E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সেবার নামে প্রহসন, নাগরিকরা কর দিয়ে কিনছেন ‘অবহেলা’

২০২৫ মে ২৩ ১৩:১৫:৩১
সেবার নামে প্রহসন, নাগরিকরা কর দিয়ে কিনছেন ‘অবহেলা’

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : পুরো পৌর এলাকাজুড়ে যেন খানা-খন্দের রাজত্ব। বৃষ্টির মৌসুমে এই রাস্তাগুলো রূপ নেয় জলকাদায় ভরা ফাঁদে। পৌরসভার সামনেই নেই সঠিক ড্রেনেজ,যা প্রশাসনের উদাসীনতার জ্বলন্ত প্রমাণ। পৌর কর নিয়মিত পরিশোধ করেও নাগরিকরা পাচ্ছেন না ন্যূনতম সেবা। রাস্তা-ঘাট ভাঙা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপ্রতুল বা নেই বললেই চলে, এমনকি কিছু পৌরসভার সামনে পর্যন্ত নেই ড্রেন। উন্নয়ন কার্যক্রমে বাস্তবতা ও প্রয়োজনের প্রতিফলন নেই বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের।

সচেতন মহল বলছে, সেবার নামে প্রহসন না করে, প্রয়োজন বাস্তব ভিত্তিক সর্বজনীন উন্নয়ন। ঝিনাইদহের ৬টি পৌরসভার চিত্র এমনই। পৌরসভা গুলো যেন নাগরিক ভোগান্তির প্রদর্শনী।

স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে কোনো সড়ক সংস্কার হয়নি। বিদ্যুৎ থাকলেও অনেক স্থানেই নেই সড়কবাতি। রাত নামলেই গোটা শহর ডুবে যায় অন্ধকারে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সবকিছুতেই চরম অব্যবস্থা। জেলার ৬টি পৌরসভা মধ্যে ৫টিই প্রথম শ্রেণীর। অথচ নাগরিক সেবায় নেই প্রথম শ্রেণীর ছাপ।

নাগরিকরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের সেবাও যেন এর চেয়ে অনেক ভালো! নাগরিক অধিকার আর কর দেয়ার দায় একপাশে থাকলেও পৌর প্রশাসনের দায়হীনতা যেন সীমা ছাড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই পৌরসভাগুলো কি কেবল নামেই পৌরসভা, না কি কেবল কর আদায়ের যন্ত্র? প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ এসব পৌরসভায় বসবাস করলেও অধিকাংশই প্রতিনিয়ত ভোগেন নানা সমস্যায়।

হরিণাকুন্ডু পৌর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়,সড়কজুড়ে খানাখন্দ। বর্ষা মৌসুমে চলাচল হয়ে পড়ে কঠিন। পৌরসভার সামনে পর্যন্ত নেই সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। জনসেবা নয়,প্রশাসনের উদাসীনতাই যেন বেশি চোখে পড়ে।

মহেশপুর পৌরসভার চিত্রও একই। বছরের পর বছর রাস্তার সংস্কার হয়নি। বহু এলাকায় সড়কবাতি নেই,ফলে সন্ধ্যার পর শহর অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। পরিচ্ছন্নতা,বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পানিনিষ্কাশনেও দেখা গেছে চরম বিশৃঙ্খলা।
সচেতন মহল বলছে,চোখে ধুলা দিয়ে নয়,বরং টেকসই পরিকল্পনায় ও বাস্তব ভিত্তিক উন্নয়নের মধ্য দিয়েই দিতে হবে নাগরিক সেবার জবাব। শুধু কর আদায় নয়,প্রকৃত সেবা নিশ্চিত করেই স্থানীয় সরকারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

হরিনাকুন্ডুর স্থানীয় রাজুল ইসলাম বলেন,‘প্রতিদিন রাস্তায় চলতে গিয়ে পায়ে কাদা লাগে,কেউ কেউ পড়ে গিয়ে আহতও হয়। বছরের পর বছর একই অবস্থা। কর দিই,কিন্তু সেবা কোথায়?’

মহেশপুরের বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন,‘সন্ধ্যার পর বাইরে বের হওয়া দায়। চারপাশে অন্ধকার, রাস্তার অবস্থাও করুণ। পৌরসভার লোকজন শুধু কর তুলতে জানে,কিন্তু কাজের সময় তাদের পাওয়া যায় না।’
সচেতন নাগরিক এম রায়হান বলেন,‘নামমাত্র উন্নয়নের অভিনয় দিয়ে জনগণকে বেশি দিন বোকা বানানো যাবে না। সময় এসেছে টেকসই পরিকল্পনায় এগিয়ে যাওয়ার।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন,‘পৌরসভাগুলোর উন্নয়ন কার্যক্রম নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। ইতিমধ্যে প্রশাসকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

(এসই/এএস/মে ২৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ জুন ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test