E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প

২০২৪ ডিসেম্বর ০৯ ১৮:০২:৫১
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই ২০২১ সালে ক্যাপিটল দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমার দিকে তিনি নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন।

এনবিসি-র মিট দ্য প্রেস-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, এই মানুষগুলো নরকযন্ত্রণা ভোগ করছে। গত নভেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের পর এই প্রথম কোনো সম্প্রচার নেটওয়ার্কে ইন্টারভিউ দিলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কারও জন্য স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে সেটিও বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শিশু অবস্থায় নিয়ে আসা নথিপত্রবিহীন কিছু অভিবাসীকে সহায়তায় ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

গত শুক্রবার রেকর্ড করা এই ইন্টারভিউতে ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন শুরুর পর অভিবাসন, জ্বালানি এবং অর্থনীতিসহ ‘অনেকগুলো’ নির্বাহী আদেশ জারি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এ ছাড়া ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও উঠে এসেছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদান কমানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন ট্রাম্প।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল।

একপর্যায়ে ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। হামলাকারীদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে তাণ্ডব চালায় তারা। শুধু তাই নয়, তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতার কার্যালয়ও তছনছ করে তারা। হামলা-সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন পাঁচজন।

এনবিসি-র মিট দ্য প্রেস-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি সেই দাঙ্গায় জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত কয়েক শ’ লোককে ক্ষমা করতে চাইবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, আমরা মামলাগুলো দেখব। হ্যাঁ, কিন্তু আমি খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। (আর সেটা) প্রথম দিনেই।

অভিবাসন প্রসঙ্গে ট্রাম্প এনবিসিকে বলেন, তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তথাকথিত জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান বাতিল করার পরিকল্পনা করছেন। এই নীতির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যে কেউ তার বাবা-মা অন্য দেশে জন্মগ্রহণ করলেও মার্কিন পাসপোর্ট তথা নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন।

জন্মগত নাগরিকত্বের বিধানটির মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সব ব্যক্তিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তবে ট্রাম্প বলছেন, এই নিয়ম বদলাতে হবে।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, নথিবিহীন অভিবাসী পরিবারের সদস্যরা মার্কিন নাগরিক হলেও তাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন তিনি। এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আমি পরিবারগুলোকে আলাদা করতে চাই না। কাজেই পরিবার না ভাঙার একমাত্র উপায় হলো তাদের সবাইকে একসঙ্গে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া।

উল্লেখ্য, মার্কিন নাগরিকত্ব-গ্রিনকার্ড অর্জনের একটি সহজ এবং জনপ্রিয় পথ হচ্ছে মার্কিন ভূখণ্ডে সন্তান জন্মদান। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয় এবং ওই শিশুর বয়স ১৮ পার হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে বড় করা এবং দেখাশোনা করার জন্য তার বাবা-মাকে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। আর একবার বৈধ বসবাসের অনুমতি পেলে নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির পথও অনেক সহজ হয়। ফলে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বৈধ নথিবিহীন অভিবাসীদের জন্য বড় ধাক্কা।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৯, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test