E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাড়ি ফিরছে জবি শিক্ষার্থীরা

২০২১ জুলাই ১৭ ১৪:১৮:১৯
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাড়ি ফিরছে জবি শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি : অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় লকডাউনে ঢাকায় আটকে থাকা শিক্ষার্থীরা শনিবার সকাল থেকেই বাড়ির পথে রওনা হয়েছে। এ দিন সকাল ৯ টার কিছু সময় পর থেকেই শিক্ষার্থীদের বাস ক্যাম্পাস থেকে স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

শনিবার প্রথম দিন রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট এই তিনটি বিভাগীয় শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসের পাশাপাশি বিআরটিসির ভাড়া করা দ্বিতল বাস ও শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিবে। রবিবার ও সোমবার বাকি বিভাগীয় শহরে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা অনুযায়ী সকলের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রদর্শনপূর্বক তাপমাত্রা মেপে বাসে উঠতে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বাসের সামনে লাগানো হয়েছে বিশেষ স্টিকার। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

এ দিকে সকাল সকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ক্যাম্পাস। কিছুক্ষণের জন্য হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যেনো তার চিরচেনা রূপ খুঁজে পেয়েছিলো। একজন বলেন বলছিলেন, স্বপ্ন যাচ্ছে বাড়িতে, জগন্নাথের গাড়িতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ম্যানেজমেন্টের সবকিছু দেখাশোনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বাসের সার্বিক বিষয়ে সকলকে বিশেষভাবে সচেতন করেন। এ সময় পরিবহন পুলের প্রশাসক শিক্ষার্থীরা যেনো নিরাপদে পৌঁছাতে পারেন সেজন্য চালককের সাবধানে বাস চালাতে এবং সহকারীদের জায়গা বুঝে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিতে পরামর্শ দেন। এছাড়াও সহকারী প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

বাস ছেড়ে দেয়ার কিছু সময় পূর্বে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক। শিক্ষার্থীদের তিনি সাবধানে বাড়ি যেতে নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে খেয়াল রাখতে পরামর্শ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বাড়ি ফেরা গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অনুপম বলেন, ক্যাম্পাসে পরীক্ষার জন্য এসেছিলাম। পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গিয়েছে তাই বাড়ি যেতে হচ্ছে। আর এমনিতেও ঈদে বাড়ি যাওয়া হয়। লকডাউনে কিভাবে যাবো বুজতে পারছিলাম না। কারণ লকডাউনে কোনো গাড়ি চলছিল না। তারপর থেকেই অনিশ্চয়তায় ভুগতেছিলাম, বাড়ি যেতে পারবো কি পারবো না। ঠিক তখন স্টুডেন্টদের এমন অনিশ্চয়তা দেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আমাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় অনেক অনেক খুশি, যা ঈদের আনন্দকেও হার মানায়। ধন্যবাদ জবি প্রশাসনকে।

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। লকডাউন ছেড়ে দিলেও ডাবল ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হয়তো আমাদের বাড়ি ফিরতে হতো। কিন্তু গণপরিবহনে যাতায়াতের ফলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে হয়তো কয়েকশো শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে যেত। কারণ গণপরিবহন যাদের সাথে যাতায়াত করতাম, তারা কে কোথা থেকে এসেছে, কোনো কিছুই তো বলা যায় না। সেই ঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার যে জেলার শিক্ষার্থীরা বাড়ি যাচ্ছে:

রাজশাহী বিভাগ: টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী।

সিলেট বিভাগ: নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ (ভৈরব), বি-বাড়ীয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ।

রংপুর বিভাগ: বগুড়া, নওগাঁ, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, সৈয়দপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আবদুল্লাহ্-আল্-মাসুদ বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর আছি এবং সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব। ইতোপূর্বেও শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছি, এখনও করছি এবং আগামীতেও করবো। তবে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাড়ি যাচ্ছে না আমাদের এমন কোনো সদস্য ক্যাম্পাস যায় নাই মনে হয়।

তিনি আরো বলেন, শুধু শনিবারই মোট ছাত্রছাত্রী যাচ্ছে ১৫০৭ জন। এর মধ্যে রংপুর যাবে ৭১২ জন, সিলেট ২৯৩ এবং রাজশাহী ৫০২ জন। সচরাচর বাস যেসব রাস্তা দিয়ে যায় সেদিক দিয়েই যাওয়া হবে। অর্থাৎ অন্যান্য সাধারণ গাড়িগুলো, সরকারি গাড়িগুলো বা বিআরটিসির গাড়ি গুলো যেই রুটে চলে সেই রুটেই বাস চলে যাবে। শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামত জায়গায় নেমে যাবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ঈদে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসের দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি জমা দেন।

(এস/এসপি/জুলাই ১৭, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test