E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মাদরাসাবিরোধী আইন বাতিল করলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

২০২৪ নভেম্বর ০৫ ১৮:২১:৪৫
মাদরাসাবিরোধী আইন বাতিল করলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে উত্তরপ্রদেশে মাদরাসা চালানোয় আর কোনো সমস্যা থাকলো না।

২০০৪ সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন সমাজবাদী পার্টির সরকার একটি আইন তৈরি করেছিল। যে আইন উত্তরপ্রদেশ বোর্ড অফ মাদরাসা এডুকেশন আইন নামে পরিচিত। এই বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রাজ্যের সমস্ত মাদরাসা চালানো হবে, এমনই স্থির হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, মাদরাসা শিক্ষার পাঠ্যক্রমের সঙ্গে জেনারেল বোর্ডের পাঠ্যক্রমের সমন্বয় তৈরি করাও ছিল এই বোর্ডের অন্যতম কাজ।

উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে বিজেপির সরকার তৈরি হওয়ার পর এই আইনটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা হয়। এবং হাইকোর্ট জানায় আইনটি সাংবিধানিক নয়। সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের পরিপন্থী এই আইন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে সমস্যায় পড়ে উত্তরপ্রদেশের প্রায় ১৬ হাজার মাদরাসা। আদৌ এই মাদ্রাসাগুলি বৈধ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বেশ কিছু মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

মাদরাসা ইউনিয়নের বক্তব্য, এর ফলে প্রায় ১৭ লাখ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ সংশয়ের মুখে পড়ে। হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তিনটি মাদরাসার সঙ্গে যুক্ত সংগঠন।

তাদের মূল বক্তব্য ছিল, হাইকোর্ট ২০০৪ সালের আইনের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে হাইকোর্টে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়। প্রধান বিচারপতির পাশাপাশি ওই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।

রায় ঘোষণার সময় বিচারপতিরা জানান, হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা আইন ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের পরিপন্থী। কিন্তু বাস্তবে তা ঠিক নয়। শিক্ষার অধিকার সকলের আছে। এবং মাদরাসা বোর্ড সাধারণ বা জেনারেল শিক্ষার সঙ্গে মাদরাসা শিক্ষার সমন্বয় তৈরি করেছে। ফলে এই আইনকে কখনোই অসাংবিধানিক বলা যায় না।

মাদরাসা বোর্ডে পড়াশোনা করার পরে ছাত্রছাত্রীদের সার্টিফিকেট দেয়া হয়। সেই সার্টিফিকেট নিয়ে পরবর্তী স্তরে যে কোনো সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারেন ছাত্রছাত্রীরা। ফলে আইনটি কখনোই অসাংবিধানিক নয়। তবে একই সঙ্গে কওমি এবং খারিজি মাদরাসা নিয়ে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের মাদরাসা কতটা আইনসংগত তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

জামিয়াত ওলামায় ইসলামের মুখপাত্র ফজলুর রহমান বলেছেন, মাদরাসা নিয়ে একাধিক মামলা চলছে আদালতে। এদিন সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা কেবলমাত্র উত্তর প্রদেশ নিয়ে। এই রায়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।

ফজলুর জানিয়েছেন, একাধিক বিজেপি রাজ্যে মাদরাসা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ এবং আসামে একাধিক মাদরাসা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার রাজ্য সরকার। বহু মাদরাসাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। আদালতে তা নিয়েও মামলা চলছে। সেই মামলায় এদিনের রায় প্রভাব ফেলবে বলেই তিনি মনে করেন।

সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। কংগ্রেসও এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপির তরফে বলা হয়েছে, তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানাবে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test