E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফলাফল ঘোষণার আগেই হিলারিকে সমর্থন দিলেন বার্নি স্যান্ডার্স

২০১৬ জুলাই ৩০ ১২:১৮:৫৪
ফলাফল ঘোষণার আগেই হিলারিকে সমর্থন দিলেন বার্নি স্যান্ডার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফলাফল ঘোষণার আগ মুহূর্তে নিজের পরাজয় মেনে নিয়ে হিলারি ক্লিন্টনকে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সর্বাত্মক সমর্থন ব্যক্ত করলেন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। আর এভাবেই ‘আমরা শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধভাবে’ স্লোগানে উজ্জীবিত ডেমক্র্যাটিক পার্টির বিভক্তি সকল আশংকা ধুলিসাত হয়ে গেল। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রেসিডেন্ট পদে মহিলাকে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি হলো।

নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে হিলারির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম।

পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া সিটির ওয়েলস ফারগো সেন্টারের বিশাল মিলনায়তনে দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় ২৬ জুলাই মঙ্গলবার আবারো ভোট গ্রহণ করা হয়। এর আগে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে হিলারি জয়ী হলেও নানা অভিযোগ উত্থাপন করা হয় বার্নি স্যান্ডার্সের পক্ষ থেকে। ডেমক্র্যাটিক পার্টির এ সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে বক্তৃতার সময় ডেলিগেটদের ভোট আবারো গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স।

৫১ রাজ্য এবং ৬টি অঞ্চল ও বহির্বিশ্বের ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডেলিগেটরা এ ভোটে অংশ নেন। পৃথক পৃথকভাবে প্রকাশ্যে ফলাফল সংগ্রহ করা হয় মুলমঞ্চ থেকে। বিপুল করতালিতে মুখরিত মিলনায়তনের সকলেই ফলাফল লিপিবদ্ধ করছিলেন। ৭০% অঙ্গরাজ্য এবং অঞ্চলের ফলাফল থেকেই হিলারির বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকার আভাস মেলে। এতদসত্বেও অপেক্ষায় ছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স। সর্বশেষ রাজ্য ছিল ভারমন্ট এবং সেই রাজ্যেরই সিনেটর হলেন স্যান্ডার্স। রাজ্য ডেমক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান ডেলিগেটদের ফলাফল ঘোষণার পরই মাইক দেন বার্নি স্যান্ডার্সের হাতে। সে সময় ১৯৫০০ আসনের মিলনায়তন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ এবং সকলের উল্লাসে যেন নেচে উঠে সেন্টারটি। বার্নির সমর্থকরা উল্লাসের মধ্যেই জেনে গেলেন বার্নি স্যান্ডার্সের হিলারির প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা। মঞ্চ থেকে ফলাফল ঘোষণার আর প্রয়োজন না হলেও বার্নি স্যান্ডার্স পেয়েছিলেন ১৭৮৮ ভোট। অপরদিকে, হিলারি ক্লিন্টন পান ২৮৫৮ ভোট। জয়ী হতে প্রয়োজন ছিল ২৩৮২ ভোটের।

নির্বাচন পর্যন্ত বার্নি তার সমর্থকদের হিলারির পক্ষে সোচ্চার থাকার আহবান জানান। বার্নির এ আহবানে অনেকেই সন্তুষ্ট হননি। যার প্রমাণ দৃশ্যমান হয় খুব দ্রুত মিলনায়তনের ৩৫% আসন শুন্য হয়ে যাওয়ায়। তবে ঘন্টা দুয়েক পর আবারো পূর্ণ হয়ে যায় সমস্ত মিলনায়তন। রাত সাড়ে ১০টায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন মঞ্চে উঠামাত্র ভিন্ন এক আমেজ তৈরী হয় সম্মেলনে। ক্লিন্টন তার বক্তব্যে সকলকে মুগ্ধ করেন। বিশেষ করে হিলারির সাথে তার সম্পর্ক তৈরী, এরপর বিয়ে এবং দীর্ঘ ৪৫ বছর যাবত একত্রে বসবাসের ঐতিহাসিক কিছু ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন ক্লিন্টন। এক পর্যায়ে বিল ক্লিন্টন উল্লেখ করেন যে, হিলারি কখনো আমাকে ছেড়ে যাননি, যাবেনও না। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, হিলারি যে কাজটি করতে চান, তা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত লেগেই থাকেন। তেমনই একই সংকল্প হচ্ছে নিরাপদ আমেরিকা রচনায় প্রেসিডেন্ট হওয়া। হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে খেটে খাওয়া আমেরিকানদের ভাগ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট নানা পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানেরও উপস্থাপন করবেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি। এর আগের দিন সন্ধ্যায় বক্তব্য দেবেন প্র্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। উল্লেখ্য, সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন বক্তব্য রেখেছেন ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা।

এটি হচ্ছে ডেমক্র্যাটিক পার্টির ৪৭তম জাতীয় সম্মেলন এবং নির্বাচন হবে ৪৫তম প্রেসিডেন্ট পদে। ২০০৮ সালের মত এবারের নির্বাচনকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে ঐতিহাসিক হিসেবে মনে করছেন মার্কিনীরা। ঐ নির্বাচনে জয়ী হন প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান বারাক ওবামা। আর এবার লড়ছেন একজন নারী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে থেকে এই প্রথম একজন নারী মনোনয়ন পেলেন।

ডেমক্র্যাটিক পার্টির এ সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহের জন্যে ১৫ হাজার সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিক এসেছেন।





(ওএস/এস/জুলাই ৩০,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test