E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মুক্তিযোদ্ধার মুখে যুদ্ধ কথা

২০২২ জানুয়ারি ১৮ ১৬:২৩:৩৬
মুক্তিযোদ্ধার মুখে যুদ্ধ কথা

দেবেশ সান্যাল


মুক্তিযুদ্ধ ধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে যে কোন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁর যুদ্ধ কথা লিখে পাঠালে তা এই বিভাগে প্রকাশ করা হয়। আজ প্রকাশ করা হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবেশ চন্দ্র সান্যালের যুদ্ধ কথা। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার রতন কান্দি গ্রামে।

বেলকুচি থানা আক্রমণ যুদ্ধ : বেলকুচি সিরাজগঞ্জ জেলার একটি উল্লেখযোগ্য থানা। এই থানা আক্রমণ যুদ্ধে নেতৃত্বে ছিলেন বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের বাসিন্দা গ্রুপ কমান্ডার জনাব এম.এ মান্নান স্যার। ২৪ অক্টোবর’৭১ কমান্ডার স্যারের ও আরো ৩ জনের রেকিতে একযোগে বেলকুচি থানা ও বেলকুচির মুসলিমলীগ নেতা মোঃ আব্দুল মতিনের বাড়ি আক্রমন করলাম। সন্ধ্যায় বানিয়া গাতি শেল্টারে কমান্ডার স্যার বিস্তারিত ব্রিফ করলেন। আমাদের দুই গ্রুপে ভাগ করে দিলেন। সিদ্ধান্ত হলো কমান্ডার স্যারের নেতৃত্বে বড় গ্রুপটি থানা আক্রমন করবে। অন্য গ্রুপটি রবীন্দ্র নাথ বাগ্চীর নেতৃত্বে মতিন সাহেবের বাড়ি আক্রমন করে মতিন সাহেবকে ধরে আনবে। আমি কমান্ডার স্যারের গ্রুপে থেকে থানা আক্রমন যুদ্ধে অংশ নিলাম। রাত ৯ টায় বানিয়া গাতি থেকে যাত্রা করলাম। থানার কাছে গিয়ে দু গ্রুপ টার্গেটের উদ্দেশ্যে ভাগ হলাম। রাত ১২টায় একযোগে আক্রমনের সিদ্ধান্ত। পরিকল্পনা মোতাবেক থানার পশ্চিম পাশ দিয়ে স্ক্রোলিং করে থানার সামনে যেতেই সেন্ট্রি দেখে ফেললো। হুইসেল বাঁজিয়ে থানার সবাইকে জানিয়ে দিয়ে আমাদের কে লক্ষ্য করে গুলি করলো।

আমাদের কমান্ডার স্যার কমান্ড করে ফায়ার ওপেন করলেন। আমরা সবাই একযোগে গুলি করলাম। এক ঘণ্টা ব্যাপি যুদ্ধ চললো। থানার বিহারী পুলিশ ও রাজাকার থানার পিছনদিক দিয়ে পালিয়ে সোহাগপুর নদীতে থাকা একটি লঞ্চে চড়ে যমুনা নদীর মধ্যে গেল। থানার সেন্ট্রি গুলি করা বন্ধ করে দুই হাত উপরে তুলে আত্মসমর্পণ করলো। আমরা থানার ভিতরে ঢুকে পড়লাম। থানার মধ্যে গিয়ে দেখি ৩জন পুলিশ ও ২ জন রাজাকার গুলিতে মারা গেছে। থানার সকল অস্ত্র্র ও গোলা বারুদ নিয়ে এলাম। সেন্ট্রি সহ থানার দু’জন রাজাকারকে জ্যান্ত হাত বেঁধে ধরে নিয়ে এলাম। ভোর হয়ে গেল। মতিন সাহেবের বাড়ি আক্রমন করা দলটিও এলো।

মতিন সাহেব পালিয়ে গেছে। তাকে ধরা সম্ভব হয় নাই। থানার আশেপাশে দোকান ও বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা
উড়ালো। বিজয়ী হয়ে চলে এলাম। পরদিন সিরাজগঞ্জ থেকে শতাধিক পাকি হানাদার এসে থানার আশে পাশে আগুন
দিয়েছিল এবং মানুষদের নির্যাতন করেছিল।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা।

পাঠকের মতামত:

১১ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test