রণাঙ্গনের কথা
দেবেশ সান্যাল
বাঙালি জাতির গৌরবময় অর্জনগুলির মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। এজন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান ও ধন্য মনে করি। আর দু’বছর পর জন্ম হলে আমার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করার সৌভাগ্য হতো না। আমি মুক্তিযোদ্ধা দেবেশ চন্দ্র সান্যাল, পিতা- দ্বিজেন্দ্র নাথ সান্যাল, মাতা, নীলিমা রাণী সান্যাল। আমার জন্ম ১৯৫৪ সালের ২৬ নভেম্বর। গ্রাম ও ডাকঘর- রতন কান্দি, ইউনিয়ন পরিষদ- হাবিবুল্লাহ নগর, উপজেলা- শাহজাদপুর, জেলা- সিরাজগঞ্জ।
আমি ভারতীয় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আমার এফ এফ নং-৪৭৪২। গেজেট নং-১৬৭৯। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে জীবনপণ মহানমুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ২৩ জুলাই’৭১ শাহজাদপুর প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট জনাব মোঃ আব্দুর রহমান সাহেবের সাথে ভারতে গিয়েছিলাম। বিভিন্ন প্রাথমিক মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শেষে শিলিগুড়ি জেলার পানিঘাটা নামক ট্রেনিং সেন্টারে হায়ার ট্রেনিং হয়। ট্রেনিং শেষে আমাদের ৭ নম্বর সেক্টরের হেড কোয়াটার রেশনিং মানিও পকেট এ্যালাউন্সের টাকা দেওয়া হয়। তরঙ্গপুর নিয়ে আসা হয়। তরঙ্গপুর থেকে আমাদের নামে নামে অস্ত্র ইস্যু করা হয়। রেশনিং মানিও পকেট এ্যালাউন্সের টাকা দেওয়া হয়। তরঙ্গপুর বাজার থেকে আমি একটি শ্রীশ্রী চন্ডি গ্রন্থ,একটি পতাকা ও ৪ ব্যান্ডের রেডিও ক্রয় করে ছিলাম। একই এলাকার রাস্তাঘাট চেনা ১০ জন এফএফ এর সমন্বয়ে একটি গ্রুপ করা হয়। তখন আমাদের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন লেঃ কর্ণেল কাজী নুরুজ্জামান।
আমাদের লাল গোলা সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। আমাদের গ্রুপ কমান্ডার নিযুক্ত হন বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের এম.এ মান্নান। ডেপুটি কমান্ডার নিযুক্ত হন শাহজাদপুর উপজেলার জামিরতা গ্রামের বাবু রবীন্দ্র নাথ বাগ্চী। আমরা অস্ত্র ও গোলা বারুদ নিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর’৭১ দেশের অভ্যন্তরে আসি। দেশের অভ্যন্তরে এসে গ্রামে গ্রামে থাকতে থাকলাম। স্বাধীনতা বিরোধী দের বুঝাতে থাকলাম রাতে পাকি হানাদার/রাজাকার ক্যাম্পের কাছে গিয়ে দু একটা ফায়ার করে হানাদারদের আতঙ্কিত করতাম। আমারা পালাক্রমে আমাদের অবস্থান পাহারা দিতাম। প্রতিরাতে কমান্ডার স্যার আমাদের কে পাসওয়ার্ড দিতেন। প্রতিদিন সকালে আমরা অস্ত্রে ফুল থ্রু মারতাম এবং পরিষ্কার করতাম। আমরা একই শেলটারে এক রাতের বেশি অবস্থান করতাম না। তখন দেশের অধিকাংশ মানুষ ছিল আওয়ামী লীগের পক্ষে। জনগণ অনেক কষ্ট করে ও ঝুঁকি নিয়ে আমাদের আশ্রয় ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। দেশের অভ্যন্তরে এসে আমরা পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর ও আল শামসদের বিরুদ্ধে ৪টি গেরিলা/সম্মুখ যুদ্ধ ও এ্যাম্বুস করেছি। যুদ্ধ ও এ্যাম্বুস গুলো হলো-
বেলকুচি থানা আক্রমণ যুদ্ধ: বেলকুচি সিরাজগঞ্জ জেলার একটি উল্লেখযোগ্য থানা। এই থানা আক্রমণ যুদ্ধে নেতৃত্বে ছিলেন গ্রুপ কমান্ডার জনাব এম.এ মান্নান স্যার। ৩ নভেম্বর’৭১ কমান্ডার স্যারের ও আরো ৩জনের রেকিতে একযোগে বেলকুচি থানা ও মুসলিমলীগ নেতা মোঃ আব্দুল মতিনের বাড়ি আক্রমন করলাম। সন্ধ্যায় বানিয়া গাতি শেল্টারে কমান্ডার স্যার বিস্তারিত ব্রিফ করলেন। আমাদের দুই গ্রুপে ভাগ করে দিলেন। সিদ্ধান্ত হলো কমান্ডার স্যারের নেতৃত্বে বড় গ্রুপটি থানা আক্রমন করবে। অন্য গ্রুপটি রবীন্দ্র নাথ বাগ্চীর নেতৃত্বে মতিন সাহেবের বাড়ি আক্রমন করে মতিন সাহেবকে ধরে আনবে। আমি কমান্ডার স্যারের গ্রুপে থেকে থানা আক্রমন যুদ্ধে অংশ নিলাম। রাত ৯ টায় বানিয়া গাতি থেকে যাত্রা করলাম। থানার কাছে গিয়ে দু গ্রুপ টার্গের উদ্দেশ্যে ভাগ হলাম। রাত ১২টায় একযোগে আক্রমনের সিদ্ধান্ত। পরিকল্পনা মোতাবেক থানার পশ্চিম পাশ দিয়ে স্ক্রোলিং করে থানার সামনে যেতেই সেন্ট্রি দেখে ফেললো। হুইসেল বাঁজিয়ে থানার সবাইকে জানিয়ে দিয়ে আমাদের কে লক্ষ্য করে গুলি করলো। আমাদের কমান্ডার স্যার কমান্ড করে ফায়ার ওপেন করলেন। আমরা সবাই একযোগে গুলি করলাম। এক ঘণ্টা ব্যাপি যুদ্ধ চললো। থানার বিহারী পুলিশ ও রাজাকার থানার পিছনদিক দিয়ে পালিয়ে সোহাগপুর নদীতে থাকা একটি লঞ্চে চড়ে যমুনার মধ্যে গেল। থানার সেন্ট্রি গুলি করা বন্ধ করে দুই হাত উপরে তুলে আত্মসমর্পণ করলো।
আমরা থানার ভিতরে ঢুকে পড়লাম। থানার মধ্যে গিয়ে দেখি ৩জন পুলিশ ও ২ জন রাজাকার গুলিতে মারা গেছে। সেন্ট্রি সহ থানার দু’জন রাজাকারকে জ্যান্ত হাত বেঁধে ধরে নিয়ে এলাম। ভোর হয়ে গেল। মতিন সাহেবের বাড়ি আক্রমন করা দলটিও এলো। মতিন সাহেব পালিয়ে গেছে। তাকে ধরা সম্ভব হয় নাই। থানার আশেপাশে দোকান ও বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ালো। বিজয়ী হয়ে চলে এলাম। পরদিন সিরাজগঞ্জ থেকে শতাধিক পাকি হানাদার এসে থানার আশে পাশে আগুন দিয়েছিল এবং মানুষদের নির্যাতন করেছিল।
কালিয়া হরিপুর যুদ্ধ : কালিয়া হরিপুর স্টেশন সংলগ্ন ব্রীজ পাহাড়ারত রাজাকার ক্যাম্প এ্যাম্বুস। কালিয়া হরিপুর সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানার একটি রেলওয়ে স্টেশন। এই এ্যাম্বুসের নেতৃত্বে ছিলেন গ্রুপ কমান্ডার জনাব এম.এ মান্নান স্যার। ৯ নভেম্বর’৭১ আমাদের গ্রুপের ঝাঐল গ্রামের সিরাজগঞ্জের এম,এন, এ জনাব মোঃ মোতাহার হোসেন তালুকদারের ভায়রা আওয়ামীলীগ নেতা জনাব মোঃ আব্দুল হামিদ তালুকদারের রেকির ভিত্তিতে কালিয়া হরিপুর রেলওয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন ব্রীজ পাহাড়ারত রাজাকার ক্যাম্প অ্যাম্বুস করেছিলাম। কমান্ডার স্যার ক্রোলিং করে রেল লাইনে বৈদ্যুতিক মাইন বসিয়ে আসলেন। তথ্য ছিল ঈশ্বরদী থেকে পাকি হানাদার নিয়ে একটি ট্রেন সিরাজগঞ্জ যাবে। কমান্ডার স্যার ট্রেনটি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করলেন। আমরা ধানক্ষেতের মধ্যে পজিশন অবস্থায় থাকলাম। কামান্ডার স্যারের হাতে মাইনের তার ও ব্যাটারী। টর্চ লাইট ও হ্যারিকেন হাতে পাকি মিলি শিয়া ও রাজাকারেরা টহল দিচ্ছিল। ওদের পায়ে লেগে হঠাৎ আমাদের মাইনের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
মাইনটি ওদের নজরে পড়লো। হুইসেল দিয়ে রাজাকারদের লাইং পজিশনে রেডি থাকতে বললো। আমাদের দিকে টর্চ লাইট মেরে মেরে উর্দূতে বকাবকি করতে থাকলো। ইতিমধ্যে ঈশ্বরদী থেকে সিরাজগঞ্জ গামী পাকি হানাদার বাহী ট্রেন এলো। পাকি হানাদারেরা সিগন্যাল দিল। ষ্টেশনে ট্রেনটি থামিয়ে দিল। ট্রেনের পাকি হানাদারেরা অস্ত্র তাক করা অবস্থায় নেমে আমাদেরকে খুঁজতে থাকলো। আমাদের মাইনটি ব্রাষ্ট করা সম্ভব হলো না। পাকি হানাদারদের সংখ্যাধিক্যতায় ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে কমান্ডার স্যার উইথড্র হওয়ার কমান্ড করলেন। পরের দিন সিরাজগঞ্জ থেকে পাকি হানাদার ও রাজাকারেরা এসে কালিয়া হরিপুরের অনেক বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল এবং গ্রামের অনেককে ধরে নির্যাতন করেছিল। আমরা কালিয়া হরিপুর রেলওয়ে ব্রীজ সংলগ্ন রাজাকার ক্যাম্প এ্যাম্বুস থেকে ফিরে এসে তামাই গ্রামে কমান্ডার স্যারের বাড়িতে একত্রিত হই। কমান্ডার স্যারের মা আমাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। আমরা কমান্ডার স্যারের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করলাম। খাওয়া-দাওয়ার পর আমাদের সবাইকে বসিয়ে কমান্ডার স্যার ব্রিফ করলেন। স্থানীয় ভাবে ট্রেনিং দেওয়া বেশ কিছু যুবককে আমাদের গ্রুপে ভর্তি করা হয়েছিল। এত বড় প্লাটুন এক শেল্টারে শেল্টার নেওয়া সমস্যা। তাই ডেপুটি কমান্ডার রবীন্দ্রনাথ বাগ্চী কে কমান্ডার করে আর একটি গ্রুপ করে দিলেন।
কল্যাণপুর যুদ্ধ: কল্যাণপুর সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার একটি গ্রাম। এই যুদ্ধে নেতৃত্বে ছিলেন ডেপুটি কমান্ডার (কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত) বাবু রবীন্দ্র নাথ বাগ্চী। কমান্ডার স্যারের নির্দেশে আমরা ১১ জন রবীন্দ্র নাথ বাগ্চীর কমান্ডনাধীন হয়ে হেটে ভোরে বেলকুচি উপজেলার কল্যাণপুর নামক গ্রামে এক বাড়িতে আশ্রয় নিলাম। ১১ নভেম্বর ’৭১ বাড়ির মালিক আমাদের সকালের খাবারের ব্যবস্থা করলেন। আমরা সারারাত নিদ্রাহীন থেকেও হেটে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। সকালের খাবার খেয়ে প্রকাশ্যে পিটি, প্যারেড করলাম। অস্ত্র পরিষ্কার করলাম। অস্ত্রে ফুলতুরী মারলাম। একজন করে ডিউটি করতে থাকলাম। অন্যন্যরা ঘুম বা রেষ্টে থাকলাম। কল্যানপুর একটি নিভৃত গ্রাম। আমাদের ধারনা ছিল এই গ্রামে পাকি হানাদার ও রাজাকার আসবে না। বেলা ১০টার দিকে সেন্ট্রিরত সহযোদ্ধা রতনকুমার দাস দৌড়ে এসে জানালেন আমদের কে ধরার জন্য বেলকুচি থানা থেকে কয়েকজন পাকি হানাদার মিলে শিয়া ও রাজাকার আসছে। বওড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে কল্যানপুরের দিকে আসছে। দুইজন পাকিস্তানি দালাল গামছা দিয়ে মুখ বেধে নিয়ে হানাদার ও রাজাকারদের পথ চিনিয়ে নিয়ে আসছে। দূর থেকে অনুমান হলো এই দলে ৫জন মিলেশিয়া ও ৮জন রাজাকার আছে। আমাদের কমান্ডার যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আমরা কল্যানপুরে রাস্তার ধারে বাংকারের মত বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে পজিশন নিলাম। বাঁশ ঝাড়ের সামনে দিয়ে চলা রাস্তা ধরে ওরা আসছিল।
আমাদের রেঞ্জের মধ্যে আসার সাথে সাথে আমাদের কমান্ডার রবীন্দ্রনাথ বাগ্চী কমান্ড ও ফায়ার ওপেন করলেন। এক লাফে হানাদারেরা রাস্তার উত্তর পার্শ্বে পজিশন নিল। ওরাও আমাদের লক্ষ্য করে গুলি চালালো। আমরাও একযোগে বৃষ্টির মতো গুলি ছাড়তে থাকলাম। গোলাগুলির শব্দ পেয়ে আশে পাশে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ আমাদেরকে সহযোগীতা করার জন্য এগিয়ে এলেন। এক ঘণ্টার অধিক সময় সম্মুখ যুদ্ধ চললো। তারপর পাকি হানাদারেরা লাশ নিয়ে পিছিয়ে গেল। এই যুদ্ধে ১জন মিলেশিয়া ও ১জন রাজাকার মারা গিয়েছিল। যুদ্ধে জয়ী হয়ে আমরা বিজয় উল্লাস করলাম। সকল স্তরের মানুষের আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হলো। এক বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করলাম তারপর হেটে দৌলতপুর গ্রামের সহযোদ্ধা মোঃ শামসুল হকের বাড়িতে শেল্টার নিলাম। কয়েক দিন দৌলতপুর, তেঞাশিয়া, খুকনী, বাজিয়ারপাড়া, দরগার চর ও অন্যান্য গ্রামে থাকতে থাকলাম।
ধীতপুর যুদ্ধ: ধীতপুর সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার একটি গ্রাম। এই যুদ্ধে নেতৃত্বে ছিলেন ডেপুটি কমান্ডার (কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত) বাবু রবীন্দ্র নাথ বাগ্চী। ২৩ নভেম্বর’ ৭১ আমরা শেল্টার নিলাম সৈয়দপুর গ্রামের কালা চক্রবর্ত্তীর বাড়িতে। ২৫ নভেম্বর’ ৭১ সংবাদ পেলাম পাকি হানাদারেরা কৈজুরী হয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইলের যুদ্ধে পাকি হানাদারেরা পরাজিত হয়ে লঞ্চে যমুনা নদী পাড় হয়ে মালিপাড়া ক্যাম্পে এসেছে। মালিপাড়া ক্যাম্প থেকে রাস্তা চিনানোর জন্য দুই জন রাজাকারকে সঙ্গে নিয়েছে। আমরা পাকি হানাদারদের আক্রমন করার জন্য ওদের পিছু নিলাম। ওরা ক্ষুদার্থ। কৈজুরী গ্রামের একজনের মুলা ক্ষেত থেকে মুলা খাওয়ার চেষ্টা করলো। ওরা হয়তো জানতো না কাচা মুলা খাওয়া যায় না। ওয়াপদা বাধ ধরে ওরা অগ্রসর হতে লাগলো। আমরাও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অস্ত্র তাক করে ওদের পিছু পিছু হাটতে থাকলাম। ওরা ক্রোধী ধীতপুর নামক স্থানে গিয়ে ওরা আমাদের দিকে অস্ত্র তাক করে গুলি করলো। আমরা জাম্প করে ওয়াপদা বাধের পশ্চিম দিকে পজিশন নিলাম। ওদের উপর গুলি ছুড়লাম। ওরা ওয়াপদা বাধের পূর্ব পার্শ্বে পজিশন নিল। এক ঘণ্টা ব্যাপি গুলি পাল্টা গুলি চলতে থাকলো। গুলির শব্দে শাহজাদপুর ও বেড়ার বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধা দল আমাদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে এলো। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো।
হানাদারেরা গুলি করা বন্ধ করলো। আমরাও অন্ধকারে গুলি করা বন্ধ করলাম। সারারাত আমরা পজিশন অবস্থায় ছিলাম। রাতে ধীতপুর সার গুদাম থেকে মাঝে মাঝে ২/১ টা করে গুলি আসছিল। ওদের গুলির প্রেক্ষিতে আমরা ২/১ টা করে গুলি করছিলাম। ভোরে ফর্সা হলে আমাদের কমান্ডার বরীন্দ্রনাথ বাগ্চী ও বেড়ার কমান্ডার জনাব আমির হোসেন ক্রোলিং করে ধীতপুর সার গুদামে এগিয়ে গেলেন। গিয়ে দেখতে পেলেন পাকিহানাদারেরা পালিয়ে গেছে। দুজন রাজাকার সারারাত কভারিং ফায়ার করেছে। কমান্ড করে রাজাকার দুজনকে স্যারেন্ডার করালেন। রাজাকার দুজনের নাম ছিল লতিফ ও কালাম। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে নেওয়া হলো। তাদের কাছ থেকে জানা গেল রাত ১১ টার দিকে হানাদারেরা ক্রোলিং করে নিরাপদ দুরত্বে এসে হেঁটে বেড়া নদী পার হয়ে ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে পালিয়েছে। পরে জানা গেল। পাকি হানাদারেরা বেড়া ঘাটে গিয়ে ভেড়াকোলা গ্রামের হলদারের নৌকায় নদী পাড় হয়ে নগরবাড়ি ঘাট হয়ে ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ধীতপুরের যুদ্ধে বেড়ার আমির হোসেনের গ্রুপের মোঃ আব্দুল খালেক শহীদ হয়েছেন। দুজন পথচারী গোলাগুলির সময়ে গুলি লেগে মারা গিয়েছেন। ধীতপুর যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে আমরা জামিরতা হাই স্কুলে ক্যাম্প করে অবস্থান নিয়েছিলাম। জাতির পিতার নির্দেশে অস্ত্র জমা দিয়ে বাড়িতে এসে লেখা-পড়া শুরু করলাম।
(ডিএস/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২২)
পাঠকের মতামত:
- নেপালে ২২ আরোহী নিয়ে প্লেন নিখোঁজ
- রোভার, আবৃত্তি ও বিতর্কে শ্রেষ্ঠ হলেন কর্ণফুলী এ জে চৌধুরী কলেজের তিন শিক্ষার্থী
- ফ্রান্স-জার্মানিকে সতর্ক করলেন পুতিন
- তিনবেলা শুধু নুডলস খাওয়ানোয় স্ত্রীকে ডিভোর্স
- সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে নিহত ২, আহত ৪
- রাজধানীতে অনিবন্ধিত হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান
- সিলেট জুড়ে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা
- তাড়াশে শেয়াল মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু
- ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে অপশক্তি আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে’
- ‘ক্ষমতাসীনরা মনে করে, পুলিশ তাদের নিজের সম্পদ’
- নগরকান্দায় দুর্বৃত্তদের আঘাতে বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্র নিহত
- আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস
- বাংলাদেশ বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
- শান্তিরক্ষীদের অবদান বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে
- বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০
- মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার সিঙ্গারবিল এলাকায় পাকসেনাদের ওপর এ্যামবুশ করে
- মৌলভীবাজারে ছাত্রদলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ
- টেক্সাসের স্কুলে হত্যাকান্ড : গাফিলতির জন্য পুলিশ প্রধানের ভুল স্বীকার
- টাঙ্গাইলে ৩ টি ক্লিনিক সিলগালা, জরিমানা
- ব্যক্তিমালিকানার জমি দখল করে আশ্রয়ন প্রকল্প তৈরির অভিযোগ
- গাজীপুরে ৮০-৯০ দশকের ছাত্রলীগের পুর্নমিলনী
- সোনারগাঁয়ে বিনা অনুমতিতে স্কুলের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ
- হাতিয়াতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলা, আহত ১২
- গলাচিপায় মুগ ডালের বাম্পার ফলন
- কেশবপুরে কাজী নজরুলের জন্মজয়ন্তী উদযাপন
- গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাতক্ষীরায় উদ্ধার
- কেন্দ্রীয় যুবদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করায় ফরিদপুর জেলা যুবদলের আনন্দ মিছিল
- নগরকান্দায় যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু
- গৌরনদীতে চার ডায়গনস্টিক সেন্টার সিলগালা
- বকশীগঞ্জে ৫ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা
- ফরিদপুরে ৩৫ লক্ষ টাকার রুপা উদ্ধার, আটক ২
- আত্রাই ডিজিটাল হাসপাতাল সিলগালা
- নওগাঁয় ২৩ দিন ধরে বাক প্রতিবন্ধী কিশোর নিখোঁজ
- ফরিদপুর জেলা আ.লীগ এর নবনির্বাচিত সভাপতি শামীম হককে ফুলেল শুভেচ্ছা
- স্ত্রীর কবরের পাশে চিরশায়িত আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
- বড়াইগ্রামে ছেলের কর্তনকৃত গাছের চাপায় মা নিহত
- নবীনগরে সাবেক সংসদ সদস্য জিকরুল আহমেদ স্মরণে শোকসভা
- ১০০ বছরের খেলার মাঠে আশ্রয়ন প্রকল্প না করার দাবিতে এলাকাবাসির বিক্ষোভ সমাবেশ
- সিলেটে মসজিদের জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা
- শৈলকুপায় ৬টি অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার বন্ধ করল স্বাস্থ্য বিভাগ
- পলাশবাড়ীতে ১২ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা!
- স্বপ্ন পূরণ হলোনা পিংকীর
- শৈলকূপায় প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় ৭ বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাটের অভিযোগ
- নাটোরে সামাজিক জবাবদিহিতা বিষয়ক সচেতনতা সভা
- লোহাগড়ায় উপজেলা অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা গ্রহণ বিষয়ক কর্মশালা
- আ.লীগের অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না : ফখরুল
- বাংলাদেশকে হারিয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেললো শ্রীলঙ্কা
- ‘মানুষ চাইলে তিন বেলা মাংস খেতে পারে’
- এখন থেকে শেল’এর আসল পণ্য মিলবে দারাজে
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !
- তেঁতুল গাছের ‘খ্যাটে’র কদর বেড়েছে