E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সোহরাওয়ার্দী কলেজের ৭৪ বছর পূর্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

২০২৩ নভেম্বর ১৩ ১৬:৩৪:৪৬
সোহরাওয়ার্দী কলেজের ৭৪ বছর পূর্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : গৌরবের ৭৪ বছর পেরিয়ে ৭৫ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। এই ৭৫ বছর সময়ে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি কলেজটিতে। মাত্র এক একরের কিছু বেশি জায়গার মধ্যে স্থাপিত কলেজটির শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। কিন্তু এই ৯ হাজার শিক্ষার্থী জন্য নেই পর্যাপ্ত ক্লাস রুম, শিক্ষক, লাইব্রেরি, নেই পরিবহন ব্যবস্থা, আবাসন ব্যবস্থা, ক্যান্টিন সহ অনেক কিছুই। সব কিছু মিলে কলেজটি শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর অনেকটা বিড়ম্বনা পড়েন। সব কিছু মিলিয়ে বিগত বছরগুলোতে কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি এবং আগামী বছরগুলোতে প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

কলেজ প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছরে এসেও আমাদের পাওয়া না পাওয়ার হিসেব অনেক। রাজধানীর অন্যান্য কলেজের সাথে আপনি তুলনা করলে দেখবেন, আমার ক্যাম্পাস কোন দিক থেকে এগিয়ে? কয়েকদিন আগে একটি সংস্থার প্রতিবেদনে আমাদের কলেজের অবস্থান ছিল "সি" গ্রেড। যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আশা করি প্রাতিষ্ঠানিক ও শিক্ষাব্যবস্থার দিকটার উন্নয়ন আমাদের দরকার। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার চাওয়া একটাই একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার ক্যাম্পাস থেকে যা পাওয়া অধিকার তা যেন আমি পাই। কলেজ প্রশাসনের সেই দিকগুলো খেয়ালে রাখা দরকার। সর্বশেষ পাওয়া না পাওয়ার মধ্যে অসম্ভব ভালোবাসি। পুরান ঢাকার সেই লাল ইটের বাতিঘর আমার শেষ আশ্রয়স্থল। আমার আগামীর ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর। প্রাণের ক্যাম্পাস "সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ"। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তোমার উত্তরোত্তর সফলতা ও আগামীর মঙ্গল কামনা করি। সেই সাথে বিনম্র শ্রদ্ধা যারা কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছন এবং সেই থেকে এই পর্যন্ত কলেজটির আধুনিকরণ রূপ দেয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী গড়ার কারিগর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে প্রিয় শিক্ষক'রা যাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের প্রতিও অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

ফাইজুর রহমান ফায়েল
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
২০২২-২৩ সেশন
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা


সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৪৯ সালে। কলেজের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ছায়ায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিভা বিকাশের এক অন্যতম মাধ্যম। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পারদর্শী হতে সহায়তা করে। আমি প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছি এবং অধ্যক্ষের নিকট হতে পুরস্কার গ্রহণ করেছি। কলেজের হল, বাস, ক্যান্টিন এর ব্যবস্থা করা হবে প্রত্যাশা রাখি। এগুলো খুবই প্রয়োজনীয় এবং কলেজকে আকর্ষণীয় করতে ভূমিকা রাখবে। কলেজের পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থীরা আহত হচ্ছে। কলেজের ক্যাম্পাস ছোট হওয়ায় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে জায়গার সংকট দেখা দেয়।

অদিতি শামসী
বাংলা বিভাগ
২০২০-২১ সেশন


দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এবার স্কুল জীবনকে বিদায় জানিয়ে কলেজে ওঠার পালা। নতুন বছরে নতুন পড়াশোনার জগতে প্রবেশে উৎসাহের যেন শেষ নেই। ইতোমধ্যে পছন্দের কলেজে সুযোগ পেয়ে দিন গুনতে শুরু করেছে অনেকেই। এ সময়টা যেমন আনন্দের, স্বপ্নের, তেমনি উদ্বেগেরও। কারণ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনার ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রস্তুতি। তাই জীবনের লক্ষ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে এ সময়টা নিজেকে সাজাতে হবে নতুন আঙ্গিকে, নতুন উদ্যমে। আমাদের এই সরকারি শহীদ সোহাওয়ার্দী কলেজ অত্যন্ত সুন্দর একটি কলেজ। অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ রয়েছে এই কলেজ এ। কিন্তু এখানে আরেকটি ভোগান্তি ও আছে যেমন সোহরাওয়ার্দী কলেজে বাস না থাকায় যাতায়াতের জন্য চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। দূর-দূরান্ত থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে এসে চরম দূর্ভোগের শিকার হয় । এছাড়া এ কলেজ আমার দেখা মতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কলেজটি বর্তমানে অনেক সরকারি কলেজ থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে।

মো. আতিক হাসান অনিক
মানবিক বিভাগ
২০২৩-২০২৪ সেশন

৭৪ বছর বলতেই শেষ? কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন ৭৪ বছরের কত ইতিহাস চাপা পড়ে গেছে? চাপা পড়ে গেছে মাটির তলায় কিছু মানুষের দেহ! কতো অধ্যাপক এসেছিলো কিন্তু সময়ের ভারে তারা আজ নেই। কতো ছাত্র-ছাত্রী এই ক্যাম্পাসে ছিল একটু পেছনে ফিরে তাকান তারা আজ কে কোথায়। ৭৪ বছর আগেও এই কলেজের দালানগুলো ছিল এখনো আছে নেই শুধু সেই ইতিহাস গড়ে যাওয়া মানুষগুলো। এই ছোট্ট ক্যাম্পাসটা কতোনা স্মৃতি বহন করে। এভাবে পালাক্রমে চলতে থাকবে, নতুন বছর আসবে পুরাতন বছরকে বিদায় জানাতে। এই পুরাতন ঢাকার ইতিহাস গড়া কলেজ থেকে কতো ছাত্র-ছাত্রী তাক লাগিয়ে দিচ্ছে সবখানে। এই ক্যাম্পাস ছোট হলেও এই রকম পরিবেশ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই ছোট ক্যাম্পাসে টিকতে পারাটা ভাগ্যের বিষয়। এভাবে চলবে প্রতিনিয়ত, প্রতিবছর ৭৪ বছর চলে গেল সেই বছরগুলোকে বিদায় জানাতে নতুন বছর এসে হাজির। সেই নতুন বছর কে স্বাগতম। শুভ হোক নতুন বছর, সুন্দর হোক সেই বছরের দিনগুলি।

মিনারুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
২০২২-২০২৩ সেশন


১১ই নভেম্বর ৭৫ বছরে পদার্পণ করলো আমার প্রিয় ক্যাম্পাসটি, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাণঢালা শুভেচ্ছা প্রিয় লাল ইটের বাতিঘর। এই ক্যাম্পাসটি নিয়ে আমার গর্ব আর বড়াইয়ের শেষ নাই, নিজের প্রিয় ক্যাম্পাস বলে কথা। কিন্তু তারপরও বাস্তবতা নিয়ে ভাবলে কষ্ট লাগে খুব! ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রায় ৭৫ বছরেও হল, বাস, মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, নিজস্ব ক্যান্টিনের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাব্যকীয় সুবিধাসমূহ হতে বঞ্চিত। কলেজের প্রবেশপথে পুরনো বিবর্ণ নেইমপ্লেট থেকে নিয়ে শুরু করে প্লাস্টার নষ্ট হয়ে যাওয়া জীর্ণ দেয়াল সব কিছুতেই অবহেলার স্পষ্ট ছাপ! যা সত্যি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার মনকে ব্যাথিত করে। তাই আজ প্রিয় বিদ্যাপীঠের জন্মদিনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে আমি এই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করি যে, কলেজ কর্তৃপক্ষ, সাধারণ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হল, বাস, ক্যান্টিন সহ অন্যান্য অত্যাবশকীয় ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সকলের সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং সদিচ্ছাই পারে কেবল কলেজে একটি সুষ্ঠু এবং শিক্ষাবান্ধব সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে। ইনশাল্লাহ।

সাগির হোসেন
শিক্ষার্থী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ
২০২১-২০২২ সেশন
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা

(এস/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test