E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখিমেলা অনুষ্ঠিত

২০২৪ জানুয়ারি ২০ ১৫:৩৪:৩৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখিমেলা অনুষ্ঠিত

তপু ঘোষাল, সাভার : 'পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন'—এই প্রতিপাদ্য ধারণ করে গণসচেতনতা বাড়াতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী পাখিমেলা। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ২২তম পাখিমেলা-২০২৪ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। সকাল সাড়ে ৭টায় মেলার কার্যক্রম শুরু হয়। শেষ হয় বেলা সাড়ে ১২টায়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, প্রতিবছর পাখিমেলায় দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ ছুটে আসে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। এ বছর ক্যাম্পাসে পাখি কম এসেছে। কারণ মানুষ জলাশয়ের পাড়ে গিয়ে পাখিদের বিরক্ত করে। পাখিদের দিকে ঢিল ছুড়ে মারে। বহিরাগতরা ঘুরতে এসে পানিতে প্লাস্টিকসহ ময়লা-আবর্জনা ফেলে যায়। এতে জলাশয়ের পরিবেশ নষ্ট হয়।

অনুষ্ঠানে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, দেশের বনবিভাগ বা যারা পাখি নিয়ে কাজ করছেন, শুধু তাদের পক্ষে পাখি সংরক্ষণ সম্ভব নয়। এটা সম্ভব যদি গণমানুষ এ বিষয়ে সচেতন হয়। মানুষজন ইতোমধ্যে অনেকটা সচেতন হয়েছে। আমাদের এ আয়োজন শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি নিয়ে নয়, বরং এর মাধ্যমে আমরা সারা দেশে পাখি সংরক্ষণের বার্তা দিয়ে থাকি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, গত কয়েক বছর আগেও আমরা যে জলাশয়গুলোতে পাখি দেখতাম, এখন আর সেখানে পাখি দেখতে পাচ্ছি না। কারণ বহিরাগত দর্শনার্থীরা পাখিদের উত্যক্ত করে। ফলে তারা চলে যায়। এখন শুধু ক্যাম্পাসের ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের জলাশয়ে পাখি রয়েছে। কারণ সেখানে পাখিদের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। সেখানে আমরা সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রেখেছি। আমরা চেষ্টা করছি ক্যাম্পাসের সবগুলো জলাশয়ে এ রকম পাখিদের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য।

এ বছর মেলা উপলক্ষে নানান কর্মসূচির আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতাও। এগুলোর মধ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলার দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা অন্যতম। এছাড়া মেলায় বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ও স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে একজনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৬ সালে প্রথম অতিথি পাখি আসে। ২০০০ সালে প্রথম পাখি মেলা শুরু করেছিল 'বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব'। ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সরাসরি সম্পৃক্ত হয়। ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলো লিজ দেয়ার কারণে পাখি না বসায় এবং ২০২১ সালে করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই এ বছর ২২তম পাখি মেলা অনুষ্ঠিত হলো। মেলায় সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, আরণ্যক ফাউন্ডেশন, আইইউসিএন এবং বাংলাদেশ বন বিভাগ।

(টিজি/এএস/জানুয়ারি ২০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test