E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিয়ানমার সংকটে জাতিসংঘের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়া

২০২২ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৫:৩৩:১১
মিয়ানমার সংকটে জাতিসংঘের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিরাপত্তা পরিষদ উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কারও কারও মতে, নিরাপত্তা পরিষদ [মিয়ানমারের] বিষয়টিতে হাত ধুয়ে ফেলেছে এবং সেটি যেন আসিয়ানের (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট) হাতে তুলে দিয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘নতুন গৃহযুদ্ধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যাতে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

ইসমাইল সাবরি আরও বলেছেন, আসিয়ানের ‘পাঁচ-দফা ঐকমত্য’ প্রস্তাবকে নতুন করে প্রাণ দেওয়া দরকার। ওই প্রস্তাবনায় অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, একজন বিশেষ দূত নিয়োগ এবং সব অংশীদারদের নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

আসিয়ানের অন্যতম সদস্য মালয়েশিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসিয়ানের ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ প্রস্তাব বাস্তবায়নে কোনো অর্থপূর্ণ অগ্রগতি না থাকায়, বিশেষ করে মিয়ানমারের জান্তার দিক থেকে হতাশ মালয়েশিয়া। বর্তমান রূপ নিয়ে আসিয়ানের ‘পাঁচ দফা ঐকমত্য’ আর চলতে পারবে না।

মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ মালয়েশিয়া। তারা শুরু থেকেই মিয়ানমার জান্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে নির্বাচিত রাজনীতিবিদদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যের সরকারের (এনইউজি) সঙ্গে আলোচনায় বসতে আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।

ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরও ক্ষমতা ছাড়ার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণার জন্য মিয়ানমারের জেনারেলদের চাপ দিচ্ছে।

jagonews24২০১৮ সালে রাখাইনের মংডু জেলার ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ জোনে সমবেত রোহিঙ্গারা। ছবি সংগৃহীত

এদিন রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৫১ সালের ‘কনভেনশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব রিফিউজি’ এবং ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী নাহলেও কেবল মানবিক কারণে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণ করেছে মালয়েশিয়া।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বর্বর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। এর আগেও এসেছিল কয়েক লাখ। সবমিলিয়ে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে।

মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হয়। সেখানে তারা নাগরিকত্ব, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার মতো অনেক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

প্রতি বছর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা দেশে পাড়ি জমায় রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের বহু মানুষ। এ ধরনের অভিবাসনপ্রত্যাশী বা শরণার্থীদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য মালয়েশিয়া।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test