E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ শেরপুর মুক্ত দিবস

২০১৪ ডিসেম্বর ০৭ ১৫:৫৪:২৮
আজ শেরপুর মুক্ত দিবস

শেরপুর প্রতিনিধি : আজ ৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্রবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে। এদিন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে এক সংবর্ধনা সভায় শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। এসময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এদিন একইসাথে নালিতাবাড়ী উপজেলাও শক্রমুক্ত হয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৫ থেকে ৪০টি খন্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। এসব যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৫৯ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন, শেরপুর সদরের সূর্যদী গ্রামে ৫২ জন, ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ৬১ জন মুক্তিকামী মানুষসহ নাম না জানা অনেক সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন।

একাত্তরের এপ্রিল মাসে পাকবাহিনীরা প্রথমে শেরপুর শহরে প্রবেশ করে। পরে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার আহম্মদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে তাদের সদর ক্যাম্প স্থাপন করে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। শহরের নয়আনী বাজার এলাকার তৎকালীন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাসা দখল করে নিয়ে স্থানীয় আলবদররা ‘টর্চার সেল’ বানায়। এছাড়া বটতলা এলাকার পানু কর্তার বাড়ীতে শান্তি কমিটি এবং রঘুনাথ বাজার বাঞ্ছিয়া বিল্ডিং ও নিজাম উদ্দিনের নয়ানী বাজারের বাসা দখলে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্প তৈরী করা হয়।

শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল ইসলাম হিরু জানান, ১১নং সেক্টরের আওতায় কামালপুর মুক্ত হওয়ার পর পাকহানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে, মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহায়তায় শেরপুরে পাকবাহিনী ও আলবাদর, রাজাকারদের বিভিন্ন ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। কামালপুর দুর্গ দখল হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাকবাহিনীর সকল ক্যাম্প ধ্বংস হয়ে যায়। ৪ ডিসেম্বর কামালপুরের ১১ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের মূহুর্মূহু আক্রমন ও গুলি বর্ষনের মুখে স্থানীয় পাকসেনারা পিছু হটে। ৫ ডিসেম্বর থেকে পাকসেনারা কামালপুর-বক্সিগঞ্জ থেকে শেরপুর শহর হয়ে জামালপুর অভিমুখে রওনা হয়।

এদিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে পাক বাহিনীর আহম্মদনগর সেক্টর ক্যাম্প থেকেও পাক সেনারা পিছু হটতে থাকে। পাকসেনারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে শেরপুর শহরের উপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় শেরপুর। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ দিনটি শেরপুর জেলার আপামর জনসাধারণের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যময় গৌরবোজ্জ্বল ও অবিস্মরণীয় দিন। শেরপুর মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, সাংবাদিক বিপ্লবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবার সংবর্ধনা, স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা।

(এইচবি/এএস/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test