E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হরতাল-অবরোধেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হবে

২০১৫ মার্চ ০২ ১৪:০৯:৩৬
হরতাল-অবরোধেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হবে

স্টাফ রিপোর্টার : হরতাল-অবরোধেও সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনে শুক্র ও শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনেও ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে একমত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কেউ কেউ রাস্তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা ও সঠিক সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্যে রবিবার ইউজিসি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করে ওই নির্দেশনার কথা জানায়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রম চালাবেন। সেশনজট দূর করবেন।’ হরতাল-অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার আহ্বান জানিয়ে আজাদ চৌধুরী বলেন, যদি পেট্রোলবোমা মেরে, বোমা মেরে শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংস করা যায়। তাহলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান, সিরিয়া বা ইরাকের মতো হবে। দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের প্রতি সভার শুরুতে শোক প্রকাশ করা হয় এবং ওই ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।
ইউজিসিতে আয়োজিত এ সভায় দেশের ১২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৮২ জন উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ২৯ জন পাবলিক ও ৫৩ জন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের। বক্তব্য দেন ১৬ জন উপাচার্য।
অন্তত ১০ জন উপাচার্য বলেন, ঝুঁকি থাকলেও তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকমতো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এখন শুক্র ও শনিবারও ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
হরতাল-অবরোধেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘সব সময় আলোর সঙ্গে অন্ধকারের দ্বন্দ্ব থাকবেই। এটা নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তবে এ অবস্থায় একটু ঝুঁকি তো থেকেই যায়।’
ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস কামাই দেওয়া হয় না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় গাড়ি চালাতেও কোনো সমস্যা হয় না।
তবে সভায় চারজন উপাচার্য বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখলেও হরতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চালানো যায় না। এ জন্য হরতালের দিন ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয় না। এদের কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শুক্র ও শনিবার ক্লাস নিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন না চলায় প্রথম বর্ষের ক্লাসের সমস্যা হচ্ছে বলে জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। তিনি বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে থাকার ব্যবস্থা করা যায় না। এর ওপরের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ সময় তিনি গাড়ি রাখার স্থানে পেট্রলবোমা হামলা হওয়ার কথা জানান।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুস সাত্তার বলেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিস সাত দিনই খোলা রাখছেন। কিন্তু শুক্র ও শনিবার ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। রাস্তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই উপাচার্য বলেন, ‘আমার জীবন নিয়ে যতটা ঝুঁকি নিতে পারি, ছাত্রদের জন্য ততটা পারি না।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে সেশনজট নিয়ে উদ্বিগ্ন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাস সেশনজট ছিল। সেটা দূর করা হয়েছে। কিন্তু এই দুই মাসে আরও পেছনে চলে যাচ্ছি। শিক্ষকেরা ক্লাস নিতে চান, কিন্তু রাস্তাঘাটে যদি ককটেল মারা হয় এবং কেউ অগ্নিদগ্ধ হয়, তাহলে দায়-দায়িত্ব নেবে কে?’ এ সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শুক্র ও শনিবার ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য খালেদা একরাম বলেন, বুয়েটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী বাসে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা করেছেন, বাসে হেলপার একজনের জায়গায় দুজন দিয়েছেন। তাঁদের দুই ঘণ্টার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
টানা হরতাল-অবরোধে দুজন উপাচার্য আবারও সেশনজটের আশঙ্কা করছেন।
(ওএস/পিবি/মার্চ ০২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test