E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাবির বাসস্ট্যান্ড ও পরিবহনের বেহাল দশা !

২০১৪ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৭:২৯:১২
রাবির বাসস্ট্যান্ড ও পরিবহনের বেহাল দশা !

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাসস্ট্যান্ড এবং পরিবহনগুলোর বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪১টি মধ্যে ১২টি বাস এবং ৪টি মধ্যে ৩টি এ্যাম্বুলেন্স অকোজো অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে শিক্ষার্থীর তুলনায় গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক না থাকায় শিক্ষার্থীদেরকে গাদাগাদি  আর ঝুলতে ঝুুলতে বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এদিকে বাসস্ট্যান্ডটি দায়সারা ভাবে পাকা করায় দূর্ভোগ কমার পরিবর্তে দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাসস্ট্যান্ড এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালের গোড়ার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা চালু হয়। শুরুতে ৩টি বাস নিয়ে পরিবহন সেক্টরটি চালু হলেও বর্তমানে রয়েছে ৪১টি বাস । শুক্রবার ও ছুটির দিন বাদে এক সঙ্গে ২৬টি বাস প্রতিদিন ৮ বার চলাচল করে। বাসগুলোর মধ্যে ৩টি ১৯৭০ সালে, ৪টি ১৯৭২ সালে, ৫টি ১৯৭৮ সালে, ৩টি ১৯৭৯ সালে, ২টি ১৯৮০ সালে, ৪টি ১৯৮৫ সালে, ১টি ১৯৯২ সালে, ১টি ১৯৯৩ সালে, ২টি ১৯৯৪ সালে , ২০০৩ সালে ২টি এবং ২০০৬ সালে কৃষি অনুষদের শিক্ষাথীর্দের চাপে ১টি মিনি বাস, ২০১০ সালে ২টি বাসসহ মোট ৪১টি বাস কেনা হয়। এই বাসগুলোর মধ্যে ১৭টিই কেনা হয়েছে কয়েকজন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দান থেকে। বাকিগুলো কিনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

৪১ টি বাসের মধ্যে একেবারে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ১২টি। ৪টি এ্যম্বুলেন্সের মধ্যে একেবারেই অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে ১টি আর আধা নষ্ট হয়ে পড়েছে ২টি। এছাড়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় সফর কালে দুইটি নতুন বাস দেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা দেয়া হয়নি। কোন বাস কোন রুটে যাতায়ত করবে এসবের কোন সাইনবোর্ডও টানানো হয়নি বাসগুলোতে। এতে করে যাতায়াতের জন্য গাড়ীর সংকটে পড়তে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর। এ নিয়ে পরিবহন দপ্তরের পরিচালকের সাথে প্রায়ই বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এসব বাসের অধিকাংশই অনেক দিন আগের। অধিকাংশ বাসের সিট ও জানালার কাঁচ রয়েছে ভাঙ্গা। ফলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি বাসে ঢুকে পড়ায় সিটে বসা অযোগ্য হয়ে পড়ে।

সূত্রে আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেক্টর চালুর পর থেকে বাসস্ট্যান্ডটি পাকা করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ করা হয়নি। বরং পাকা করার বদলে সেখানে ফেলা হয়েছে দেয়ালের ভাংড়ী ইট পাথর। এতে দূর্ভোগ কমার চাইতে দূর্ভোগ বেড়েছে বেশি। বাস স্ট্যান্ডে ফেলে রাখা ভাংড়ীতে শিক্ষার্থীরা যেমন হোঁচট খায় তেমনি বাসের চাকা ফুটো হয়ে যায়। এছাড়া গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে ধুলার মাতামাতি আর বর্ষার প্রবল বর্ষণে বাসস্ট্যান্ডটি পরিণত হয় ছোটখাট পুকুরে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে।

বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এত বড় একটি জায়গায় যেখানে ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর বাস। সেখানে বাসস্ট্যান্ডের যে করুণ দশা তা আসলে চোখে পড়ার মত। গ্রীষ্মকালে বাসস্ট্যান্ডের ধুলাতে শিক্ষার্থীদের ব্যাধিগ্রস্থ করতে দারুন ভাবে সাহায্য করে। আর বর্ষাকালে বাসস্ট্যান্ড পরিণত হয় বিশালকার জলাশয়ে।
নাম না প্রকাশে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গাড়িই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আমাদের রুটে যে হিসেব শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে সে হিসেবে গাড়ি নাই। ফলে অআমাদের অধিকাংশ সময়ই দাঁড়িয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। এসব রুটে যদি আরো গাড়ি বাড়ানো যায় তাহলে অনেক ভালো হতো।

পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর সাইয়েদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যলয়ের বেশ কিছু গাড়ী অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তবে আগের তুলনায় কয়েকটি গাড়ি বাড়ানো হয়েছে। এখন আমাদের ২৭ টি রুটে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করছে। এতে আগের তুলনায় শিক্ষার্থীদের অনেকটা দুর্ভোগ কেটে গেছে বলে আশা করি।

পরিবহন এলাকার বেহাল অবস্তা সমন্ধে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমার দায়িত্ব হলো নিয়মিত গাড়ি চলাচল করছে কিনা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখাশুনা করবে। আশা করি কতৃপক্ষ অতিদ্রুত এ সমস্যা সমাধোন করেবে।

এ ব্যাপারে রাবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তারিকুল হাসান বলেন, পরিবহন সেক্টরে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। অনেক পুরাতন বাস এখনো চলছে। আমরা চেষ্টায় আছি সমস্যা সমাধান করার জন্য।

(আইএইচএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test