রূপকথার গল্প

রাজা-আর-রাক্ষস
এক দেশে ছিল এক রাজা। তিনি অনেক ক্ষমতাধর। তিনি ছিলেন ভীষণ দয়ালু। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার ছিল অসীম ভালোবাসা। প্রজাদের সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনা নিয়েই তিনি সারাক্ষণ ভাবতেন। ফলে সেই রাজ্যের মানুষেরা ছিল খুব সুখী। কোনো কিছুর অভাব ছিল না তাদের। তারাও তাদের রাজাকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন।
এতকিছু হলে কী হবে! রাজার মনে শান্তি ছিল না। দারুণ অসুখী ছিলেন সেই রাজা। কারণ তার একমাত্র সন্তান, রাজ্যের রাজকন্যা খুব অসুস্থ। সে দাঁড়াতে পারে না, বসতে পারে না। কথাও বলতে পারে না। দিন-রাত কেবলই তাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। রাজকন্যার বয়স পনেরো হলেও তাকে দেখতে এখনও শিশুটির মতোই লাগে। ভীষণ কষ্ট তার। সবার মতো সে চলাফেরা করতে পারে না, মনের কথা বলার কোনো ভাষাও নেই তার। ক্ষুধা পেলেও কাউকে জানাতে পারে না। জীবিত থেকেও সে যেন মৃত। সবার মাঝে থেকেও সে যেন সবার থেকে দূরে।
মনের দুঃখে একদিন রাতের অন্ধকারে কাউকে কিছু না বলে রাজা বেরিয়ে পড়লেন রাজপ্রাসাদ থেকে। সবাই যখন গভীর ঘুমে অচেতন, তখন পোশাক পাল্টে চলে গেলেন রাজ্য ছেড়ে।
ঘুরতে ঘুরতে বছরখানেক পর রাজা এসে পড়লেন এক জঙ্গলে। সে কী ভয়ংকর জঙ্গল! বাঘ, ভালুক আর নানা বিষাক্ত সাপে পরিপূর্ণ সেই জঙ্গল। এদিকে রাজার ভীষণ ক্ষুধা পেয়ে গেল। খাদ্যের সন্ধানে রাজা ঘুরে বেড়াতে থাকেন এদিকে-সেদিকে। কিন্তু বনের ভেতরে এত গাছ, কোনো গাছে কোনো ফল নেই। অনাহারে-তৃষ্ণায় রাজার প্রাণ যায় যায়। শেষে ক্লান্ত হয়ে এক গাছের নিচে বসে পড়লেন রাজা। ঠিক সেই সময় গাছের পাশ দিয়ে কলসি কাঁখে যাচ্ছিল এক ছোট্ট মেয়ে। কী সুন্দর মিষ্টি দেখতে! ছোট্ট ফুটফুটে গোলাকার মুখে দুটি বড় বড় চোখ। আর সেই চোখে যেন রাজ্যের কৌতূহল।
রাজা তো ভীষণ অবাক। কী আজব ব্যাপার! এই ভয়ঙ্কর জঙ্গলে এত সুন্দর ছোট্ট মেয়ে এলো কোথা থেকে? রাজা মেয়েটিকে ডাকলেন। মানুষের কণ্ঠ শুনে মেয়েটি তো প্রথমে অবাক। পরে রাজাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেল। মেয়েটি এগিয়ে যেতেই রাজা বললেন- “মা, দারুণ তৃষ্ণা পেয়েছে। একটু জল খাওয়াবে?” মেয়েটি জল দিতেই রাজা যেন প্রাণে বাঁচলেন।
তারপর বললেন, “কে তুমি মা? এই ভয়ঙ্কর জঙ্গলে একা একা কী করছ? এখানে এলে-ই বা কোথা থেকে?”
মেয়েটি জানাল, এই জঙ্গলের মধ্যেই একটা ছোট্ট কুটিরে মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে থাকে। বাবা মারা গিয়েছেন জন্মের আগেই। আগে মা আর মেয়ে দুজনে জঙ্গল থেকে ফুল তুলে মালা গেঁথে বিক্রি করত। মা অসুস্থ বলে এখন তাকে একা একাই সব কাজ করতে হয়। সারা দিন ফুল বিক্রি করে পানি নিয়ে বাড়ি ফিরছিল মেয়েটি। আর তখনই রাজার সঙ্গে দেখা।
মেয়েটি রাজাকে বলল, “চলুন আমাদের বাড়িতে। আমার মা আপনাকে দেখে খুব খুশি হবেন।”
মেয়েটির কথায় রাজা কেমন যেন অভিভূত হয়ে গেলেন। মেয়েটির সঙ্গে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, একটি জীর্ণ পর্ণকুটির। ভেতরে একটা পাটি বিছিয়ে শুয়ে আছে এক অসুস্থ নারী। মেয়েটি মায়ের সঙ্গে রাজার পরিচয় করিয়ে দিল। মেয়েটির মায়ের সঙ্গে অনেক কথা হলো রাজার। রাজা কিন্তু নিজের পরিচয় দিলেন না। কেউ বুঝতেই পারল না যে তিনি আসলে একজন পরাক্রমশালী রাজা। কথা প্রসঙ্গে রাজা জানলেন, এই মেয়েটির জন্ম আর তার নিজের মেয়ের জন্ম একই দিনে। ভীষণ কৌতূহল হলো রাজার। মেয়েটির প্রতি তার আরও তীব্র মমতা তৈরি হলো। সে সারাক্ষণ মেয়েটির সঙ্গে সঙ্গে থাকে। তার সঙ্গে গল্প করে। তার জন্য বন থেকে ফুল কুড়িয়ে আনে। শেষে ফুল দিয়ে মেয়েটি মালা গাঁথে। এমনি করেই দিন যায়। মেয়েটিকে পেয়ে রাজা যেন সব দুঃখ ভুলে গেলেন। মেয়েটিও যেন ভীষণ খুশি। এই মানুষটিকে সেও একসময় ‘বাবা’ বলে ডাকতে শুরু করে দিল।
এদিকে এক রাক্ষস মেয়েটিকে খাওয়ার পরিকল্পনা করল। একদিন বন থেকে রাজার ফিরতে দেরি হয়ে যায়। ওদিকে সন্ধ্যাও ঘনিয়ে আসে। বাবা তো ফিরছে না। দুশ্চিন্তায় মেয়েটি ছোটাছুটি করতে থাকে। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে খুঁজতে থাকে বাবাকে। সেই সুযোগে রাক্ষসটি এসে মেয়েটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেয়েটি তো ‘বাবা’ ‘বাবা’ বলে চিৎকার শুরু করে দেয়। আর ঠিক সেই সময়েই রাজা এসে উপস্থিত। রাক্ষস-বধের মন্ত্রও তার জানা। দুষ্টু রাক্ষসদের এর আগে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন তিনি।
তিনি সরাসরি আক্রমণ করলেন রাক্ষসকে। আর যায় কোথায়, দুজনের মধ্যে শুরু হয়ে গেল তুমুল যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রের জোরে জয় হলো রাজারই। রাজা যখন রাক্ষসকে প্রাণে বধ করতে গেলেন, তখন রাক্ষস কেঁদেকেটে কাকুতি-মিনতি করে বলল, “হে পরাক্রমশালী বিক্রমপুরের রাজাধিরাজ, দয়া করে আমাকে প্রাণে বধ করবেন না। তার চেয়ে বরং আমাকে আজীবন দাস বানিয়ে রাখুন। বিনিময়ে আমি আপনাকে এমন এক সত্য বলব, যার কারণেই আপনার এত কষ্ট।”
কী সত্য? রাজকন্যার অসুখের পেছনে কোনো সত্য আছে নাকি? রাজার বেশ কৌতূহল হলো। তিনি রাক্ষসের প্রস্তাবে রাজি হলেন। তাকে না মেরে জানতে চাইলেন সেই সত্যের ইতিহাস।
রাক্ষসটি বলতে শুরু করল। অনেক আগে আপনি এক রাক্ষসকে হত্যা করেছিলেন। সেই রাক্ষসের মা প্রতিজ্ঞা করে, ছেলে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার। সবকিছুর বিনিময়ে হলেও রাজার ক্ষতিসাধন সে করবেই। আর সে জন্যই রাজার স্ত্রী যখন সন্তানসম্ভবা, তখন সে জাদুবলে রানির গর্ভ থেকে রাজকন্যাকে সরিয়ে এই কুটিরের নারীর গর্ভে স্থাপন করেন। রাজকন্যার জন্ম হয় এই কুটিরে। এই মেয়েটি-ই আসলে রাজার মেয়ে, বিক্রমপুরের রাজকন্যা। ওদিকে রাজার ঘরে জন্ম নেয়া অসুস্থ শিশুটি আসলে রাজকন্যার অর্ধাংশ। ওদের দুজনকে যদি কোনো পূর্ণিমার রাতে এক বিছানায় শোয়ানো যায়, তবে তারা দুয়ে মিলে সম্পূর্ণ মানুষে পরিণত হবে।
রাক্ষসের কথা শুনে রাজা মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। মেয়েটিও তার মাকে নিয়ে ফিরে এলো রাজপ্রাসাদে। বহুদিন পর রাজাকে পেয়ে প্রজারাও ভীষণ খুশি। সঙ্গে রাজকন্যা পাওয়ার খবরে তাদের তো আনন্দের আর বাঁধ মানল না। তারপর এক পূর্ণিমা রাতে দুই রাজকন্যাকে এক বিছানায় শোয়ানো হলো। পরদিন সকালে দেখা গেল, ঘর থেকে বের হয়েছে এক অনিন্দ্য সুন্দরী রাজকন্যা। দিন দিন সে বিদ্যা-বুদ্ধিতেও তার পারঙ্গমতার পরিচয় দিতে লাগল। রাজকন্যার রূপ-গুণের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ল দেশ-দেশান্তরে। বিক্রমপুরে রাজা-রাজকন্যা-প্রজা সবাই মিলে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাতে লাগল।
আর সেই দুষ্টু রাক্ষস? রাজার দাস হয়ে দিন-রাত তাকে করতে হয় শক্ত শক্ত কাজ। এভাবেই সে তার অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করতে থাকে।
পাঠকের মতামত:
- ‘ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া উচিত’
- ‘জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা জড়িত ছিল’
- আব্দুল গফুর বি.এ.কে আহ্বায়ক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটি গঠিত হয়
- শৈলকুপায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বক্তব্য দেওয়ায় ইউপি সদস্যকে হাতুড়িপেটা
- গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে হাজতির মৃত্যু
- কাপ্তাইয়ে আহত ফারুক খানকে দেখতে গেলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ধর্ম বিষয় সম্পাদক এ,এম নাজিম
- কাপ্তাইয়ে মহান মে দিবস ও শ্রমিক দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা
- আশাশুনিতে যুবদল নেতার নেতৃত্বে এক নারীর বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
- পাটকেলঘাটায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি ডিসিআর দেওয়ার চেষ্টা
- যৌতুকের দাবিতে এক সন্তানের জননীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ
- রাঙ্গামাটিতে অগ্নিকাণ্ডে ৩০ দোকান পুড়ে ছাই
- ‘গেমের মাধ্যমে নয় দক্ষতা অর্জন করে বৈধ পথে বিদেশ যেতে হবে’
- খানপুর হাসপাতালে বেড়েছে চুরির ঘটনা, বিপাকে রোগী-স্বজনরা, নেই কোন প্রতিকার
- ফরিদপুরে কামাল ইউসুফ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প
- আসামিপক্ষের ৪০ বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসি
- রাজবাড়ীতে বালুবাহী ড্রাম ট্রাকের চাপায় ২ স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মৃত্যু
- নড়াইলে বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি আ. কাদের শিকদারের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
- বোয়ালমারীতে মহিলা কলেজে মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা
- সোনারগাঁয়ে অজ্ঞাত দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- আলোচিত সেই কবরস্থানের সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত
- ৬৫ বাছুর ফেরত পাঠালেন ইউএনও
- ভায়রার মেয়েকে ধর্ষণ, ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই নেতার পদ স্থগিত
- ড্রামের মধ্য থেকে উদ্ধার হলো দশ কেজি গাঁজা
- সবার নজর কেড়েছে ৩০ মণ ওজনের ফণী
- মওদুদের এলাকায় বিএনপির সাংগঠনিক দেখভালের দায়িত্বে জেলা বিএনপি
- `বিভেদ আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে'
- তারকাদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা আজ
- ‘ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা করছে সিরিয়া’
- ডিবিএইচ ফাইন্যান্স’র ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
- প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আহত ৩
- কমলো সোনার দাম, ভরি ১৬৮৯৭৬ টাকা
- স্বাভাবিক কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনে বেড়েছে বাতাসের গতি
- ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন করা যাবে না’
- 'আমারে নাড়ায়েন না বিপদ বাড়বেনে'
- নতুন ব্রি ধান প্রিমিয়ার কোয়ালিটির বাসমতি চালের আমদানী নির্ভরতা কমবে
- আল জাজিরার তথ্যচিত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা
- নোয়াখালীতে বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে আ.লীগ নেত্রীর জমি দখলের অভিযোগ
- চার থানা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৬০০ হত্যা মামলার তদন্তই শেষ করতে পারেনি পুলিশ
- ঈদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ১৯ দিন
- দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া পেল স্যামসাং গ্যালাক্সি এ০৬
- পদ্মার এক কাতল ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি
- সোনাতলায় মহান মে দিবস পালিত
- ধর্ষণের ভিডিও প্রচারের ভয়ে কিশোরী নিলার আত্মহত্যা, আরো এক আসামি গ্রেফতার