E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যেভাবে এলো ইশারা ভাষা

২০২২ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৩:৩৮:২৮
যেভাবে এলো ইশারা ভাষা

নিউজ ডেস্ক : আজ ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ‘সাইন ল্যাংগুয়েজ ডে’। সারাবিশ্বে পালিত হয় এইদিনটি। যারা কথা বলতে পারেন না তাদের ভাষার প্রতি সম্মান রেখেই এই দিবস পালন করা হয়। তাদের আছে ৩০০টিরও বেশি সাংকেতিক ভাষা।

ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব দ্য ডেফের একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্বে প্রায় ৭২ মিলিয়ন মানুষ আছে যারা কানে শুনতে পান না। এই সাত কোটি মানুষের ৮০ শতাংশই বাস করেন উন্নয়নশীল দেশে। সমীক্ষায় দেখা যায় এই ৮০ শতাংশের মাত্র ২ শতাংশ মানুষই কেবল পূর্ণাঙ্গ সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করতে পারেন।

আবার সাধারণ অনেকেই জানেনই না যে, এই সাংকেতিক ভাষাগুলো প্রকৃতপক্ষে একটি পূর্ণাঙ্গ ভাষা। আমাদের দেশে ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৭ ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এ বছরও ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে পালিত হয় বাংলা ইশারা ভাষা দিবস।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বধির মানুষদের অধিকারকে আরও দৃঢ় করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস বা সাংকেতিক ভাষা দিবসের উপর গুরুত্ব আরোপ করে।

তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই ভাষার দিবস শুরু হয় ১৯৫১ সালে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা শুরু হয় ২০১৮ সালে। দিবসটি পালন করার শুরু হয় মূলত ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব দ্য ডেফ সংস্থাই।

যারা কানে শুনতে পান না তাদের জন্য সাইন ল্যাংগুয়েজ একমাত্র ভরসা। অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তারা এসব সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে থাকে। বিশ্বজুড়ে কতটি সাংকেতিক ভাষার অস্তিত্ব আছে তার সুস্পষ্ট কোনো তথ্য নেই।

তবে প্রতিটি দেশের নিজস্ব কিছু সাংকেতিক ভাষা আছে। আবার অনেক দেশে এই ভাষার সংখ্যা একাধিক। সাংকেতিক ভাষার প্রথম লিখিত রেকর্ডটি ছি প্লেটোর ক্র্যাটাইলাসের।

সেটি লেখা হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৫ শতক থেকে।এতে সক্রেটিস বলেছিলেন, যদি আমাদের একটি কণ্ঠস্বর বা জিহ্বা না থাকত এবং একে অপরের কাছে ভাব প্রকাশ করতে চাই, তবে আমরা কি আমাদের হাত, মাথা এবং আমাদের শরীরের বাকি অংশগুলোকে নড়াচড়া করে চিহ্ন তৈরি করার চেষ্টা করতাম না, ঠিক যেমনটি বোবা মানুষ করে?

১৯ শতকের পূর্বে ঐতিহাসিক সাংকেতিক ভাষা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। এই ভাষা আঙুলের নড়াচড়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল।

যেগুলো উদ্ভাবিত হয়েছিল যাতে কথ্য ভাষা থেকে শব্দগুলোকে একটি সাংকেতিক ভাষায় স্থানান্তর করা যায়। সাংকেতিক ভাষার ম্যানুয়াল বর্ণমালা প্রথম তৈরি করেন পেড্রো পন্স ডি লিওন।

বধির শিশুদের জন্য প্রথম স্কুল তৈরি হয় প্যারিসে। ১৭৫৫ সালে অ্যাবে ডি এলপেই সংস্থা এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে স্নাতক হন লরেন্ট ক্লার্ক।

এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং টমাস হপকিন্স গ্যালাউডেটের সঙ্গে মিলে ১৮১৭ সালে আমেরিকান স্কুল ফর দ্য ডেফ স্থাপন করেন। স্কুলটি ওয়েস্ট হার্টফোর্ড, কানেকটিকাটে অবস্থিত। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বধিরদের জন্য সবচেয়ে পুরোনো স্কুল।

কথ্য ভাষা এবং সাংকেতিক ভাষার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ভর করে বিভিন্ন দেশের উপর। এটি কোন কোন দেশে ব্যবহার করা যাবে তা নির্ভর করবে কথ্য একই ভাষা কোনসব দেশে একই।

যেমন ধরুন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ভাষা হলো ইংরেজি। যেহেতু সেখানে সাইন ল্যাংগুয়েজ তৈরি করা হয়েছে ইংরেজি ভাষার উপর। তাই বিশ্বের যেসব দেশে ইংরেজি ভাষার প্রচলন আছে সেখানেই তারা ওই সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব দ্য ডেফ অ্যান্ড ডেফে আন্তর্জাতিক সাইন ব্যবহার করা হয়। এটি গেসতুনো নামে পরিচিত ছিল। যেটি ফরাসি সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে উদ্ভূত। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ান এবং ব্রিটিশ সাংকেতিক ভাষার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আন্তর্জাতিক ইভেন্টে এই ভাষা বধির ব্যক্তিরা ব্যবহার করতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

তথ্যসূত্র : ডেইস অব দ্য ইয়ার

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test