E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঢাবিতে বিশ্বমানের ই-লাইব্রেরি চালু

২০১৫ আগস্ট ১০ ১৭:২৩:৪৯
ঢাবিতে বিশ্বমানের ই-লাইব্রেরি চালু

ঢাবি প্রতিনিধি : প্রখ্যাত যোগাযোগবিদ মার্শাল ম্যাকলুহানের ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ অনুসারে বিশ্ব আজ সত্যিকার অর্থেই একটি বৃহৎ গ্রামে পরিণত হয়েছে।

আর আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো তা সম্ভব করেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট ভিত্তিক ইলেকট্রনিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ যে কোনো জায়গা থেকে মুহ‍ূর্তের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছে সারা বিশ্বের সঙ্গে। জানাতে পারছে নিজেকেও।

এই ‘আশ্চর্য প্রদীপ’র প্রসারে অনেকেই মনে করছেন- কাগজে দিন বোধহয় শেষ হয়ে এলো! সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত-আধুনিক ও বিশ্বমানে উন্নীত করতে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চালু হলো দেশের প্রথম ইলেকট্রনিক তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর ই-লাইব্রেরি।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে এ লাইব্রেরির উদ্ধোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

সম্পূর্ণ ডিজিটাল এ ই-লাইব্রেরির মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজসহ বিশ্বের নামকরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের তৃতীয় তলায় ১২ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ই-লাইব্রেরিটি।

দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা ছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মনোরম কক্ষে পড়ার জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় সব আসবাব। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ই-লাইব্রেরিটি বিশ্বের ৩৫টি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিশার্সের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।

টেইলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস, সেইজ, ওয়ার্ল্ড সাইন্টিফিক, পিয়ারসন, ডে গ্রুইটার লিস বুকস কালেকশন, মেকগ্র হিল, মাই লাইব্রেরি, অক্সফোর্ড অনলাইন, ক্যামব্রিজের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ তালিকায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা ই-লাইব্রেরি ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জার্নাল ও বইসহ বিশ্বের প্রথম সারির লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়, এমন সব জার্নাল ও বই পড়তে পারবেন।

ই-লাইব্রেরিতে রয়েছে টিচার্স লাউঞ্জ, টিচার্স মিটিং রুম, স্টুডেন্টস ডিসকাশন রুম, সাইলেন্ট রিডিং রুম, এমফিল ও পিএইচডি স্টুডেন্টস রুম, সার্ভার রুম, জার্নাল সেকশন রুম, ব্রাউজিং সেকশন এবং ক্যাফেটারিয়া।

এছাড়া ফটোকপি এবং প্রিন্টিং সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জার্নাল ও বই প্রিন্ট করে বাসায়ও নিয়ে পড়তে পারবেন।

লাইব্রেরিটির নকশা করেছেন স্থানিক আর্কিটেকচারাল কনসালটেন্টের মাজহারুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত ই-লাইব্রেরি নিয়ে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।

তথ্য-প্রযুক্তির সর্বশেষ সেবাটিতে শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতেই এ লাইব্রেরি চালু করা। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাবে।

তবে তথ্য-প্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করলেই কেবল এর সুফল মিলবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ, উপ-উপচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি অজিয়াটা লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল ই-লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার জন্য গত বছরের ১০জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।

চুক্তি অনুযায়ী এরইমধ্যে অবকাঠামোগত সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে টেলিকম কোম্পানিটি। এছাড়া কম্পিউটার সুবিধা দিয়েছে ডেল, সফটওয়্যার স্থাপন সুবিধা দিয়েছে লজিক সফটওয়্যার আর কো-ফিন্যান্সার ওরিয়ন গ্রুপ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ই-লাইব্রেরির সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের এর সদস্য হতে হবে। সদস্য হলে তাদের একটি ম্যাগনেটিক পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।

তবে প্রাথমিকভাবে বিজনেস অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ লাইব্রেরির সুবিধা নিতে পারবেন না বলেও জানান তারা।

এদিকে ই-লাইব্রেরি সেবা যাতে অন্যান্য অনুষদসহ বিশ্ববিদ্যলয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী পেতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হুসাইন।

সূত্র বলছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি আগামী ১৫ বছর এ লাইব্রেরির রক্ষণাবেক্ষণ করবে রবি। এ জন্য বছরে তারা ১০ লাখ টাকা করে অনুষদকে দেবে।

(ওএস/এএস/আগস্ট ১০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test