E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়

২০২০ সেপ্টেম্বর ১৪ ০০:০৬:৫৯
মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী কায়েসপুরের পাকসেনা অবস্থানের ওপর রকেট লাঞ্চারের সাহায্যে আক্রমণ চালায়। এতে পাকসেনাদের দু‘টি বাঙ্কার ধ্বংস হয় এবং ৮ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৩ জন আহত হয়।

মুক্তিবাহিনী কোম্পানীগঞ্জ থানার বসুরহাটের কাছে পাক মিলিশিয়াদের এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে পাক মিলিশিয়াদের একটি টয়োটা জীপ ধ্বংস হয় এবং ৩০ জন পাকসৈন্য হতাহত হয়। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধা নুরুন্নবী আহত হন।

মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়। এতে পাকসেনাদের কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের দিকে পাল্টা আক্রমণ করে। দু‘ঘন্টা স্থায়ী এই যুৃদ্ধে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়।

পাক বাহিনীর প্রায় দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য একই সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, জকীগঞ্জ থানা অবস্থানে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানিদের সম্ভাব্য আক্রমণের জন্য প্রস্তুত না থাকায় তাঁরা বেশ কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর ৭ জন বীর যোদ্ধা শহীদ ও কয়েকজন আহত হন।

খুলনার আলফাপুর এলাকায় মুক্তিবাহিনী এক দু:সাহসিক অভিযানে পাকসেনাদের ২৭ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে ১৬ টি রাইফেল ও ৭টি চাইনিজ গোলার বাক্স উদ্ধার করে।

মুক্তিবাহিনী কুমিল্লার কসবা এলাকায় পাকসেনাদেরকে অতর্কিতে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ২ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিবাহিনী রাজশাহীর পাগলাদিয়ানাহাটে পাকসেনা অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৮ জন সৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিবাহিনীর ৩০০ সদস্যের একটি দল রাজশাহীর খানজানপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে শত্রুবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।

১নং সেক্টরের মুক্তিবাহিনীর সেনা অফিসারদের সাথে ভারতীয় সেনা কমান্ডার লেঃ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের কর্মতৎপরতার বিষয়টি সবিস্তারে আলোচিত হয়।

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ডাঃ আবদুল মোতালেব মালিক বেতার ভাষণে বলেন : ‘জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ শুরু করার উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট আমাকে এই প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। আমি আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি এই জন্য যাতে প্রদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়। আজকের যুবক শ্রেনীতো জানে না যে, নতুন এক জাতির বাসভ’মি আমাদের এই পাকিস্তানকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য আমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়েছে। পরিশেষে আমি আরো বলতে চাই যে, আমার সরকার একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। যে মুহুর্তে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে এবং নির্ধারিত কার্যক্রম অনুসারে উপনির্বাচন সমাপ্ত করা হবে, সেই মুহুর্তে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হবে।’

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পাক-ভারত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যে তেহরানের উদ্দেশে যাত্রা করেন। বিমানবন্দরে তাকে অভিনন্দন জানান ইরানের শাহ রেজা পাহ্লভি।

তথসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test