতে বলা হয়। কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়েরসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ সোলায়মান তুষার বলেন, নোটিশ নোটিশ গ্রহীতাদের ব্যর্থতার কারণেই বেইলি রোডের ওই ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে নিরীহ ও নিরপরাধ ৪৬ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। যেহেতু কর্তৃপক্ষ ভবন মালিককে তিনবার সর্তকতা নোটিশ দিয়েছিল কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি সেহেতু কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা রয়েছে। ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার আরো বলেন, নোটিশ পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা নাহলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন ও ক্ষতিপূরণ দাবিতে জনস্বার্থে রিট দায়ের করা হবে।


(এসটি/এএস/মার্চ ০৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test