E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কে এই হাইব্রিড সাংবাদিক ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল?

২০১৬ এপ্রিল ০৮ ১৭:২৪:৫৫
কে এই হাইব্রিড সাংবাদিক ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল?

বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট খোকন হত্যা মামলা, জাকিরের হাত কাটা মামলা, খানপুরা টেক্সটাইলের যন্ত্রপাতি চুরির মামলার আসামি ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল রুই-কাতলাদের নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় দখল করে নিয়েছে ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর প্রেসক্লাব। সে এখন ওই প্রেসক্লাবটির সভাপতি।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে সভাপতির পদটি দখল করেছেন ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল। এই ঘটনা নিয়ে ফরিদপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের মনে গভীর ক্ষোভ-যন্ত্রণা থাকলেও কেউ টু শব্দটি করেন না, রাজনৈতিক রুই-কাতলাদের ভয়ে, যারা একের পর এক জোর জবরদস্তি দখল করে নিয়েছেন, নিচ্ছেন ফরিদপুরের বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও সামাজিক সংগঠন। অথচ আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট খোকন হত্যার খবর পেয়েই ফরিদপুরে ছুটে এসেছিলেন আওয়ামীলীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। নিয়তির কি পরিহাস, আজ ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ, আর আওয়ামীলীগ নেতার খুনের মামলার আসামি ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি!

অর্পিত সম্পত্তির ওপর ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অবস্থান দীর্ঘদিনের। ফরিদপুরের ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের একটি অংশ বলেছেন, উন্নয়নের নামে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের জমি ও ভবন নিয়ে নয়-ছয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রেসক্লাব ভবনের জায়গায় বহুতল মার্কেট নির্মাণ করে হাতিয়ে নেওয়া হতে পারে কোটি কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে ফরিদপুর প্রেসক্লাব। আর এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই বিশেষ একটি মহল ফরিদপুর প্রেসক্লাব দখলে নিয়ে তাদের অনুগত হাইব্রিড সাংবাদিক ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলকে বসিয়েছে সভাপতির চেয়ারে।

প্রিয় পাঠকের মনে প্রশ্ন কিংবা কৌতূহল জাগতেই পারে, কে এই হাইব্রিড সাংবাদিক ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল ?

বিএডিসি কর্মচারী আব্দুস সালাম মণ্ডলের ছেলে ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলের কর্মজীবন শুরু বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ি রাস্তার মোড়ে বাস-ট্রাকসহ নানা পরিবহন থেকে চাঁদা তোলা দিয়ে। আস্তে আস্তে রুবেল নিজেকে বিএনপির ক্যাডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। এক পর্যায়ে তিনি জড়িয়ে যান খুন-রাহাজানি, চুরিসহ নানা মামলায়। ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী জাহিদ হোসেন ওরফে খোকন রাজাকারের ভাগিনা এই রুবেল রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে পাল্টে ফেলেন নিজের খোলস। ফরিদপুরের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক রুই-কাতলাদের খুবই কাছের হয়ে যান রুবেলেরই ভাই বরকত ওরফে চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম। ফরিদপুরের রাজনীতিতে বরকত প্রবল ক্ষমতাধর হয়ে পড়ায় আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রুবেলকে। তবে রহস্যের বিষয়, আওয়ামীলীগের দাপুটে বেনিফিসিয়ারি হয়েও একসময়ের বিএনপি ক্যাডার রুবেল আওয়ামীলীগের কোনও পদ গ্রহণ করেননি। অবশ্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর সদর আসনের সাবেক এমপি চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এক সভায় বলেছেন, ফরিদপুরে আমার দলের অনেক নেতাকর্মী আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে টাকা-পয়সা কামাচ্ছে। তাদের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সময় হলেই আবার ওরা বিএনপিতেই ফিরে আসবে। সাবেক মন্ত্রীর এই উক্তির সাথে ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলের আওয়ামীলীগে কোনও পদ গ্রহণ না করার সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা ভবিতব্যই বলতে পারবে।

ফরিদপুরের রুই-কাতলারা একসময় তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে একের পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও সামাজিক সংগঠন দখল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে দখল করা হয় ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর প্রেসক্লাব। বিএনপি ক্যাডার রুবেল রাতারাতি হয়ে যান সাংবাদিক। বাগিয়ে নেন স্থানীয় একটি পত্রিকার একটি পদও। তারপর ফরিদপুর প্রেসক্লাবে ঢুকেই প্রবল ক্ষমতার ছত্রছায়ায় অভিনব কৌশলে সভাপতির চেয়ারটি দখল করে নেন ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল।

পরের কিস্তি : ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল।

(পিএস/এএস/এপ্রিল ০৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test