আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১২
জিয়া সেদিন বঙ্গবন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন, 'স্যার, আমার বুক বিদ্ধ না করে বুলেট আপনার গায়ে লাগতে পারবে না'

প্রবীর সিকদার
একাত্তরে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সাথে সাথেই বুঝি নির্ধারিত হয়েছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস মৃত্যুর বিষয়টি! তা না হলে ১৯৭১ আর ১৯৭৫ এর নানা চরিত্র-ঘটনার এতো মিল থাকে কী করে!
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পৃথিবীর নৃশংসতম গণহত্যা চালায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের জন্ম রোধ করতে না পারলেও পিপিপি নেতা জুলফিকর আলী ভুট্টো ১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর খুব সদম্ভেই বলেছিলেন, 'এই অবস্থা চিরস্থায়ী নয়। পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য ও অবিভাজ্য অঙ্গ।' খুবই গোপনে মাওলানা ভাসানীর কাছে দূত পাঠিয়ে 'মুসলিম বাংলা' প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন ভুট্টো। একাত্তরের ঘাতক জামায়াত নেতা গোলাম আজমকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যান পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন পরিচালনার। ষড়যন্ত্র এগিয়ে নিতে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতিও দেয়। ১৯৭৪ সালের ২৪ জুন তিন দিনের সফরে ঢাকা আসেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। সেই সফরেই এদেশীয় পাকিস্তানী দালাল চক্রের সাথে সফল যোগাযোগ স্থাপন করে যান তিনি। পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে ভুট্টো বলেন, 'বাংলাদেশে অচিরেই পরিবর্তন ঘটবে।' বঙ্গবন্ধুর খুনিরাও বলেছে, এক বছরেরও বেশি সময় তারা মুজিব হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছে।
বাংলাদেশের জন্মকে ব্যক্তিগত পরাজয় হিসেবেই দেখেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব হেনরি কিসিঞ্জার। প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার আগুনে তৈরি তার হিট লিস্টে লিখেছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবের নাম। 'নো পার্মানেন্ট ফ্রেন্ডস অর এনিমিস, অনলি পার্মানেন্ট ইন্টারেস্ট' নীতি বাস্তবায়নে আমেরিকাও স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশকে। হাত বাড়ায় সাহায্যেরও। ১৯৭৪ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকা ঘুরে যান কিসিঞ্জার। এদেশের মার্কিন এজেন্টরা আবার প্রাণ ফিরে পায়। ষড়যন্ত্রের জাল দ্রুতই বিস্তার লাভ করতে থাকে। এক বছর না ঘুরতেই সপরিবারে খুন হন বাংলাদেশের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু মুজিব!
১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে যখন ঢাকা আক্রান্ত হয় তখনও মুক্তিযুদ্ধ বিবেচনায় খুবই নেতিবাচক ভূমিকায় ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে বাধ্য হলেও রহস্যের জালেই ঘেরা থাকেন জিয়া। আর সেই রহস্যের কারণেই মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয় তাকে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়েও জিয়ার রহস্যজনক আচরণ অব্যাহত থাকে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি জিয়া সুকৌশলে পাকিস্তান ফেরত সেনা কর্মকর্তাদের লেলিয়ে দিতেন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে; আর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের লেলিয়ে দিতেন পাকিস্তান ফেরত সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। জিয়ার আচরণে ষড়যন্ত্র আঁচ করতে পেরে বঙ্গবন্ধু একদিন তলব করেছিলেন জিয়াকে। জিয়া সেদিন বঙ্গবন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন, 'স্যার, আমার বুক বিদ্ধ না করে বুলেট আপনার গায়ে লাগতে পারবে না।' অথচ এই জিয়াই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অভিনন্দিত করেন, পুরস্কৃত করেন, জেনারেল শফিউল্লাহকে তাড়িয়ে নিজে সেনাপ্রধান হন, পরে রাষ্ট্রপতি হন এবং দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী তথা পাকিস্তানী ভাবধারার সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গোড়াপত্তন ঘটান!
একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন তারই বিশ্বস্ত মাহবুব আলম চাষি। এদের দুই জনেরই পাকিস্তান ও সিএইএ কানেকশন ছিল বেশ শক্ত। মুক্তিযুদ্ধের আড়ালে এরা ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন। সেই ষড়যন্ত্র ফাঁস হলে মোশতাক হন নজরবন্দী। আর পররাষ্ট্র সচিবের পদ হারান চাষি। অথচ বঙ্গবন্ধু খুনের পর রাষ্ট্রপতি পদটি দখল করেন ওই খন্দকার মোশতাকই! আর তার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হন সেই মাহবুব আলম চাষি! ১৯৭১ আর ১৯৭৫, কী বিচিত্র সব ঘটনা!
পিতা! আজ দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট, তোমার পরম স্নেহে প্রতিপালিত হয়ে আমরা শুধু শক্তিধরই হইনি, তোমাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে খুনও করেছি! কখন যে আমিও খুনিদের একজন হয়েছি তা টেরও পাইনি! কী অকৃতজ্ঞ, কী কৃতঘ্ন সন্তান আমি!
পিতা, আমায় ক্ষমা কর তুমি, ক্ষমা কর।
পাঠকের মতামত:
- টানা রেকর্ডের পর কমলো স্বর্ণের দাম
- চাটমোহরে পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি
- ‘গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’
- চাটমোহরে জি আর চাল বরাদ্দে অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন
- ঈশ্বরদীতে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন
- বিনামূল্যে ৪০৬ চক্ষু রোগীকে চিকিৎসা, ৩৫ জনের ছানি অপারেশন
- ‘দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’
- ৮ বছর ধরে ভোগান্তিতে স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী
- ঈশ্বরগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সড়ক অবরোধ
- গাংনীর ইউএনও’র বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে এবার মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন
- মহম্মদপুরে প্যানেল চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
- টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি মোশারফ হোসেন
- মহম্মদপুরে নহাটা আর পিপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্যান প্রদান
- পলাশবাড়ীতে ময়লা-আবর্জনার মধ্যেই রাতারাতি গড়ে উঠছে আদর্শ বিদ্যাপীঠ
- ফুলপুরে ৩ মাদককারবারি গ্রেপ্তার
- র্যাবের গুলিতে কলেজ ছাত্র নিহত, স্কুলছাত্র গুলিবিদ্ধ
- সাতক্ষীরায় কেমিকেল মিশিয়ে ঢাকায় পাঠানোর সময় ৫ ক্যারেট আম জব্দ
- ‘সমালোচনা থেকে শেখার চেষ্টা করছি’
- আশাশুনির ভূমিহীন পল্লীতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, ১৬ আসামি জেল হাজতে
- অর্থপাচারকারী ৭০ ভিআইপি শনাক্ত
- ঝর্না বেগমের খপ্পরে পরে স্বর্বশান্ত অনেক অসহায় পরিবার
- চাপ দিয়ে কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ করলে মানবে না শিক্ষক সমিতি
- ‘মার্কিন সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল হয়েছে’
- কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
- সোনাতলায় তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, তরল খাবারের পরামর্শ চিকিৎসকের
- জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় পুরোদমে শুরু হচ্ছে না কাজ, চরম ভোগান্তি
- সাংবাদিকের ওপর হামলা, বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাট
- ঝিনাইদহে ছাত্রদলের সাবেক বর্তমান নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের ঈদ পুর্নমিলনী
- জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের মার্কিন সম্মানজনক পুরস্কার, যা বললেন ট্যামি ব্রুস
- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর
- টানা রেকর্ডের পর কমলো স্বর্ণের দাম
- মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে যোগ দিলেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা
- ‘দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে’
- নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২২ গজে নাসির
- পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা, কোচিং-ফটোকপি বন্ধসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা
- টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে অফিস-আদালত
- বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা মোদির
- গরমকালে জন্ডিস রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে সতর্কতা প্রয়োজন
- গৌরনদীতে পাঁচ মণ জাটকা জব্দ
- ১৭ মার্চ
- পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা
- গোল ‘চুরি’ করে সতীর্থের কাছে ক্ষমা চাইলেন রাফিনহা
- ‘পূর্ব পাকিস্তানের অরাজকতার জন্য শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ দায়ী’
- ঈদের আনন্দ নেই ঈশ্বরদী জংশন ষ্টেশনের ভাসমান মানুষের জীবনে
- ঝিনাইদহে ৩’শ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ