E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অযত্ন-অবহেলায় রাজবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভগুলো

২০১৪ ডিসেম্বর ১৩ ১৬:১২:২৫
অযত্ন-অবহেলায় রাজবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভগুলো

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ী জেলায় যে কয়টি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণের যথাযথ উদ্যোগ নেই। রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছর পরও গণকবরগুলোও সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

রাজবাড়ী জেলায় শহরের প্রাণকেন্দ্র রেলগেটে, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এবং লোকোসেডে রয়েছে তিনটি স্মৃতি স্তম্ভ। এছাড়া গোয়ালন্দের কুমড়াকান্দিতে একটি স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে। ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষদের হত্যা করে ফেলা হতো লোকোসেড এলাকার পুকুরে। মুক্তিযদ্ধের সেই সব শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলা হয়। কিন্তু সেটি যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্মৃতিস্তম্ভটি অরক্ষিত থাতায় ভেতরে গরু ছাগল চড়ে। ঘুরে বেড়ায় কুকুর। এলাকার মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় আশে পাশে মলমূত্রও ত্যাগ করে। বাস টার্মিনালে রাজবাড়ী জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাযুক্ত যে স্তম্ভটি রয়েছে সেটিও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন সংষ্কার না হওয়ায় নামগুলো মুছে গেছে তবে কিছুটা হলেও ভালো আছে রেলগেট এলাকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভটি। ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল গোয়ালন্দের উজারচর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গি গ্রামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকবাহিনী। হত্যা করা হয় বহু মানুষকে। যাদের মধ্যে ২৪ জনের পরিচয় পাওয়া যায়। ওই দিন যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মরণে গোয়ালন্দ উত্তরাধিকার নামের একটি সংগঠন ২০০৯ সালের ২১ এপ্রিল সেখানে একটি স্মৃতি স্তম্ভটি স্থাপন করে। সেটিও রয়েছে অযত্ন অবহেলায়। অন্যদিকে স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও গণকবরগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজবাড়ীর কল্যাণপুর, রামপুর, খানখানাপুর, গোয়ালন্দের কুমড়াকান্দি, কালুখালীর রতনদিয়া, পাংশার মাচপাড়া, বালিয়াকান্দির রামদিয়াসহ বেশ কিছু স্থানে চলে গণহত্যা। মুক্তিযুদ্ধ সচেতন ব্যক্তিরা সেসব জায়গায় স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ এবং স্মৃতি স্তম্ভগুলো যথাযথভাবে সংষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাজবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, আমরা স্মৃতি স্তম্ভগুলো পরিদর্শন করে দেখেছিÑ সেগুলো খুবই অযতেœ রয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক যে, স্মৃতি স্তম্ভগুলো অযতœ আর অবহেলায় রয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভগুলো সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের লেখক ও গবেষক বাবু মল্লিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের এতো বছর পরও গণকবরগুলো সংরক্ষণের জন্য সচেতন নাগরিক, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার সপক্ষের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, স্মৃতিস্তম্ভ গুলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের উদ্দেশ্যে নির্মিত। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন সেগুলো সংরক্ষণের জন্য সবসময়ই সচেষ্ট। এছাড়া যেসব জায়গায় গণকবর আছে সেগুলি চিহ্নিত করে সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

(এসএসসি/পি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test