E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭১

'মাদার তেরেসা কুমারী মাতাদের জন্য একটি সদন স্থাপন করবেন'

২০১৪ ডিসেম্বর ৩০ ০০:০৫:৪৬
'মাদার তেরেসা কুমারী মাতাদের জন্য একটি সদন স্থাপন করবেন'

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : এ পি বি’র খবরে বলা হয় : সন্ধ্যায় বুদ্ধিজীবী নিধন তথ্যানুসন্ধান কমিটির এক প্রতিনিধিদল অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

প্রতিনিধিদল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের পরিচালিত গণহত্যা সম্পর্কে তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য মুক্তিবাহিনী, মিত্রবাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠনের দাবী জানান। এই সংস্থা ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট আল-বদর বাহিনী কর্র্তৃক রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বুদ্ধিজীবী নিধন এবং পাকবাহিনী ও কিছু বিদেশী এজেন্সিতে তাদের (আল-বদর) উপদেষ্টাদের সম্পর্কেও তদন্ত চালাবেন। তাঁরা বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেন, সন্দেহজনক ফ্যাসিস্ট নরঘাতক ও তাদের দোসরদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার উদ্দেশ্যে এই কমিটিকে দ্রুত অভিযান শুরু করতে হবে।
প্রতিনিধিদল রায়েরবাজার এবং অন্যান্য স্থানে যেসব মৃতদেহ এখনও পড়ে আছে সেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে সমাদিস্থ করার জন্য রাষ্ট্রপ্রধানের নিকট আবেদন জানান। কমিটির এক প্রেস রিলিজে বলা হয় যে অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি তাঁদের দাবী সম্পর্কে ‘বাস্তব ব্যবস্থা’ গ্রহণ করবেন।
নরঘাতকদের অনেকেই এখন পর্যন্ত লোকচক্ষুর আড়ালে থাকাতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ঐ সব রাষ্ট্রবিরোধী লোকদের নিমূল করার ব্যাপারে কমিটির প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। ঘাতকদের ষড়যন্ত্রের শিকারে পরিণত ব্যক্তিদের জন্যও তিনি সমবেদনা ও সহানুভ’তি জ্ঞাপন করেন।

কলিকাতার মাদার টেরেসা এক সাক্ষাৎকারে গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামÑএর সাথে বাংলাদেশের বীরাঙ্গণা খেতাবে ভূষিতা কুমারী মাতাদের জন্য একটি সদন স্থাপনের পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। মাদার টেরেসার এই পরিকল্পনা অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের অকুন্ঠ প্রশংসা লাভ করেন। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ভারতস্থ শরণার্থী শিবিরে মাদার টেরেসার কার্যক্রম লক্ষ্য করেছেন। মাদার টেরেসা ভারতে নিঃস্ব লোকদের পরিচর্যার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন এবং উল্লেখযোগ্য সমাজসেবা কার্যের জন্য ম্যাগসেসাই পুরস্কার লাভ করেন। গরীব ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পরিচর্যার জন্য তিনি ভারতে একটি ধর্মীয় ‘সেবিকা সম্প্রদায়’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বর্তমানে সমগ্র ভারতে তার সম্প্রসারণ ঘটেছে।

লাঞ্ছিতা মহিলা ও অপুষ্ট শিশুদের পরিচর্যার জন্য খুব দ্রুত মাদার টেরেসা কলিকাতা হতে ছয়জন সেবিকা পাঠাবেন। তাঁর এই কাজে সাহায্যের জন্য তিনি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার জন্য এবং তাঁর পরিকল্পনা সাময়িকভাবে বড় আকারের ভবন ব্যবহারে সহায়তাদানের জন্য সম্পত্তি মালিকদের প্রতি আবেদন জানান। ৬৭/২ কাকরাইল রোড, পোঃ-বক্স ৯৯৪, রমনা, ঢাকা-২ ফোন ২৫৯৬৭৯ এই ঠিকানস্থ খ্রীস্টান ত্রান ও পুনর্বাসন সংস্থার সহযোগিতায় এই পরিকল্পনার কাজ সম্পাদিত হবে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test