E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে চট্টগ্রামের শিশু

চসিকের ‘মসকিটন ও ডিটি’ ট্যাবলেট কতটা কার্যকর?

২০২৩ আগস্ট ০১ ১৮:১৩:১১
চসিকের ‘মসকিটন ও ডিটি’ ট্যাবলেট কতটা কার্যকর?

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের তালিকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। এমন অবস্থায় শিশুদের ব্যাপারে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু। যা শতাংশের হিসেবে প্রায় ৫৬ ভাগ। শুধুমাত্র চলতি বছরের জুলাই মাসেই মারা গেছে ৭ জন শিশু। শক সিনড্রোম ও হেমোরেজিক অবস্থা ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে জানান চিকিৎসকরা।

এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্রায় ২৬ শতাংশই শিশু। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৭৭৬ জন। এর মেধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ৭২১ জন। পেট ব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত, ডায়রিয়া ও শরীর ফুলাসহ নানা নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে শিশুরা হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান চিকিৎসকরা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় শিশুরা সহজেই ডেঙ্গুতে কাবু হচ্ছে বলে মনে করছেন বিআইটিআইডি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশিদ।

তিনি বলেন, শিশুরা সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু জ্বরের ঝুঁকিতে রয়েছে। উপসর্গ হিসেবে শিশুদের প্রচণ্ড জ্বর হচ্ছে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এছাড়া মশা সম্পর্কে না জানায় মৃত্যু ও আক্রান্ত বেশি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জ্বর হলেই প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পানি জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকবেন। এসময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। সেজন্যে মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পড়ানো, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সাধারণ জনগণের সচেতন হতে হবে।

যদিও মশা ও লার্ভা ধ্বংসে ওষুধ ও তেল ছিটানো, ধোঁয়া ছড়ানো, ড্রোন দিয়ে ছাদ পর্যবেক্ষণের পর এবার বদ্ধ পানিতে বিশেষ ধরনের ট্যাবলেট ছিটাবে চসিক। লার্ভা ধ্বংসে দুই ধরনের ট্যাবলেটের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে চসিকের। এর মধ্যে ১০ লিটার পানিতে ১টি ট্যাবলেট দিয়ে ৯০ দিন লার্ভা ধ্বংস করবে ‘মসকিটন’। আবার ২০০ লিটার পানিতে ১টি ট্যাবলেট দিয়ে ৬০ দিন লার্ভা ধ্বংস করবে ‘ডিটি’।

এর মধ্যে কোন ট্যাবলেট লার্ভা ধ্বংসে অধিকতর কার্যকর, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম, পরিবেশবান্ধব এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী তা নির্ধারণে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে চসিক। একই সঙ্গে দেশের মশা বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার পরামর্শও নেওয়া হবে। চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি এক প্রশ্নের উত্তরে এসব তথ্য জানান।

(জেজে/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test