আজ জালালপুর গণহত্যা দিবস
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর গ্রামের পূর্বপাশ দিয়ে প্রবহমান কপোতাক্ষ নদ। পশ্চিমে খাল-বিল, উত্তরে শ্রীমন্তকাটি ও দক্ষিণে জেঠুয়া গ্রাম। গ্রামের অধিকাংশ অধিবাসীই মুসলমান সম্প্রদায়ের। তবে কিছু হিন্দু পরিবারও সেখানে বসবাস করছে। ১৯৭১ সালের ১২ জুলাই জালালপুরের টি করিমের বাড়িতে বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা দুপুরের খাওয়ার পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখে কপোতাক্ষ নদ দিয়ে গানবোটে কিছু রাজাকার ও মিলিশিয়ারা যাচ্ছিল। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা গানবোটটির দিকে গুলি ছোঁড়ে। বোটের চালক দ্রুত লঞ্চটি চালিয়ে কপিলমুনির দিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই সময় শত্রুপক্ষের চারজন মিলিশিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিকেলে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্প থেকে নতুন শক্তি নিয়ে রাজাকার ও মিলিশিয়ার সম্মিলিত বাহিনী পুর্নগঠিত হয়ে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ফিরে আসে। তারা শ্রীমন্তকাটি মোড়ল বাড়িতে আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়। রাজাকার ও মিলিশিয়ারা জালালপুর শাঁখারিপাড়ায় প্রবেশ করে। এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জালালপুর গ্রামের ৮৫ বছরের বৃদ্ধ অন্নদা সেন, অনিমা দাস (২৫), তার কোলে স্তন্যপানরত এক বছর বয়সী শিশু দীপংকর দাস। এই সময় আরও যারা গুলিতে মারা যান তারা হলেন দুলাল চন্দ্র বর্ধন (৯৫), হরিপদ ঘোষ (৬৫), সাহেব সেন (৩০), উমাপদ দত্ত (৪০), অশোক (৩৫), বাদল প্রামানিক (২৮), সুনীল (৪৫), মোবারক মোড়ল (২৫), শ্রীমন্তকাটি গ্রামের আবদুল বারি মোড়ল (৫০), আবদুল মান্নান মোড়ল (৪৫) এবং কৃষ্ণকাটি গ্রামের বদির শেখসহ ১৭ জন। এরমধ্যে মোবারক মোড়ল ছিলেন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী।
এ সময় সুনীল, অন্নদা সেন, অশোক প্রামানিক, বাদলসহ সাতজন হতভাগ্যকে এক সাথে বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়। আনন্দ দাশের বাড়ির কাজের লোক ছিল মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রিতুল কারিগর ও তার এক বোন। তারা কাজের সাহায্যকারী হিসেবে আনন্দ দাশদের বাড়িতে এসেছিল। তারাও গোলাগুলিতে আহত হন। হরিপদ ঘোষকে মাঠে যাওয়ার পথে রাজাকাররা ধরে নিয়ে গিয়ে সরকারি পুকুরের পাশে ‘কুড়ির মাঠে’ গুলি করে হত্যা করে। তার সাথে হত্যা করা হয় অধীর ঘোষকেও। এসব কথা জানান, সেই সময়ের সম্মুখযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ময়নুল ইসলামসহ অনেকেই।
এছাড়া শ্রীমন্তকাটি থেকে রাজাকার ও মিলিশিয়ারা ধরে নিয়ে যায় আবদুল বারী মোড়ল, আবদুল মান্নান মোড়ল, আবদুস সাত্তার মোড়ল, আবদুর রাজ্জাক মোড়ল, রশিদ মোড়ল, মোমিন মোড়ল, ইউনুস মোড়ল, ইউসুফ মোড়ল, মোকছেদ আলী সরদার, শওকত আলী মোড়ল ও আবদুল আজিজ মোড়লসহ ১৬ জনকে। এদেরকে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে আটকে রেখে তারা অমানবিক নির্যাতন করে। এদের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের দাবি ও চাপের মুখে আবদুল বারী মোড়লকে ছেড়ে দিলেও একজন প্রহরী তাকে রাইফেল দিয়ে পেটে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার মরদেহ বেয়নেট দিয়ে ফেড়ে রাজাকাররা কপোতাক্ষে ভাসিয়ে দেয়। তার মরদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আটককৃতদের মধ্যে আর সকলকে ছেড়ে দিলেও তাদের উপর নৃশংস অত্যাচার করা হয়। এদের মধ্যে আবদুল মান্নান মোড়ল সম্পূর্ণভাবে যৌনশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং কয়েক বছর বেঁচে থাকার পর ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার মোঃ মফিজ উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্নভাবে রাজাকাররা অসংখ্য নারী-পুরুষকে হত্যা করে। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে শহীদদের স্মরণে জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কপোতাক্ষ নদের পাশে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
অত্র অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে গবেষণাকারী বিশিষ্ট লেখক বদরু মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, তালা ও তার আশেপাশে হত্যাযজ্ঞের ধরণ ও পরিসংখ্যানে প্রমাণিত হয় যে, যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের সিংহভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। যে সকল মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই হয় মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক না হয় নিরিহ মানুষ। এর বাইরেও অসংখ্য মানুষকে খানসেনা ও তাদের দোসররা নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
(আরকে/এসপি/জুলাই ১২, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- ‘জামায়াতকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না, ভোটও দেবে না’
- কমলো সোনার দাম ভরি ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা
- চাটমোহরে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল
- প্রকৃতির উপহার বেতফল সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যবর্ধক
- ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ জাবিতে রাত ১০টার পর যেকোনো অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ
- পাকবাহিনীর সঙ্গে আজমিরীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়
- পাংশায় ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
- খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫৬০ মেঃটন খাদ্যশস্য কালোবাজারে, দুই কোটি টাকা খাদ্য কর্মকর্তার পেটে
- কাপাসিয়ায় বিএনপি প্রার্থীর ব্যাপক গণসংযোগ, উঠান বৈঠক জনসভায় পরিনত
- আল্লাহ আগামীতে যেন দাঁড়িপাল্লাকে সংসদে পাঠায়: আমির হামজা
- বিএনপি নেতা ডা. শহিদুল আলমের দলীয় মনোনয়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
- ধামরাইয়ে সাধক অমৃত লাল ভক্তের ১৭৭তম বার্ষিকীতে সপ্তাহব্যাপী উৎসব
- সভাপতি আহাদ আলী মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম
- আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস: সহনশীলতা ছাড়া শান্তি অসম্ভব
- বাগেরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মৃত্যু
- বাগেরহাট কারাগারে ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু
- বাগেরহাটে পাউবো’র জমি দখলের মহোৎসব
- আ.লীগের ঢাকা লকডাউন কর্মসূচির ঘটনায় গোপালগঞ্জে গ্রেফতার ৫
- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে ৫ প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড
- মনোনয়ন না পাওয়ায় হালিমের কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ
- জামালপুরে কারাগারের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার
- ঈশ্বরদী ইপিজেডে অক্সিজেন সংকটে ৩৫ নারী শ্রমিক অসুস্থ
- ১৯৩ জনের নামে মামলা, ৪ গ্রাম পুরুষশূন্য
- ‘দিনের ভোট দিনেই হবে, রাতে হওয়ার সুযোগ নেই’
- সহনশীলতা: সামাজিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ভিত্তি
- নড়াইলের হাটবাজারে পাকা তালের সমারোহ, তবে দাম বেশি
- 'যে বুলেট তোমার প্রাণ কেড়েছে সেই বুলেটকে আমি কথা দিয়েছি, আমায় মেরো না; আমি মুজিবের মতো বাংলা ও বাঙালিকে ভালোবাসবো না'
- নিমে নিরাময় হয় যে সব রোগের
- ‘ঐ চেয়ার নির্লজ্জদের জন্যই’
- নিরাপদ সমুদ্র পর্যটনের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- হাজারো মানুষের তারুণ্যের জাগরণ ‘অনন্যা’
- উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
- আবারো রগ কেটে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছে : মোমিন মেহেদী
- ‘ভারত নোংরা খেলা খেলতে পারে, দ্বিমুখী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান’
- রাজশাহীতে আশুরা পালনে মানতে হবে যেসব বিধিনিষেধ
- ‘সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন’
- মেক্সিকোতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪
- আজ জালালপুর গণহত্যা দিবস
- ডহর রামসিদ্ধি : নৌকার গ্রাম
- ‘বঙ্গবন্ধু একটি সুন্দর ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন’
- মামদানির জয়, প্রথম মুসলিম মেয়র পেলো নিউইয়র্ক
- পাকবাহিনীর সঙ্গে আজমিরীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়
- ভণ্ডামি আর নাটক থেকে মুক্তি চান আঁখি আলমগীর
- গাজীপুরে ৩৯ দফা দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ
-1.gif)








