E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারি কর্মচারিকে চর মারার অভিযোগ 

২০২৩ মে ১৮ ১৯:০৭:৩৭
বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারি কর্মচারিকে চর মারার অভিযোগ 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারি দৈনিক মজুরি ভিত্তিক এক কর্মচারীকে চর মারার অভিযোগ উঠেছে। দৈনিক মজুরি ভিত্তিক ওই কর্মচারীর নাম মোহাম্মাদ আলী। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান কর্মসূচি স্থলে সংবাদ সম্মেলনে করে ওই অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী কর্মচারী মোহাম্মদ আলী।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনরত দৈনিক মজুর ভিত্তিক কোন কর্মচারীকে চড় মারার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মরত ১৩৪ জন দীর্ঘ দিন যাবৎ চাকুরী স্থায়ী করনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা অনেকবার উপাচার্য বরাবর লিখিত ভাবে স্মারকলিপি দিয়ে এই দাবি জানিয়ে আসছি। তার ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে উপাচার্যর নিকট স্মারকলিপি দিয়ে আমাদের দাবির কথা জানাই। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ কোষাধক্ষ, রেজিস্টার,শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স এসোসিয়েশন এবং কর্মচারী সমিতিকে লিখিতভাবে অবহিত করি।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ মে বুধবার বেলা ১১ ঘটিকায় উপাচার্যের সাথে দেখা করার জন্য উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করলে কর্মচারী সমিতির সভাপতি আমাদের হুমকি দিতে থাকেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে বের হয়ে যান। তখন আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আমাদের নিরাপত্তার জন্য কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেই। তার কিছু সময় পরে কর্মচারী সমিতির সভাপতি তার লোকজন নিয়ে কলাপসিবল গেটের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। তালা না ভাঙ্গতে পেরে ইলেক্ট্রিক্যাল গ্রান্ডিং মেশিন দিয়ে লোহার কেচি গেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে ব্যর্খ হয়। পরে আরো লোক জন নিয়ে শাবল, হাতুরী,এবং মোটা রশি দিয়ে কলাপসিবল গেট ভেঙ্গে ফেলে।

তখন আমরা উপাচার্যের কক্ষের সামনে রুমের লবিতে শান্তিপূর্ন অবস্থান করি। উপাচার্য স্যার দুপুর আড়াইটা সময় আমাদের সাথে কোন প্রকার কথা বার্তা ছাড়াই বের হয়ে যায়।

উপাচার্য স্যার বের হওয়ার সময় আমাকে চড় মারেন। একজন উপাচার্য কিভাবে কর্মচারীর গায়ে হাত তুলে তা আমাদের কারোও বোধগম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি তথা সরকারী সম্পত্তি কলাপসিবল গেট ভাঙ্গা এটা কোন ধরনের কাজ। এটা কে বা কাহার ইন্ধনে হয়েছে তা আমাদের কাহারো বোধগম্য নয়। এ সময় প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন এবং নিরব ভূমিকা পালন করেন। আমরা যখনই উপাচার্যের নিকট দাবি নিয়ে যাই তখনই বারবার কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে আমাদের বাধা দেয়। এখানে এমন কি রহস্য লুকিয়ে আছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শান্তিপূর্ন ভাবে দাবি নিয়ে উপাচার্যর সাথে দেখা করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

এর ধারাবাহিকতায় আমরা আমরণ অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা দিয়েছি। আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ন অবস্থান চালিয়ে যাবো।

অবস্থানরত দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের হুমকির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, তাদের সঙ্গে এমন কোন আচরণ হয়নি। আমরা কেন তাদের হুমকি দিতে যাব। ২০ তারিখের পরীক্ষাকে বানচাল করার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করছে।

চড় মারার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য একিউএম মাহবুব এর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমান বলেন, কোন প্রকারের নোটিশ ছাড়াই দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা উপাচার্য স্যারের দপ্তরে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে দেয়। বেলা দুইটার দিকে কর্মচারীর সমিতির সদস্যরা গেট ভেংগে আমাদের উদ্ধার করে। এ সময় দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা আমাদের এক কর্মচারীর ওপর হামলা চালায়। সে এখন গোপালগঞ্জ ২৫০ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

উপাচার্য স্যারের বিরুদ্ধে চড় মারা যে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তখন তার কক্ষ থেকে বের হচ্ছিল তখন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের মধ্য থেকে কেউ একজন মোবাইলের দৃশ্য ধারণ করছিল । স্যার তাকে মোবাইলে দৃশ্য ধারণ করতে নিষেধ করে। সে কোনভাবেই নিষেধ শুনছেন না। স্যার তখন তার মোবাইল সরিয়ে দেয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা এখন বড় বিপদে আছি, ২০ শে মে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর এই সময়ে পরীক্ষা বানচাল করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই অবস্থান কর্মসূচি তারা পালন করছেন। আমরা আজও তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা কোনভাবেই আমাদের কোন কথা শুনছে না।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরের সামনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা এ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব, প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ও রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমান অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।বেলা পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সদস্যরা ফটক ভেঙে উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী কর্মচারী ও কর্মচারী সমিতির সদস্যরা ফটক ভাঙার বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয় চুক্তি ভিত্তিক ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকারি কর্মচারীরা।

(টিবি/এসপি/মে ১৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test