একজন রেবেকা খাতুন ও একটি ‘সারের গ্রাম’
শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : বাড়ির সামনে দুটি টিনের সেড। সেখানে ১২ টি বেডে কেঁচোর সাথে মিশ্রণ করা হচ্ছে গোবর। কোন বেডে সম্পন্ন হওয়া সার তুলে চালা হচ্ছে। কোথাও আবার করা হচ্ছে বস্তাবন্দি।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ডাবনা গ্রামের পঞ্চায়ার্ধো নারী উদ্যোক্তা রেবেকা খাতুনের এমন কর্মযজ্ঞ নিত্যদিনের। এই সেডেই উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করে রেবেকা খাতুন হয়েছেন স্বাবলম্বী।
জানা যায়, ভ্যানচালক স্বামী আক্তার হোসেনের স্বল্প আয়ে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত।
কয়েক বছর আগে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নেন রেবেকা খাতুন। কুড়ে ঘরের বারান্দায় প্রথমে ৩টি চাড়িতে শুরু করেন উৎপাদন। সেই থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি রেবেকার।
বর্তমানে তিনি বড় পরিসরে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করছেন এবং স্থানীয় কৃষকদের কাছে এটি সরবরাহ করছেন। এ থেকে হওয়া আয় দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি কিনেছেন জমি,করেছেন বাড়ি। রেবেকা খাতুন এখন এলাকার একজন অনুকরনীয় কৃষি উদ্যোক্তা। তাকে দেখে ওই গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে ভার্মি কম্পোস্ট। এমনকি গ্রামের নাম পাল্টে হয়েছে ‘সারের গ্রাম’। পরিশ্রম আর একাগ্রতা থাকলে যে সফলতা অর্জন করা সম্ভব,তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই রেবেকা খাতুন। মাটির প্রতি ভালোবাসা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে তিনি ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়িতেই তৈরি করছেন সার। বিক্রি করছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে।
রেবেকা খাতুন বলেন,‘আগে অভাবে ঠিকমতো খেতে পারতাম না। সন্তানদের লেখাপড়াও করাতে পারিনি। কুঁড়ে ঘরে থাকতাম। তবে এখন সার বিক্রির টাকা দিয়ে বাড়ি করেছি। ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। জমি কিনেছি। সংসারে কোন অভাব নেই। আমার দেখাদেখি গ্রামের প্রতিটা ঘরেই এই সার তৈরি হচ্ছে। আমি চাই কোন নারী বাড়িতে বসে না থেকে এই কাজ শুরু করুক। দেশের প্রতিটা ঘরেই আমার মত রেবেকা তৈরি হোক।’
কৃষি অফিস জানায়,জৈব সার উৎপাদনে অন্যান্য যে কাঁচামালের যোগান লাগে তার মধ্যে ট্রাইকো কম্পোষ্টে ট্রাইকো ডার্মা পাউডার,গরুর গোবর, আখের গাদ,কলাগাছ, কচুরিপানা, ছাই,খৈইল, চিটাগুড়,কাঠের গুড়া,সবজীর উচ্ছিষ্ট, ডিমের খোসা,নিম খৈইল, হাড়ের গুড়া, শিং কুচি, গাছের পাতা পচা,ব্যবহৃত চা পাতা সহ ইত্যাদি কাঁচামাল লাগে। এগুলো একত্র করে পর্যায়ক্রমে সেডে পচন ক্রিয়ার মাধ্যমে ৪৫-৫৫ দিনের মধ্যে উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার বানানো হয়। আর ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো কম্পোষ্টে গরুর গোবর, কলাগাছ ও কচুরিপানা লাগে। কেঁচো এগুলো খেয়ে যে মল ত্যাগ করে তাই উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার। এসব জৈব সারে পিএইচ, জৈব কার্বন,নাইট্রোজেন,ফসফরাস,পটাশিয়াম, কপার, সালফার, জিংক, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম সহ রয়েছে নানা বৈজ্ঞানিক উপাদান।
এই জৈব সারের রয়েছে নানা উপকারিতা। ফলন বৃদ্ধি ও গুনগত মান বাড়ায়,সব ঋতুতে সকল ফসলে ব্যবহার করা যায়,জৈব সার বীজের অংকুরোদগমে সহায়তা করে,মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে,মাটির গঠন ও প্রকৃত গুন রক্ষা করে,মাটির উপকারী জীবাণুগুলোর বংশবৃদ্ধি ও কার্যকারিতা বাড়ায়, মাটিতে রস মজুদ রাখতে সহায়তা করে,ফলে অধিক সেচের প্রয়োজন হয় না। জৈব সার ব্যবহারের ফলে আনুপাতিক হারে রাসায়নিক সারের মাত্রা কমানো যায়,মাটির ভেতরে বাতাস চলাচলে সাহায্য করে, ফসলের সকল প্রকার খাদ্য যোগান দেয়। এই সার মাটিতে দেয়ার পর ৬ থেকে ১৮মাস পর্যন্ত প্রভাব থাকে যা পরবর্তী ফসলের জন্যেও কাজে লাগে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্ঠি চন্দ্র রায় বলেন,‘ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্যেক্তাদের সব ধরনের সহযোগীতার পাশাপাশি কারিগরি প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। জেলায় ২ হাজার ৪’শ জন উদ্যোক্তা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির সাথে জড়িত। এ বছর উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৪’শ মেট্রিকটন জৈব সার ।
(এসই/এএস/মার্চ ২২, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- ‘জামায়াতকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না, ভোটও দেবে না’
- কমলো সোনার দাম ভরি ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা
- চাটমোহরে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল
- প্রকৃতির উপহার বেতফল সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যবর্ধক
- ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ জাবিতে রাত ১০টার পর যেকোনো অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ
- পাকবাহিনীর সঙ্গে আজমিরীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়
- পাংশায় ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
- খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫৬০ মেঃটন খাদ্যশস্য কালোবাজারে, দুই কোটি টাকা খাদ্য কর্মকর্তার পেটে
- কাপাসিয়ায় বিএনপি প্রার্থীর ব্যাপক গণসংযোগ, উঠান বৈঠক জনসভায় পরিনত
- আল্লাহ আগামীতে যেন দাঁড়িপাল্লাকে সংসদে পাঠায়: আমির হামজা
- বিএনপি নেতা ডা. শহিদুল আলমের দলীয় মনোনয়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
- ধামরাইয়ে সাধক অমৃত লাল ভক্তের ১৭৭তম বার্ষিকীতে সপ্তাহব্যাপী উৎসব
- সভাপতি আহাদ আলী মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম
- আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস: সহনশীলতা ছাড়া শান্তি অসম্ভব
- বাগেরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মৃত্যু
- বাগেরহাট কারাগারে ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু
- বাগেরহাটে পাউবো’র জমি দখলের মহোৎসব
- আ.লীগের ঢাকা লকডাউন কর্মসূচির ঘটনায় গোপালগঞ্জে গ্রেফতার ৫
- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে ৫ প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড
- মনোনয়ন না পাওয়ায় হালিমের কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ
- জামালপুরে কারাগারের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার
- ঈশ্বরদী ইপিজেডে অক্সিজেন সংকটে ৩৫ নারী শ্রমিক অসুস্থ
- ১৯৩ জনের নামে মামলা, ৪ গ্রাম পুরুষশূন্য
- ‘দিনের ভোট দিনেই হবে, রাতে হওয়ার সুযোগ নেই’
- সহনশীলতা: সামাজিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ভিত্তি
- নড়াইলের হাটবাজারে পাকা তালের সমারোহ, তবে দাম বেশি
- 'যে বুলেট তোমার প্রাণ কেড়েছে সেই বুলেটকে আমি কথা দিয়েছি, আমায় মেরো না; আমি মুজিবের মতো বাংলা ও বাঙালিকে ভালোবাসবো না'
- নিমে নিরাময় হয় যে সব রোগের
- ‘ঐ চেয়ার নির্লজ্জদের জন্যই’
- নিরাপদ সমুদ্র পর্যটনের জন্য জরুরি নির্দেশনা
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- হাজারো মানুষের তারুণ্যের জাগরণ ‘অনন্যা’
- উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
- আবারো রগ কেটে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছে : মোমিন মেহেদী
- ‘ভারত নোংরা খেলা খেলতে পারে, দ্বিমুখী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান’
- রাজশাহীতে আশুরা পালনে মানতে হবে যেসব বিধিনিষেধ
- ‘সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন’
- মেক্সিকোতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪
- আজ জালালপুর গণহত্যা দিবস
- ডহর রামসিদ্ধি : নৌকার গ্রাম
- ‘বঙ্গবন্ধু একটি সুন্দর ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন’
- মামদানির জয়, প্রথম মুসলিম মেয়র পেলো নিউইয়র্ক
- পাকবাহিনীর সঙ্গে আজমিরীগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়
- ভণ্ডামি আর নাটক থেকে মুক্তি চান আঁখি আলমগীর
- গাজীপুরে ৩৯ দফা দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ
-1.gif)








