E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৯ জুলাই সাকার আপিল মামলার রায়

২০১৫ জুলাই ০৭ ১৩:০৪:৫২
২৯ জুলাই সাকার আপিল মামলার রায়

স্টাফ রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর পক্ষে আপিল মামলার রায় দেওয়া হবে ২৯ জুলাই। যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আপিল শুনানি শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার  এ দিন ধার্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে গত ১৬ জুন শুরু হয়ে ১৩ কার্যদিবসে এ আপিল শুনানি শেষ হলো। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার প্রথমে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান। এরপর এর জবাবে রাষ্ট্রেপক্ষে সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সবশেষে খন্দকার মাহবুব হোসেনের জবাবের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাকা চৌধুরীর আপিল শুনানি।

৫ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত তিন কার্যদিবসে সাকা চৌধুরীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান। এর আগে প্রথমে আসামিপক্ষের শুনানিতে ১৬ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষীদের সাক্ষ্য-জেরা এবং রায় সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) উপস্থাপন করেন এসএম শাহজাহান।

অন্যদিকে গত ৩০ জুন এবং ১ ও ৭ জুলাই তিন কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে আপিল বিভাগে আসা পঞ্চম আপিল মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। গত ১৬ জুন সর্বশেষ চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই বছরের ২৯ অক্টোবর খালাস চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন তিনি। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।

ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টির পক্ষে সাক্ষী হাজির করেন রাষ্ট্রপক্ষ। এগুলোর মধ্যে মোট ৯টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। বাকি আটটি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ যে ছয়টি অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করেননি সেগুলো থেকেও সাকা চৌধুরীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে চারটিতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে সাকা চৌধুরীকে। তিনটি অভিযোগের প্রত্যেকটিতে ২০ বছর এবং আরো দু’টি অভিযোগের প্রতিটিতে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। সব মিলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মোট ৭০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি।

যে চারটি হত্যা-গণহত্যার দায়ে সাকাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো ৩ নম্বর (অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা), ৫ নম্বর (রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে তিনজনকে গণহত্যা), ৬ নম্বর (রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ৫০-৫৫ জনকে গণহত্যা) এবং ৮ নম্বর (চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে হত্যা) অভিযোগে।

অন্যদিকে ২ নম্বর (রাউজানের গহিরা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গণহত্যা), ৪ নম্বর (জগৎমল্লপাড়ায় ৩২ জনকে গণহত্যা) এবং ৭ নম্বর অভিযোগে (রাউজানের সতীশ চন্দ্র পালিতকে হত্যা) আনা তিন হত্যা-গণহত্যায় সাকা চৌধুরীকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

১৭ এবং ১৮ নম্বর অভিযোগে সাকা চৌধুরীকে আরও পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যে দু’টি অভিযোগে যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ, সিরাজ ও ওয়াহেদ ওরফে ঝুনু পাগলাকে অপহরণ করে নির্যাতন এবং চান্দগাঁওয়ের সালেহউদ্দিনকে অপহরণ করে সাকা চৌধুরীর পারিবারিক বাসভবন গুডসহিলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test