E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধ্বংসের পথে কালের সাক্ষী রাজা রাম মন্দির

২০২৩ আগস্ট ০১ ১৯:০৭:০৬
ধ্বংসের পথে কালের সাক্ষী রাজা রাম মন্দির

বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের প্রাচীন ভাস্কর্য শিল্পের নিদর্শন খালিয়া রাজারাম মন্দিরটি। মহাকালকে উপেক্ষা করে আজও মন্দিরটি জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে  কালের স্বাক্ষী হয়ে। আর এটিই মাদারীপুর জেলার একমাত্র প্রাচীন মন্দির, যা তৎকালীন জমিদার কালী সাধক রাজারাম রায় চৌধুরী নির্মাণ করেছিলেন। এলাকাবাসীর কাছে বর্তমানে এটি রাজা রামের মন্দির হিসেবেই পরিচিত।

রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের বেশ সন্নিকটে খালিয়া শান্তি কেন্দ্রের ভেতরেই অবস্থিত এই মন্দিরটি। কোনো রাস্তাঘাট না থাকায় সহজে মন্দিরের পথ খুঁজে পাওয়া যায় না। আনুমানিক সপ্তদশ শতাব্দীতে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। বিভিন্ন জেলার দর্শনার্থী ও পর্যটকদের চলাচলের রাস্তা না থাকায়।

বাঁশ ঝাঁড়ের মধ্য দিয়ে মন্দিরটির কাছে গিয়ে দেখা গেছে, এর নির্মাণ শৈলী বেশ চমৎকার। তৎকালীন জমিদার রাজারাম নিজের পূজা অর্চনা করার জন্য মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মন্দিরের টেরাকোটায় ফুটিয়ে তোলা হয় রামায়ণ মহাভারতের বিভিন্ন দৃশ্য। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন পশুপাখি, ফুল-লতা-পাতা, দেব-দেবীর ছবি। দুই তলা বিশিষ্ঠ মন্দিরটি দেখতে চৌচালা ঘরের মতো, যার মধ্যে ৬টি কক্ষ রয়েছে। ২৩ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত মন্দিরের দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, প্রস্থ ১৬ ফুট এবং উচ্চতা ৪৭ ফুট। দক্ষ শিল্পীদের নিপুণ হাতের কারুকাজ যা শত শত বছর পরও মানুষের মন কাড়ে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মন্দিরটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করলেও কোনো উন্নয়ন হয়নি। মন্দিরের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেয়ালে বট গাছ, শেওলা জমে গেছে। কোথাও চুন সুরকি খসে পড়ছে। উপরের তলায় ভেতরের দিকে ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি মন্দিরটি দেখাশোনার জন্য জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সুশীল নামে এক কর্মচারী নিয়োগ করেছেন। তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ মাঝে মাঝে তার ছেলে সজীব এসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। এছাড়াও কিছুদিন আগে মন্দিরে যাওয়ার জন্য একটি রাস্তা তৈরির প্রস্তাব পাস করা হলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয় শাজাহান মিয়া ও হায়দার শেখ, পর্যটক ভুক্তভোগীরা জানান, মন্দিরে সহজে যাওয়ার রাস্তা না থাকায় এখানে অনেকেই আসতে পারেন না। টেকেরহাট বন্দর থেকে এটা একবারেই নিকটে। জঙ্গল ডিঙিয়ে মন্দিরে আসতে বেশ কষ্ট হয়। অনেকে দূরে গাড়ি রেখে মন্দিরটি দেখতে আসেন। মন্দিরটি যদি ভালোভাবে রক্ষণা-বেক্ষণ করা যায় তাহলে এটি জেলার একটি দর্শনীয় স্থান হতে পারে।

(বিডি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test