E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জঙ্গি আরিফের ফাঁসি কার্যকর

২০১৬ অক্টোবর ১৭ ০৯:১৩:২৩
জঙ্গি আরিফের ফাঁসি কার্যকর

খুলনা প্রতিনিধি :ঝালকাঠিতে বোমা হামলা চালিয়ে দুই বিচারক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) অন্যতম শীর্ষ নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের (৪৫) ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

রবিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে খুলনা জেলা কারাগারে জঙ্গি আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এ সময় ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান, খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাহবুব হাকিম, সিভিল সার্জন এএমএম আবদুর রাজ্জাক, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি (সিটিএসবি) রাশিদা বেগম, র‌্যাবের প্রতিনিধি এএসপি মিজানুর রহমান, খুলনা জেলা কারাগারের সুপার, কারাগারের জেলার ও কারাগারের ইমামসহ ১২ জন সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা রাত ৯টা ৩৪ মিনিটে কারাগারে প্রবেশ করেন।

জঙ্গি আরিফের ফাঁসি কার্যকরে চারজন জল্লাদ অংশগ্রহণ করেন বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে। আরিফ বরগুনা সদর উপজেলার বান্দরগাছিয়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে।

এদিকে, রবিবার দুপুর ১টার দিকে আরিফের সঙ্গে শেষ বারের মত সাক্ষাৎ করতে তার পরিবারের ১৮ সদস্য বরগুনা থেকে খুলনা জেলা কারাগারে আসেন। এদের মধ্যে ১২ জন একটি মাইক্রোবাসে ও বাকি ছয়জন তিনটি মোটরসাইকেলে কারাগারের প্রধান ফটকে পৌঁছান।

আরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন তার স্ত্রী খাদিজা খানম, দুই মেয়ে, ছয় বোন, চার ভাতিজা, এক ভগ্নিপতি এবং অন্য চারজন ছিলেন নিকট আত্মীয়। দুপুর দেড়টায় তারা কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কারাগারে প্রবেশ করেন। বিকাল ৩টা পর্যন্ত একঘণ্টা তারা কারাগার অভ্যন্তরের একটি কক্ষে আরিফের সঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার শেষে বিকাল সাড়ে ৩টায় তারা কারাগার ত্যাগ করেন।

আরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা তার ভাতিজা মো. জামাল জানান, তারা দুপুর দেড়টায় কারাগারে প্রবেশ করেন। আরিফ মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে আরিফের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ মে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ ৭ জনের ফাঁসির আদেশ দেন। এর মধ্যে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খ আব্দুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাই আব্দুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন ও খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। একই মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জেএমবির অপর শীর্ষ নেতা আসাদুল ইসলাম আরিফ পলাতক ছিলেন।

২০০৭ সালের ১০ জুলাই ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর আপিল করেন আরিফ। গত ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জেএমবি নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

এদিকে, জঙ্গি আরিফের ফাঁসি কার্যকর উপলক্ষে গত শনিবার সকাল থেকেই খুলনা জেলা কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিকাল ৩টার পর থেকে কারাগারের সামনের সড়কে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে কুখ্যাত খুনি এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকরের পর প্রায় সাড়ে ১২ বছর পর জঙ্গি নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল।




(ওএস/এস/অক্টোবর১৭,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test