E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

নিষ্প্রাণ কাঠে জীবন্ত শিল্পকর্ম

২০২৪ নভেম্বর ২৪ ১৪:৩৯:১২
নিষ্প্রাণ কাঠে জীবন্ত শিল্পকর্ম

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : ডাঙ্গা থেকে নৌকা নিয়ে নদীতে নামাচ্ছেন ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা। কাঁধে অস্ত্র নিয়ে দেশ স্বাধীনের যুদ্ধে যাচ্ছেন কৃষক,শ্রমিক,ছাত্রজনতা। খোলা আকাশে ডানা মেলে উড়ছে যেন জীবন্ত ২ টি বলাকা। পাশেই বাচ্চাদের বুকে নিয়ে বসে আছে ঘুঘু পাখি। আবার শীতের সকালে গাছ থেকে রস নামিয়ে ছুটছেন গাছী। দুলছে ফেনা ওঠা রসের হাড়ি।

গভীর মনোযোগে প্রাণহীন কাঠের বুকে এমন সব শিল্পকর্ম তৈরি করছেন শিল্পী কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু। পাশেই ছড়ানো ছিটানো রয়েছে নানা ধরনের কাঠ কাটার যন্ত্রাংশ। কোনটা দেশ থেকে ক্রয় করেছেন,আবার কোনটা দেশের বাইরে থেকে নিয়ে এসেছেন। এগুলো দিয়ে কাঠ খোদাই করে তৈরি করেছেন গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র,মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিকৃতি,পাখিসহ নানা শিল্পকর্ম।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু গত ৫ বছর ধরে তৈরী করছেন নানা শিল্পকর্ম। পেশায় খামারী কাজী মনিরুল ইসলাম ছোটকাল থেকেই নানা শিল্পকর্ম তৈরী করতেন। করোনকালীন সময়ে ঘরবন্দি হওয়ার পর থেকে পুরোদমে শুরু করেন এই শিল্পচর্চা।


জানা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও করোনাকালে তিনি পুরোদস্তুর শিল্পী হয়ে উঠেছেন। অবসর কাটাতে বাড়ির সঙ্গে থাকা একটা টিনশেডের চারপাশ ঘিরে তৈরি করেছেন কারখানা। আড়ত আর নিজের বাগানের গাছের কাঠ দিয়ে শুরু করেন শিল্পকর্ম। নিষ্প্রাণ কাঠ হয়ে উঠতে থাকে জীবন্ত এক একটি গল্প। একে একে কাঠ খোদাই করে তৈরি করেছেন খেজুরের রস সংগ্রহ করা গাছি, হাঁস, উড়ন্ত বলাকা,ঈগল, বজরা নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিকৃতি, বাংলার ঐতিহ্য বায়োস্কোপ, বংশীবাদকসহ নানা শিল্পকর্ম। নিভৃত গ্রাম বাংলার কোণে অন্যরকম সাধনার ফল দেখতে প্রতিনিয়ত আসেন নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। তার এই শিল্পকর্ম দেখে অভিভুত হন তারা।

মনিরুল ইসলাম ঝিনুর শিল্পকর্ম দেখতে আসা জুয়েল ইসলাম বলেন,‘প্রাণহীন কাঠ এভাবে একটি জীবন্ত শিল্পকর্মে রুপ নিতে পারে তা অজানা ছিল। নিভৃত পল্লীতে বসে এত সুন্দর শিল্পকর্ম তৈরি করছেন এটা অনেকেরই অজানা। আমরা চাই এই কৃতি সন্তানকে সারাদেশব্যাপি সমাদৃত করার জন্য যা যা করার দরকার তা করা হোক। তার পরিশ্রম ও শৈল্পিকতা মূল্যায়ন পাক।’

মনিরুল ইসলাম ঝিনু জানান,‘গ্রামবাংলার ঐহিত্য স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতেই তিনি এসব তৈরী করেন। আগামী দিনে দেশে ও বিদেশে তার এ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী করার ইচ্ছা তার।’

(এসই/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১১ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test