E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নবীনদের পদচারণায় মুখরিত বাকৃবি

২০১৬ জানুয়ারি ২১ ১৭:২৬:১৩
নবীনদের পদচারণায় মুখরিত বাকৃবি

নিউজ ডেস্ক : প্রকৃতি কণ্যাখ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেষ্টিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এখন মুখরিত নবীনদের হাসি ও গল্প-গানে। বসন্তের আগমনে কুঞ্জের চারিপাশে ফুলের গন্ধে সম্মোহিত হয়ে ঘুরে বেড়ানো ভ্রমরার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র নবীনরা মুখরিত করে তুলেছে তাদের পদচারণায়। নবীনদের ক্যাম্পাসে পদচারণার কথা লিখেছেন মো. শাহীন সরদার  ও আবুল বাশার মিরাজ।

নয়াভিরাম ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়, দেশি-বিদেশি নানা গাছে পূর্ণ অনিন্দ্যসুন্দর বোটানিক্যাল গার্ডেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত বিজয় ৭১, আম বাগান, জব্বারের মোড়, হতাশার মোড়, মরণ সাগর, চাষী ভবন, হেল্থ কেয়ার, কেআর মার্কেট সর্বত্র নবীনদের জয়জয়কার।

প্রত্যেক বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র তাদের সরব উপস্থিতি বুঝতে পারা যায়। ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়েই বহমান ভরা যৌবনের পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ। নদের পাড়ে রাখা বড় বড় পাথর আর সিমেন্টের তৈরি বেঞ্চে বসে গল্প করতে করতে সময় যে কিভাবে যায় বুঝাই যায় না। নদের কিনারায় রয়েছে আপন মনে ভ্রমণের জন্য রঙবেরঙের পাল তোলা নৌকা। নৌকাগুলোর নামও মজার যেমন টাইটানিক, মায়াজাল, প্রাণের উচ্ছ্বাস ইত্যাদি।

উদ্ভিদের সমাহার নিয়ে সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন। বর্তমানে গার্ডেনটি একটু যেন নতুন সাজে সেজেছে। বৃহৎ জায়গায় গার্ডেনে বৃক্ষ ছায়ায় আর নির্মল বাতাসে মন ভরে ওঠে। সব ক্লান্তির অবসান এখানেই। প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলের তাদের মধুর সময় কাটাতে গার্ডেনই প্রথম পছন্দ। মহুয়া বাগান, ঝাউ বাগান, বাঁশ বাগান গার্ডেনের চিরচেনা জায়গা। শুধু ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরাই নয়, প্রতিদিন বাইরে থেকে অনেক লোক আসে তাদের অবসর সময় নিরিবিলিতে কাটানোর জন্য এখানে। নবীনদের পদচারণায় আরও মুখরিত হয়েছে ক্যাম্পাসের এসব উপকরণ।

২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রী সালমা শিফা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নতুন অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আগে কখনো বাড়ির বাইরে নিজের পরিবার ছাড়া থাকিনি। প্রথম প্রথম একটু খারাপ লাগত কিন্তু বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মিশে খারাপ লাগাটা কেটে গেছে। এক কথায় বলতে গেলে জীবনের সবচেয়ে অন্যতম একটি অভিজ্ঞতা হল বিশ্বদ্যিালয়ের হল জীবন।

কৃষি অনুষদের নবীন ছাত্রী তৌসিফা টুম্পা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজেকে বন্ধনহীন পাখির মতো উন্মুক্ত মনে হচ্ছে। আগে কখনো একা বাড়ির বাইরে যায়নি। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মৃতি আমার জীবন থেকে কখনো বিস্মৃত হবে না। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ভেটেনারি অনুষদের ইসনাত জাহান ও বাকৃবিতে ভর্তি হয়ে ভালো লাগছে বলে জানায়।
বাকৃবির ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ৬টি অনুষদের অনার্স প্রথম বর্ষের (লেভেল-১, সেমিস্টার-১) ক্লাস একযোগে শুরু হয়েছে। সবুজ ঘাসের চাদরে মোড়ানো পর্যটনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বারোশো একরের বিশাল ক্যাম্পাস। হলে সবার আন্তরিক সহযোগিতা। শিক্ষকদের জ্ঞানগর্ভ উপদেশ। সব মিলে দারুণভাবে শুরু হলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পথচলা। এ উক্তিগুলো ময়মনসিংহে অবস্থিত বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের নবীন শিক্ষার্থী ইসরাত জারিন ঊর্মির। শুধু ঊর্মিই নয়, তার সহপাঠী আশা, লিজা, সিমা, শিরিন, বিনতী, হাওয়া, ছন্দা, সুরভী, নুসরাত, সাইফুল, বাশিরের একই অনুভূতি। মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের বাশির জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিজ্ঞানী হওয়ার কথা। উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রবল।

ন্যূনতম কোনো সুযোগ পেলে নিজের ভিশন বাস্তবায়ন করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। এদিকে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে এবার ভর্তিকৃত মেহেদী জানান, এখান থেকে পাস করে নিজেকে দেশের সেবায় নিয়োজিত করার সুযোগ রয়েছে। আমি দক্ষ কৃষিবিদ হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে চাই। মেহেদীর মতো নবীনরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিচিত্র ধরনের স্বপ্ন নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছে। এভাবেই অনেক নবীন শিক্ষার্থীর স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্র হয়ে উঠছে এ ক্যাম্পাস। নতুনদের জন্য সেশনজট, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমুক্ত একটি ক্যাম্পাস উপহার দিতে পারলে তাদের ক্যাম্পাস জীবন সুখী-সমৃদ্ধ হবে। দেশের কৃষি সেক্টরকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারলে ওদের স্বপ্নগুলো বাস্তবে পরিণত হবে এবং দেশ একদিন খাদ্যে তথা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে এমনটিই আশা সবার।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test