E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঐশী ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে আরও দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ

২০১৫ মে ০৭ ১৬:১৭:৩৯
ঐশী ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে আরও দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশের স্পেশাল  ব্রাঞ্চের (পলিটিকেল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান ও তার দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে আরও দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালতে সাক্ষ্য দেন সিআইডি’র উপ-প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক কায়সার রহমান ও জনৈক তানভীর সুলতান।

ঐশীর আইনজীবী মাহবুব হোসেন রানা বাংলানিউজকে জানান, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আগামী ১৩ মে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে ২৫ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠালে নতুন করে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

পরবর্তীতে গত বছরের ৩০ নভেম্বর নতুন করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।

নিহত পুলিশ দম্পতির একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানসহ তিনজন এ মামলার আসামি। মামলার অন্য দুই আসামি হচ্ছেন ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান রনি। তাদের মধ্যে রনি জামিনে আছে।

বুধবার রনি আদালতে হাজির ছিল। ঐশী ও জনিকে কারাগার থেকে হাজির করা হয়।

অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটি শিশু আদালতে বিচার চলছে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। এরপরই তিনি সুমিকে জামিন দেন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় দেওয়া চার্জশিট থেকে জানা গেছে, ঐশীকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় সে বাইরের পরিবেশের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে নিজ পরিবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। মা-বাবার শাসনকে অমানুষিক আচরণ হিসাবে সে গণ্য করতো।

খুনের ঘটনার ২/৩ মাস আগে ঐশী তার ড্যান্সমাস্টার জনির সঙ্গে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এজন্য ঐশী তার বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা চায়। কিন্তু ঐশীর পিতা মাহফুজুর রহমান মেয়েকে দুবাই যেতে নিষেধ করেন।

হত্যা ঘটনার এক মাস আগে ঐশী তাদের চামেলীবাগের বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধু জনির সঙ্গে রামপুরা এলাকায় বাসা সাবলেট নিয়ে ১৫ দিন বসবাস করে। ওই সময়ই বন্ধু জনির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে পরিবারের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং মা-বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

খুনের ঘটনার দিন পনের আগে সে বাসায় ফিরে আসে। এবার তার অবাধ চলাচল ও মোবাইলে ব্যবহারের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়।

ঐশী তার ড্যান্সমাস্টার জনির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মুক্ত জীবন যাপনের জন্য দুবাই যেতে টাকার প্রয়োজনে মা-বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার কথা সে বন্ধু জনিকে জানায়। জনি তাকে খুন করতে প্ররোচিত এবং আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।

ঐশী ও জনির বন্ধু রনি খুনের পরিকল্পনার কথা জানতো। ঐশী তার মা-বাবাকে খুন করার পরও তাকে আইনের হাত থেকে বাঁচাতে খুনের কথা গোপন করে তার দূর সম্পর্কের এক খালার কাছে ঐশীর থাকার ব্যবস্থা করে রনি।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিকেল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে।

ওই বছরের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ঐশী জবানবন্দি দেয়। পরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। আদালত তা নথিভূক্ত রাখার নির্দেশ দেন।

(ওএস/এএস/মে ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test