E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরার জীবন্ত পঞ্জিকা শ্যামলী নন্দী

২০১৪ জুলাই ০২ ১২:৩৩:২১
সাতক্ষীরার জীবন্ত পঞ্জিকা শ্যামলী নন্দী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা স.ম আলাউদ্দিন কবে মারা যান? ১৯৯৬ সালের ১৯জুন রাত ১০টা ৪০ মিনিটে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি মারা যান কবে ? ১৯৮৪ সালের ৩১অক্টোবর।

সাতক্ষীরার তুখোড় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংসদ সৈয়দ কামাল বখত ছাকি মারা যান কবে? ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বৃহষ্পতিবার। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান মারা যান কবে? ১৯৮১ সালের ৩০ মে শনিবার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী মারা যান কবে ? ১৯৮৮ সালের ১৫ অক্টোবর সোমবার। কৃষক নেতা সাইফুল্লাহ মারা যান কবে? ২০০৯ সালের ৪ ডিসেম্বর।

শেখ হাসিনার জনসভায় কবে গ্রেণেড হামলা চালানো হয়েছিল ? ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট।, সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি হয় কবে? ২০০৬ সালের ২৫ অক্টোবর সোমবার।

বুধবার সকালে সাতক্ষীরা জজ কোর্টে দেখা মিললে এভাবেই একের পর এক উত্তর দিয়ে যান জীবনপঞ্জিকা শ্যামলী নন্দী। এ ছাড়া ১৯৬০ সাল থেকে ২০০০ সাল বা ২০০০ সাল থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে কোন মাসের নির্দিষ্ট তারিখ কি বার তা নিমিষেই বলে দিতে পারেন শ্যামলী নন্দী। একযোগে দেশের ৬৩টি জেলায় জেএমবি’র গ্রেণেড হামলা চালানোর তারিখ, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা পরবর্তী কে কোন সময় দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, দেশের প্রথম আইজিপি কে ছিলেন, এ পর্যন্ত আইজিপির দায়িত্ব পালনকারিদের নাম, কোন সালে কত তারিখে কোন পুলিশ সুপার সাতক্ষীরায় যোগদান করেছিলেন তা প্রশ্নের আগেই উত্তর দিতে পারেন শ্যামলী নন্দী।

এ ছাড়া চারদলীয় জোট সরকারের আমলে খুলনার আহসানউল্লাহ মাষ্টার, সাংবাদিক মানিক সাহা, দৈনিক জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বালু, চট্টগ্রামের অধ্যক্ষ গোপাল মুহুরী ছাড়াও ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত শিবিরের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা এবিএম মামুন হোসেন থেকে মানবাধিকার কর্মী মোসলেম আলী কবে, কে ও কোথায় মারা যান তা অনর্গল বলতে পারেন শ্যামলী । এ ছাড়া তিনি যে কোন গাছের পাতা দিয়ে বাঁশি বানিয়ে এম্বুলেন্সের হর্ণ বাজাতে পারেন।

কে এই শ্যামলী নন্দী : শ্যামলী নন্দীর বয়স ৩৭। বাবার নাম মৃত দীলিপ নন্দী। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সাঁইহাটি গ্রামে তার জন্ম। অভাবের তাড়নায় প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেননি তিনি। ২০০৩ সালের ২২ জুন তিনি জীবনে প্রথম চম্পাফুল ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য হিসেবে শপথ নেন। নয় বছর যাবৎ তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক তার ভাতা বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে বর্তমানে তিনি হাইকোর্টে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা জজ কোর্ট চত্বরে কসমেটিকস সামগ্রী ফেরি করে বিক্রি করেন। পছন্দের পাত্র জোটেনি তাই বিয়ে করেননি। সততার সঙ্গে কাজ করতে যেয়ে তিনি কয়েকবার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। মামলা করায় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। জীবন জীবিকার তাগিদে আদালত চত্বরে কাজ করতে যেয়ে তিনি কয়েকবার হামলার শিকার হয়েছেন। এরপরও দুর্বার গতিতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন এ জীবন্ত পঞ্জিকা।

(আরকে/জেএ/জুলাই ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test