E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

ঈশ্বরগঞ্জের ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত 

২০২৫ জুলাই ০৪ ১৭:৫৫:০৫
ঈশ্বরগঞ্জের ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত 

নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ৫ লক্ষ মানুষের গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করার জন্য ১১টি ইউনিয়নে ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে ৪৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এসব ক্লিনিকগুলোর মাঝে ৩১টি ক্লিনিকের ভৌত অবকাঠামো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এমনও কয়েকটি ক্লিনিক রয়েছে যেগুলোর ছাঁদের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। এসব ক্লিনিকের সেবা প্রদানকারী সিএইচসিপিদের সবসময় দুর্ঘটনার শংঙ্কায় থাকতে হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (ভারপ্রাপ্ত) পরিসংখ্যানবিদ রাজেশ চক্রবর্তী জানান, মাঠ পর্যায়ে ৪৪টি ক্লিনিকের উপর জরিপ চালিয়ে ৩১টি ক্লিনিককে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। তন্মধ্যে ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে।

অতি ঝুঁকিপূর্ণ বড়হিত ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শফিকুল ইসলাম জানান, তার ক্লিনিকের ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। ছাঁদের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। ছাদের পানি ও পলেস্তরার বালু সুরকি পড়া রোধে মাথার উপর পলিথিন টানিয়ে দিয়েছেন। আসবাবপত্র দরজা জানালা ভাঙ্গা।

উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহফুজুল আহসান, রাজীবপুর ইউনিয়নের বৃ-দেবস্থানের কামরুন্নাহার, তারুন্দিয়া ইউনিয়নের চরজিতরের মিজানুর রহমান ও ঈশ্বরগঞ্জ ইউনিয়নের দড়িপাঁচাশি ক্লিনিকের সাইফুল ইসলাম জানান, তাদের ক্লিনিকগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে ক্লিনিকের ভিতরে অঝরে পানি পড়ে। চারপাশের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ক্লিনিকগুলোতে নেই বিদ্যুৎ ও পানীয়জলের ব্যবস্থা। ক্লিনিকে আগত রোগীরা টয়লেট ব্যবহার করতে না পারায় তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ছাদ চুয়ে পানি পড়ার কারণে ওষুধের কিট, মূল্যবান রেজিষ্ট্রার, আসবাবপত্রগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব ক্লিনিক থেকে গ্রামের দুস্থ্য অসহায় রোগীরা প্রায় ২২ থেকে ২৭ প্রকার ওষুধ সেবা পেয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের নিরাপদ মাতৃত্ব সেবাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়।

বালিহাটার সিএইচসিপি জানান, তার ক্লিনিকে পাঁচজন গর্ভবতী মায়ের নিরাপদ ডেলিভারী করানো হয়েছে। বর্তমানে ক্লিনিকে যে দুরাবস্থা বিরাজ করছে তা প্রসূতি মা ও নবজাতকের জন্য খুই ঝুঁকিপূর্ণ।

বড়হিত ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্লিনিকের সামনে হাটু পানি জমে আছে। ক্লিনিকের ভেতরে পানি প্রবেশ করে থৈ থৈ করছে। ওই ক্লিনিকের সিএইচসিপি আহসানুল হক দিদার জানান, ক্লিনিকের সামনে ও ভিতরে পানি থাকায় রোগীরা ক্লিনিকে প্রবেশ করতে পারে না। এই প্রতিকূল পরিবেশে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

রাজেন্দ্রপুর ক্লিনিকে সরেজমিনে গেলে সেবা নিতে আসা কেশবপুর গ্রামের উসমান আলী (৭০) ও মধ্যপালা গ্রামের মদিনা খাতুন (৩০) বলেন, ক্লিনিক থেকে আমরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে থাকি কিন্তু পানীয়জল এবং টয়লেট ব্যবহারের কোন সুবিধা নেই ফলে আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা সাদিয়া তাসনিম মুনমুন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সিসিগুলো পুণঃনির্মাণ করার জন্য লাইন ডিরেক্টর সিবিএইচসি বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চারটি সিসি পুণঃনির্মাণ করা হয়েছে। বাকীগুলো পর্যায়ক্রমে পুণঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।

(এন/এসপি/জুলাই ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test