খড়, কয়লা আর সীমদানার গল্প
নাহার তৃণা
এক গ্রামে খুব গরিব এক বুড়ি বাস করতো। বুড়িটা এতটাই গরিব ছিল যে ঠিক মতো খেতেও পেতো না। একদিন বুড়ি একটা ক্ষেত থেকে মালিকের বাতিল করা কিছু সীমের দানা কুড়িয়ে নিয়ে এলো। ঠিক করলো সীমের দানাগুলো সে সিদ্ধ করে খাবে। খুব বেশি ক্ষিদে পাওয়ায় বুড়ির যেন তর সইছিল না। কয়লাতে আগুন ধরানোর জন্য কিছু খড়ে আগুন ধরিয়ে চুলোতে গুঁজে দিলো।সীমের দানা গুলো চুলোয় বসানো হাড়িতে তাড়াহুড়ো করে দেবার সময় একটা সীমের দানা মেঝেতে খড়ের পাশে গিয়ে পড়লো। বুড়ির সেটা চোখে পড়লো না। কিছুক্ষণ পর একটুকরো কয়লা জ্বলন্ত চুলো থেকে লাফ দিয়ে মেঝের খড় আর সীমের দানার মাঝখানে ঝুপ করে এসে পড়লো। এ ব্যাপারটাও বুড়ির চোখ এড়িয়ে ঘটলো। তার সব মনোযোগ হাড়ির দিকে। বুড়ি যখন খাওয়ার চিন্তায় অস্হির, তখন মেঝের খড় ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করলো, "বন্ধুরা তোমরা কে কোত্থেকে এলে বলো দেখি?"
কয়লা বললো, "বড় বাঁচা বেঁচে গেছি বাবা! চুলোর আগুন থেকে পালিয়ে বেঁচেছি। নইলে এতক্ষণে পুড়ে ভাজা ভাজা হয়ে যেতাম।" সীমের দানা রিনরিনে গলায় বললো, "চামড়ায় আঁচ লাগবার আগেই পালাতে পেরে প্রাণে বেঁচেছি। আমার বেচারা বন্ধুদের মতো না হলে আমাকেও বুড়ি হাড়িতে পুরতো, আর আগুনের আঁচে গলে এতক্ষণে আমি স্যুপ হয়ে যেতাম।" একটা লম্বা দম নিয়ে খড় বললো, "আমারও একই দশা হতো বন্ধুরা। বুড়ি যেভাবে চুলোয় আমার ভাইদের ঠেসেঠুসে দিয়েছে, ওরা সব্বাই জ্বলে পুড়ে ধোঁয়া হয়ে গেছে। ভাগ্যিস বুড়ির আঙুলের ফাঁক গলিয়ে টুপ করে আমি নীচে পড়েছিলাম। নইলে আমিও এতক্ষণে ভাইদের মতো ধোঁয়া হয়ে পাক খেয়ে খেয়ে বাতাসে মিলিয়ে যেতাম।"
কয়লা প্রশ্ন করলো, "এখন আমরা কী করবো বলো দেখি?"
ঠাণ্ডা মাথার সীমের দানা ধীরস্হির ভাবে বললো ,"ভাগ্যের জোরে আমরা তিন বন্ধু যখন বেঁচে গেছি, তখন আমাদের তিনজনের এক সঙ্গেই থাকা উচিত। তবে এখানে বেশিক্ষণ থাকলে নতুন কোন বিপদ এসে হাজির হতে পারে। চলো, আমরা নিরাপদ কোথাও পালিয়ে যাই।"
সীমের দানার প্রস্তাব অন্য দুজনের খুব পছন্দ হলো। তিন বন্ধু তখনই নিরাপদ জায়গার খোঁজে চটপট বেরিয়ে পড়লো। হাঁটতে হাঁটতে তারা ছোট্ট এক নদীর পাড়ে এসে পৌঁছালো। কিন্তু নদী পার হবার জন্য তারা কোনো সেতু বা নৌকা কিচ্ছু দেখতে পেলো না। মহা চিন্তায় পড়ে গেল কয়লা আর সীমের দানা। খড় তখন দুজনকে সান্ত্বনা দিয়ে বললো, "অত্ত ভেবো না হে। আমার মাথায় একটা চমৎকার বুদ্ধি এসেছে। বলছি শোনো, আমি শুয়ে পড়ে আমার শরীরটা নদীর এপাড় ওপাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেবো। তোমরা এক এক করে নদীটা পার হয়ে যাবে।"
কথা মতো খড় সটান শুয়ে পড়ে নদীর এপাড় ওপাড় পর্যন্ত নিজের শরীরটা ছড়িয়ে দিলো। কয়লা বেশ ডাটিয়াল একটা ভাব ধরে খড়ের তৈরি করা নতুন সেতুর উপর দিয়ে গটমট করে রওনা দিলো। কিন্তু মাঝ বরাবর গিয়ে সেতুর নীচ দিয়ে জলের স্রোতের শব্দ শুনে সেদিকে তাকাতেই কয়লার আত্মা খাঁচা ছাড়া হবার উপক্রম হলো। ভয়ে একদম কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে গেল সে। নট নড়ন চড়ন। কয়লার টুকরা এতই ভয় পেয়েছে যে সামনে এগোনোর জন্য আর কিছুতেই সে নড়তে চড়তে পারছিল না। এদিকে জলন্ত কয়লা একজায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে খড় বেচারার শরীর পুড়তে শুরু করলো। পুড়তে, পুড়তে, পুড়তে সে দু'টুকরো হয়ে নদীতে পড়ে গেল। খড় পড়ে যাওয়া মাত্রই কয়লাও হুড়মুড়িয়ে গিয়ে জলে পড়লো। জলন্ত কয়লা জলে পড়ে হিসহিস শব্দ তুলে শেষবারের মতো নিঃশ্বাস নেবার চেষ্টায় খাবি খেতে খেতে মারা গেল।
কয়লা আর খড়ের পরিণতির পুরোটা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ দেখছিল সীমের দানা। দু্ই সঙ্গীর ওরকম করুণ পরিণতি দেখে সীমের দানা দুঃখ না পেয়ে বরং বেদম হাসিতে ভেঙে পড়লো। সীমের দানা পেটে ধরে হাসতেই থাকলো। থামতে পারে না এমন হাসি। হাসতে, হাসতে, হাসতে ফট্টাশ করে সীমের দানা পেট গেল ফেটে। খড় আর কয়লার মতো সেও আরেকটু হলে অক্কা পেতে যাচ্ছিল। কিন্তু নদীর পাড়ে একটা গাছের ছায়ায় যাত্রা বিরতি দিয়ে এক দর্জি বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। দর্জিটা খুব দয়ালু। সীমের দানার পেট ওভাবে ফেটে যেতে দেখে তার খুব মায়া হলো। সে তাড়াতাড়ি সুঁই সুতা বের করে, যত্ন নিয়ে সীমের দানার পেট সেলাই করে দিলো। সীমের দানা প্রাণে বাঁচলো। তার জীবন বাঁচানোর জন্য দর্জিকে ধন্যবাদ দিতে অবশ্য ভোলেনি সীমের দানা। কিন্তু দর্জিটা সীমের দানা পেট কালো সুতোয় সেলাই করেছিল বলে সীমের দানা দানার শরীরে একটা কালো দাগ হয়ে গেল। সেই থেকে কালো দাগটা সব সীমের দানার গায়ে এখনও দেখা যায়।
(মূল গল্প : The Straw, the Coal, and the Bean by The Brothers Grimm)
পাঠকের মতামত:
- ‘আমি কারাগারে বৈষম্যের শিকার’
- ইয়াহিয়া খান আগামীকাল করাচী থেকে লারকানায় পৌঁছবেন
- স্বর্ণের দাম বাড়ল ভরিতে ১১৫৫ টাকা
- ‘তামাক পণ্যের রাজস্বের চেয়ে চিকিৎসায় ব্যয় বেশি’
- ৪ বছর মেয়াদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রার্থীর বয়স ২১ করার সুপারিশ
- রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ২ হাজার ৮৫ মামলা
- ‘আমি ধূমপান ছেড়ে দিয়েছি’
- ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস
- পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক মতাদর্শ না দেখার সুপারিশ
- ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে আবারও নির্বাচনের প্রস্তাব
- বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তনের সুপারিশ
- নারায়ণগঞ্জে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে নবনিযুক্ত ডিসির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
- ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন সবচেয়ে সৎ রাজনীতিবিদ’
- বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা জোট গড়তে চায় পাকিস্তান
- মার্সেল ডিস্ট্রিবিউটর সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
- বাগেরহাটে দুই শতাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীকে বিনামূল্যে রক্ত প্রদান, খুশি রোগী ও স্বজনরা
- সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উপলক্ষে মতবিনিময় সভা
- ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ ও সংবিধানে পাঁচ মূলনীতি চায় সংস্কার কমিশন
- ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা
- ‘সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে’
- টিউলিপের পদত্যাগে তোপের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
- ‘হত্যার বিচার না করতে পারলে আমাদের বাঁচার অধিকার নেই’
- আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা নিন্দনীয় ও দুর্ভাগ্যজনক: ঐক্য পরিষদ
- নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন
- পাংশায় ৪৬তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন
- একমাস পর সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত ভারতে
- বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির বিষ
- খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের সড়ক অবরোধ
- মাকে বাঁচাতে জবি শিক্ষার্থীর আকুতি
- ‘পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে’
- ‘পাকিস্তানের আক্রমণ ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করতে হবে’
- পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা
- নিউ ইয়র্কে সাকিব আল হাসানের নয়া কৌশলে চাঁদাবাজি
- শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে নানা আয়োজন
- বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল : কৃষিমন্ত্রী
- তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে
- জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ভিসা দেয়া সম্ভব নয় : হোয়াইট হাউজ
- আল জাজিরার প্রতিবেদনে ১৫ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা
- ইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০১ আইনজীবীর আবেদন
- আরও কমল সবজির দাম
- জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির রেজাউল সাতদিনের রিমান্ডে
- 'আমি নিশ্চিত, পিতা মুজিব যদি রাষ্ট্রপতির প্রটোকল মেনে বঙ্গভবনে থাকতেন, তাহলে বাঙালির এতো বড় মহাসর্বনাশ কেউ করতে পারত না'
- গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ধাপে ভর্তি পরীক্ষা
- বান্দরবানে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ২
- হাইকোর্টে শুনানি কালেই প্রবীরের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ, অপেক্ষা নতুন বেঞ্চের