E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এক যুগেও অসম্পূর্ণ মাদারীপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলকের কাজ

২০১৪ ডিসেম্বর ১২ ১৭:৫৪:২০
এক যুগেও অসম্পূর্ণ মাদারীপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলকের কাজ

মাদারীপুর প্রতিনিধি : শহীদদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা না পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুরে বীর শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলক’ এর নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ১২ বছরেও শেষ হয়নি। এতে করে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধরা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিনে ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলক নির্মাণের জন্য ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। কিন্তু জায়গা নির্ধারণ, প্রাপ্ত নকশা অনুমোদন ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলকের মুখ কোন দিকে থাকবে সেই স্বিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত না হওয়ায় দীর্ঘদিন কাজ শুরু হয়নি।

এরপর ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে মাদারীপুর লেকের উত্তর পাশে স্বাধীনতা অঙ্গণে ৪ ফুট বেদীর উপরে ১৫ ফুট উচ্চতার এই স্মৃতি নামফলকের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্ত আজও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা না পাওয়ার অজুহাতে নির্মিত হয়নি নামের তালিকা। এতে চরম ক্ষুদ্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধরা।
এব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়ার মুক্তিযোদ্ধা জলিল হাওলাদার জানান, দেশের জন্য যারা জীবন দিলো। আজ পর্যন্ত তাদের নামটুকু পর্যন্ত টাঙানো হয়নি। কিভাবে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের শহীদের ইতিহাস জানাবে। আমি শ্রীঘ্রই শহীদদের নাম টাঙানোর অনুরোধ রাখছি। স্থানীয় ব্যবসায়ি আফজাল হোসেন, ছাত্র সুমন মোল্যাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্মৃতি নামফলকের কাজ শেষ না হওয়ায় এটি শিশুদের বিনোদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এছাড়া উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীরা প্রায়ই বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠে। শহরের কুকরাইল এলাকার গৃহবধু ডালিয়া বেগম জানান, ‘এখানে বাচ্চাদের প্রতিদিনই নিয়ে আসি। ওরা পিচ্ছিল দেয়-বেশ আনন্দ করে। এটা পুরোপুরি নির্মিত হলে আর বাচ্চাদের আনতাম না।’

এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ডার শাহজাহান হাওলাদার জানান, আমি ২০১২ সালে সংসদের জেলা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্বাদের সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে থাকি। ৪৫ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে সনাক্ত করে তাদের নাম সরকারীভাবে গ্রেজেটে প্রকাশের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করি। যা এখন গ্রেজেট প্রকাশের অপেক্ষায়। স্মৃতিস্তম্ভের ঠিকাদার অহিদুর রহমান তোতা ভুইয়া বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিস্তম্ভের কাজ শেষ হওয়ার পর তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ড থেকে মাত্র ৫ জন শহীদ মুক্তিযোদ্বার নাম স্মৃতিস্তম্ভে লেখা হয়। এতে করে মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন মহলে ‘বিতর্কিত’ বলে অভিযোগ ওঠে এবং তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ফলে ঐ ৫ জনের নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলার পর এখন পর্যন্ত কোন নামের তালিকা আসেনি। তাই স্মৃতিস্তম্ভ এখন নামফলকহীনভাবে দাড়িয়ে আছে।

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কায়সার ইবনে সায়েখ বলেন, অবকাঠামো নির্মাণের পর ২০০৫ সালে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ শতাংশ জমির উপর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রচারে জন্য স্মৃতিস্তম্ভ তৈরী করা হয়। নকশা অনুসারে নির্মাণ কাজ করার পর সৌন্দয্যবর্ধনের কিছু আংশিক কাজ অর্থ বরাদ্দের অভাবে সম্পন্ন হয়নি। তবে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ আসলে দ্রুতগতিতে স্মৃতিস্মম্ভের সৌন্দয্যবর্ধনের কাজ করা হবে।

(এসিএ/পি/ডিসেম্বর ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test