E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্নের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে মন্তব্য : আইনমন্ত্রী

২০১৭ জুলাই ০৩ ১৪:৩৬:৫৭
সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্নের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে মন্তব্য : আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : বিচারপতি অপসারণসংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় না পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব নয়।

আদালতের রায়ে জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হলো কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রয়ে উনারা (বিচারপতিগণ) শুধু ঘোষণাই দিয়েছেন যে আপিলটি খারিজ করেছেন। এখন এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে আমার মনে হয় পূর্ণাঙ্গ রায়টা পড়তে হবে। এটি না পড়ে বলা যাবে না সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে কি না।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এদিন সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির, মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং রাষ্ট্রপক্ষের অপর আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মামলার অ্যামিকাস কিউরিগণসহ সুপ্রিম কোর্টের তিন শতাধিক আইনজীবী ও শতাধিক গণমাধ্যম কর্মী।

এর আগে, ১ জুন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণসংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষ হয়। শুনানি শুরু হওয়ার ১১তম দিনে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

গত ৩০ মে দশম দিনের আপিল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত প্রদান শেষ হয়। মোট ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি আদালতে তাদের মতামত দিয়েছেন। যার মধ্যে নয় জনই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মতামত দেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য আদালত ১২ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ১২ জনের মধ্যে ১০ জন আদালতে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। অ্যামিকাস কিউরি নিযুক্ত হলেও ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মতামত দেননি।

বক্তব্য প্রদান করা ১০ জনের মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ষোড়শ সংশোধনী রাখার পক্ষে মত দেন। বাকিরা এই সংশোধনী বাতিলের পক্ষে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেন। সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মত দেয়া ৯ আইনজীবী হলেন- ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বিচারপতি টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, এম আই ফারুকী এবং এ জে মোহাম্মদ আলী।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়; যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল।

সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে- এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।

ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে রায় দেন আদালত।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test