মরা নদের গল্প

শেখ ইমন, শৈলকুপা : ‘এইখানে এক নদী ছিল, জানল না তো কেউ’। কণ্ঠশিল্পী পথিক নবীর এই গান শোনেননি এমন মানুষ এদেশে কমই আছেন। গানটি কাল্পনিক অর্থে গেয়ে থাকলেও কণ্ঠশিল্পীর কল্পনাই যেন সত্যি হয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপার একসময়ের খরস্রোতা ‘কুমার নদে’। পানির অভাবে শুকিয়ে সুবিশাল নদ এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে একসময় বিশাল নদ ছিল। অথচ নিকট অতীতেও সারা বছর না হলেও দু-চার মাস পানি বুকে ধারণ করতো এই নদ। সেসব এখন শুধুই লেখার গল্প। এখনকার গল্প হলো- নদ আছে, পানি নেই। তবে কথায় আছে, নদ-নদী মরলেও তার রেখা থাকে। সেই রেখাচিত্রটি আছে বৈকি।
কোথায় হাঁটুপানি, আবার কোথাও বুকপানি। তার উপর আবার কচুরীপানার আস্তর। বেশিরভাগ স্থানে খননের অভাবে পলি জমে ভরাট হয়েছে তলদেশ। সেই ভরাট নদীর বুকে চাষাবাদ করছে মানুষ। যতদূর চোখ যায় শুধুই বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। মাঝ দিয়ে কিছুটা পানিপ্রবাহ। কোথাও বোনা হয়েছে পাট। শুধু তা-ই নয়, গাড়াগঞ্জ এলাকায় নদের জায়গায় করা হয়েছে পুকুর-ইটভাটাও। কে বলবে, কয়েক বছর আগেও এখান দিয়েই বয়ে যেত ¯্রােতঃস্বিনী নদ কুমার। পানি শূন্যতার সুযোগে স্থানীয়রা বিভিন্নভাবে নদ দখল করছেন। ফলে বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ।
কুমার নদে মাছ ধরে একসময় শৈলকুপা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলে সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ নদের মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। তবে নদের নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় একদিকে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। অন্যদিকে জীবিকা হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে জেলে সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ।
জানা যায়, কুমার নদটি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের প্রবহমান মাথাভাঙ্গা নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এরপর মাগুরা সদর উপজেলার পৌরসভা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে নবগঙ্গা নদীতে পতিত হয়েছে। ১৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কুমার নদের পানির প্রধান উৎস ছিল মাথাভাঙ্গা। চুয়াডাঙ্গা জেলার হাটবোয়ালিয়াতে কুমারের উৎসমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও কুমার নদ কালী,ডাকুয়া ও সাগরখালী নদীর মাধ্যমে প্রবাহ পেত। কালী ও ডাকুয়া পানি পেত গড়াই থেকে। কিন্তু জি কে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে এ দুটি নদীর উৎসমুখও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মরে গেছে এই কুমার নদ।
একসময় এই কুমার নদে লঞ্চ, স্টিমারসহ নানান ধরনের নৌযান চলাচল করতো। তখন এটাই ছিল এই এলাকার মানুষের কাছে প্রধান নৌরুট। সেই কুমার নদটিই এখন বিলুপ্তির দারপ্রান্তে।
নাসির মিয়া নামে এক বৃদ্ধ জানান, একসময় যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদ। নৌকায় করে মানুষ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতো। নানারকম পণ্য বাজারে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। নদও ছোট হয়ে গেছে। নদ বললে ভ’ল হবে,দেখলে মনে হয় মরা খাল। কোথাও কোথাও পানি শুকিয়ে হাটুপানিতে ঠেকেছে। দখল,দুষণ,আর পলি জমে ভরাট হয়েছে তলদেশ। নদটি পু:খনন করার দাবিও জানান এই বৃদ্ধ।
দামুকদিয়া গ্রামের জেলে চঞ্চল বলেন,কুমার নদে এখন আর মাছও পাওয়া যায় না, কারণ নদীতে পানি নেই। আমাদের দাবি, নদ খনন ও দুই তীরে যারা অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলেছে তাদের উচ্ছেদ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক।
কৃষক মন্নু মোল্লা বলেন, কুমার নদে পানি না থাকায় এলাকার কৃষকরা নদের বুকজুড়ে ফসলের আবাদ করেন। গবাদি পশুর চারণ ক্ষেত্রও বলা যায়। পানি না থাকায় নদের বুকে অগভীর নলক’প বসিয়ে চলে ধান চাষ।
তৌহিদুল ইসলাম (কুটি) বলেন, পানি না থাকায় এ নদ তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সেচসহ প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভ’গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এখনই সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করে পুনঃখনন না করলে কুমার নদ তার ঐতিহ্য হারিয়ে মরুকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জানান,‘খনন না করায় কুমার নদে পানি প্রবাহ থাকছে না। এমন অবস্থা বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। ইতোমধ্যে নদ-নদী খননের ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। বাজেট আসলেই খননকাজ শুরু করা হবে।
(এসই/এএস/মে ১৯, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- ইনজেকশনের পর নিথর শিশু মুশফিক, পল্লী চিকিৎসককে গণধোলাই
- ‘আমরা যে বাজারে প্রোগ্রাম করবো সেখানে যেন বিদ্যুৎ নিয়ে শয়তানি না করে’
- ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে’
- ধেয়ে আসছে বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’, তিন বিভাগে বন্যার শঙ্কা
- খালেদা জিয়াকে অশালীন কটুক্তি, আ'লীগ নেতার শাস্তি দাবি
- বৃদ্ধ চাচাকে পেটানোর অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
- মহাসড়ক অবরোধ করে টরকী বন্দর ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
- পারমাণবিক অস্ত্র প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
- নগরভবনে সভা করলেন ‘মেয়র ইশরাক’, পেলেন শুভেচ্ছা ক্রেস্ট
- ‘ইরানের সক্ষমতায় বিস্মিত ইসরায়েল’
- পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফরিদপুরে হামলা ভাঙচুর লুটপাট
- নড়াইলে মোটরসাইকেল ও ট্রলির সংঘর্ষে প্রাণ গেল চালকের
- ফরিদপুরে পৃথক অভিযানে গাঁজা-ইয়াবাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- চাটমোহরের রত্নগর্ভা সুফিয়া খাতুনের ইন্তেকাল
- শাহরুখের স্ত্রী গৌরীর রেস্তোরাঁয় ‘গোপন দরজা’
- ‘দুদকের দৃষ্টিতে টিউলিপ অভিযুক্ত’
- স্বামীসহ দুদকের জালে সাবেক হাইকমিশনার মুনা তাসনিম
- বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে কমিটি ঘোষণা স্থগিত
- দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় যুবক গ্রেফতার
- সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন: ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে করণীয়
- কর্ণফুলী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত
- মরুকরণ বাড়ছে নীরবে, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ তলিয়ে যাচ্ছে
- মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান, জানা গেল তারিখও
- সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- ‘রাজনীতিতে একটা স্বস্তিকর পরিস্থিতি এসেছে’
- ঝালকাঠিতে সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণ
- পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল: নৈসর্গিক প্রকৃতির রূপসী কন্যা
- লক্ষ্মীপুর কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু
- ‘শাহবাগীদেরও বিচার করতে হবে’
- জিয়া সেদিন বঙ্গবন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন, 'স্যার, আমার বুক বিদ্ধ না করে বুলেট আপনার গায়ে লাগতে পারবে না'
- দুদকের মামলায় খালাস তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমান
- ‘প্রতিশোধ চাই না, ন্যায়বিচার চাই’
- ‘আমের রপ্তানি ১০ গুণ বাড়বে’
- ‘মাতৃভাষায় যার ভক্তি নাই সে মানুষ নহে’
- শেখ হাসিনাসহ ৩১২ জনের নামে হত্যা মামলা
- ‘পাচারের অর্থ ফেরত আনতে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে’
- অনিশ্চিত মেসি, চিলির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য একাদশ
- নগরভবনে সভা করলেন ‘মেয়র ইশরাক’, পেলেন শুভেচ্ছা ক্রেস্ট
- কারাগারে মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি বিএনপির
- ঝিনাইদহে ট্রাকচাপায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু
- ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা থাকবে না’
- ‘ইরানের সক্ষমতায় বিস্মিত ইসরায়েল’
- বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে
- ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে’
- অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ঈশ্বরদী কলেজে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দুই শিক্ষার্থী আহত, দাবি ছাত্রদলের