E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত ৭ জন : তদন্ত কমিটি

২০২২ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৮:৩১:০৩
এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত ৭ জন : তদন্ত কমিটি

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুর বোর্ডর অধীনে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ৭জন জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন গ্রেফতার হলেও একজন এখনো পলাতক রয়েছে। এমনি তথ্য উঠে এসেছে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে তদন্ত কমিটির সদস্যরা লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

তিনি আরও জানান, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। আগামী সপ্তাহের রোববার অথবা সোমবার লিখিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন তারা। এখন কমিটি যা পেয়েছে তাতে করে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মূল হোতা হিসেবে মোট ৭ জন জড়িত। তাদের মধ্যে ৬ জনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। বাকী একজন বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গেছে বলে জানা গেছে।

প্রফেসর কামরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত তাদেরকে বের করতে গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিতে হবে। ইতিমধ্যেই সেখানকার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানানো হবে।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় কোনভাবেই ট্যাগ কর্মকর্তা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। তাকে মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তদন্ত কার্যক্রমে যারা জড়িত তারা হলেন- কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জোবাইর রহমান, কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুল ইসলাম, বাংলা শিক্ষক সোহের চৌধুরী, অফিস সহকারী আবু হানিফ ও পিয়ন সুজন মিয়া। এই ঘটনার পর ওই বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবু হানিফ পলাতক রয়েছেন।

গত ২০ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি ১ম পত্র ও ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে। এরপর ওই কেন্দ্রের সচিব লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার আলমারি থেকে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পেরে প্রতিবেদন দিলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে যান কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ট্যাগ অফিসার ও কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, কৃষি বিজ্ঞান ও রসায়ন পরীক্ষা স্থগিত করেন। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর স্থগিত হওয়া ৪টি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। একই সাথে জীব বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) ও উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) এর প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়। ওই দিনই এই ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ফারাজ উদ্দিন তালুকদারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর হারুন অর রশীদ মন্ডল এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক আখতারুজ্জামান। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানিকভাগে তা আগামী রবিবার বা সোমবার দেয়া হবে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test