E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুর্নীতির অভিযোগে বেরোবির তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত

২০২০ জুলাই ২৪ ১৮:৩৮:১৫
দুর্নীতির অভিযোগে বেরোবির তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত

মানিক সরকার মানিক, রংপুর : দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা চার্জসীটভূক্ত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার কর্ণেল আবু হেনা মুস্তফা কামাল (অব) স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি পত্রে এই তিন কর্মকর্তাকে বহিস্কারের বিষয়টি জানানো হয়। 

বহিস্কৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিষ্ট্রার মোর্শেদুল ইসলাম রণি, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক খন্দকার আশরাফুল আলম।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীণ উপাচার্য ড. মুহম্মদ আব্দুল জলিল মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম বহির্ভূত এবং নিয়োগ শর্ত ছাড়াই এই তিন কর্মকর্তাসহ ৩৩৮ জন কর্মচারিকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সে সময় এ উপচার্যের নানা অনিয়ম দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেন মন্ত্রণালয়।

পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের রংপুরের সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল করীম বাদী হয়ে ২০১৩ সালের অক্টোবরে কোতয়ালী থানায় দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯ সহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫ (২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার জি.আর মামলা নম্বর ১০৯৮/১৩। পরবর্তীতে মামলটি আদালতে গেলে সেখানে দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করে যার নম্বর বিশেষ কেস নম্বর ৮/২০১৭। ওই মামলায় বেরোবির তৎকালীণ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আব্দুল জলিল, উপ-রেজিষ্ট্রার শাহজাহান আলী মন্ডল, অপর উপ-রেজিষ্ট্রার মোর্শেদুল আলম রণি এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজকে বিবাদী করা হয়।

দুদক দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ রংপুরের বিশেষ জজ আদালতে ওই ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে একই বছরের ২০ জুলাই আদালত অভিযোগপত্র আমলে নেন। এদিন আদালতে উপাচার্য আব্দুল জলিল ও উপ-রেজিষ্ট্রার শাহজাহান আলী মন্ডল আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের করে কারাগারে পাঠায় এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

পরবর্তীতে ওই বিচারিক আদালতে ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তা এটিজিএম গোলাম ফিরোজ, মোর্শেদুল ইসলাম রণি ও খন্দকার আশরাফুল আলমকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু দুদক ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে (নম্বর ৩৮৯/২০১৮) দায়ের করলে হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে তাদের অব্যাহতি দেয়ার আদেশ বাতিল করে রুল জারি করেন এবং একই সঙ্গে অভিযুক্ত ওই তিনজনকে রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।

পরে ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই তিন কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়ে ২০ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে জামিন নেন। বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।

(এমএস/এসপি/জুলাই ২৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test